জামালপুরের ইসলামপুরে একটি মসজিদে দীর্ঘ ৪৫ বছর ইমামতি করার পর অবসর চাইলে ইমাম শাজাহান ইসলামীকে (৭৫) রাজকীয় সংবর্ধনার মাধ্যমে বিদায় জানিয়েছেন মুসল্লীরা। মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে ইমামকে এ সম্মানজনক বিদায় সংবর্ধনা এলাকায় বেশ চাঞ্চলের সৃষ্টি করেছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) জুম্মার নামাজের পর তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ রাজকীয় সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
জানা যায়, ইসলামপুর উপজেলার পলবান্ধা ইউনিয়নের বাটিকামারী গ্রামের বাসিন্দা শাজাহান ইসলামী দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে একই এলাকার বাটিকামারী দক্ষিণপাড়া বড় জামে মসজিদে ন্যায় নিষ্ঠার সাথে ইমামতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
ইমামের সংবর্ধনায় মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে শোডাউন
সম্প্রতি ইমাম সাহেবের শারীরিক অসুস্থতার কারণে ইমামতির দায়িত্ব থেকে মসজিদ কমিটির নিকট অব্যাহতির আবেদন চান। বিষয়টি মসজিদ কমিটি আমলে নিয়ে গত শুক্রবার জুম্মা নামাজের পর তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে এক রাজকীয় সংবর্ধনার মাধ্যমে বিদায় জানান। এ সময় মসজিদ কমিটি ও মুসল্লীদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন উপহার প্রদান করা হয় তাদের ইমামকে। এছাড়াও উপস্থিত মুসল্লী ও এলাকাবাসী তাদের ইমামকে প্রাইভেটকার উঠিয়ে ও মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে বাটিকামারী মহল্লা থেকে সওদাগরের রাইস মিল পর্যন্ত শোডাউন করেন।
বাটিকামারী দক্ষিণপাড়া জামে মসজিদের জয়েন্ট সেক্রেটারি ও কাতার প্রবাসী জহিরুল ইসলাম জানান, তিন পুরুষ ধরে এ মসজিদের ইমামতির দায়িত্ব পালন করে গেছেন শাজাহান হুজুরের উত্তরসূরিরা। প্রথমে তার দাদা, পরে তার বাবা এবং সর্বশেষ মাওলানা শাজাহান হুজুর দীর্ঘদিন এ দায়িত্ব পালন করেছেন। ইমামতির পাশাপাশি তিনি সামাজিক নানা কাজেও সম্পৃক্ত ছিলেন।
ইমামকে বিদায়ী সংবর্ধনায় বিভিন্ন উপহার প্রদান
এ ব্যাপারে বাটিকামারী দক্ষিণপাড়া জামে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুক্তা জানান, মাওলানা শাজাহান হুজুর জ্ঞানী ও গুণী মানুষ। তিনি মানুষকে দ্বীনের পথে দাওয়াত দিয়েছেন।
বিদায়ী ইমাম মাওলানা শাজাহান ইসলামী বলেন, বাটিকামারীর লোকজন আমাকে যে ভালোবাসা দিয়েছে, তাতে আমি ঋণী হয়ে গেলাম। শারীরিক অসুস্থতার কারণেই মূলত ইমামতির দায়িত্ব ছেড়েছি। যতদিন বেঁচে থাকব, মুসল্লি ও এলাকাবাসীর এ বিদায়ী সংবর্ধনা আমার স্মৃতিতে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।