চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০০৫-২০০৬ সেশনের শিক্ষার্থী ব্লগার শফিউর রহমান ফারাবীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে চবিয়ান দ্বিনি পরিবারের ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
রোববার (২০ জুলাই) দুপুর ১টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে চবিয়ান দ্বিনি পরিবারের পক্ষ থেকে শফিউর রহমান ফারাবীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সৈয়ব আহমেদ সিয়াম বলেন, শফিউর রহমান ফারাবী ভাইকে অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়। ফারাবী এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নয়, বিষয়টা প্রমাণ হওয়া সত্ত্বেও অন্যায়ভাবে তাকে আটক রাখা হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা অন্যায় মামলা থেকে মুক্তি পেলেও ফারাবী কোনো দলের না হওয়ায়, তার পক্ষে আওয়াজ দেখা যাচ্ছে না। আমরা একটা বৈষম্যহীন দেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম। অথচ প্রতি পদে পদে বৈষম্য এখনো বিদ্যমান। রাজনৈতিক দলগুলোর সন্ত্রাসী নেতারা মুক্তি পেলেও ফারাবীর মুক্তির খবর নাই।
দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা এই মজলুমের পক্ষে আওয়াজ তুলুন। নতুন করে জুলুমকে স্ট্যাবলিশ হওয়ার সুযোগ দেবেন না। জালিমদের হাতে সবকিছু ছেড়ে দিলে কিছুদিন পর আপনার ওপরও জুলুম করা হবে। চবিয়ান দ্বিনি পরিবারের পক্ষ থেকে আমরা ব্লগার ফারাবী ভাইয়ের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।
সমাবেশে চবিয়ান দ্বিনি পরিবারের জিম্মাদার ও আরবি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মো আব্দুল্লাহ নয় দফা দাবি পেশ করে বলেন, আজকের সমাবেশ থেকে আমরা চবিয়ান দ্বিনি পরিবার নয় দফা দাবি পেশ করছি। তা হলো—
১. শফিউর রহমান ফারাবীর নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।
২. শাহবাগ নাস্তিক চক্র ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের রাষ্ট্রীয়ভাবে সন্ত্রাসী ঘোষণা করতে হবে।
৩. প্রশাসনে থাকা পূর্ববর্তী সরকারের দোসরদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. ইসলাম ও রাসুলুল্লাহকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কটাক্ষকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. ফারাবীর মতো আর কোনো মুসলিম যেন জুলুমের শিকার না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
৬. কারাগারে অন্যায় ভাবে আটক থাকা অন্যান্য ইসলামপন্থি লেখক ও আলেমদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।
৭. ফারাবীসহ সকল মজলুমদের উপর মিথ্যা মামলা দায়ের ও ষড়যন্ত্রকারী কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
৮. যারা ‘বাকস্বাধীনতার’ আড়ালে ধর্মদ্রোহী চক্রান্ত করে ও ইসলামবিদ্বেষ ছড়ায়—তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৯. চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাতিমদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে হবে। যথাযথ বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবর, ‘মুক্তি মুক্তি, মুক্তি চাই, ফারাবী ভাইয়ের মুক্তি চাই’, ‘চবিয়ান দ্বিনি পরিবার, জিন্দাবাদ, জিন্দাবাদ’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
সমাবেশ শেষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশের সার্বিক নিরাপত্তা ও উন্নতির জন্য দোয়ার মাধ্যমে সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
কেকে/এএম