শ্রীপুরে কাঁঠালের বিচি সংগ্রহ করে বাজারজাত করছেন স্থানীয় অনেক ব্যবসায়ী। পাশাপাশি স্বাবলম্বীও হচ্ছে তারা। উপজেলার কয়েকজন ব্যবসায়ী দলবেঁধে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ঘুরে কাঁঠালের বিচি সংগ্রহ করেন। সংগ্রহ শেষে পানিতে ভিজিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে রোদে শুকিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বাজারজাত করেন। এতে করে বহু মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে। কাঁঠালের বিচি এখন দেশের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি হচ্ছে।
অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায়, এখন কাঁঠালের বিচি অন্য পণ্যের সাথে যৌথ ভাবে বিভিন্ন জায়গায় পাঠাতে হচ্ছে তবে এতে খরচ বেশি পড়ে যায়, তাই সরকারি সহযোগিতা পেলে কাঁঠাল এবং কাঁঠালের বিচি উভয়টি থেকেই সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।
সরেজমিনে দেখা যায়, একটি হাউজের মধ্যে পানি দিয়ে কাঁঠাল বিচি ধুঁয়ে পরিষ্কার করছেন। তারপর সেগুলো রোদে শুকিয়ে প্যাকেটজাত করে বাজারজাত করার কাজ করছেন। নষ্ট বিচিগুলোকে আলাদা করা হচ্ছে। ভালো বিচিগুলো হুইল পাউডার দিয়ে ধোঁয়ার কাজ করছে কয়েকজন। তারা জানায়, পানিতে ভালোভাবে ধোঁয়ার পর সেগুলো রোদে শুকিয়ে বস্তাভর্তি করে বাজারজাত করেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, আমাদের শ্রীপুরে প্রচুর পরিমাণে কাঁঠাল জন্মায়। তবে এই কাঁঠালের বিচি তেমন গুরুত্ব দিয়ে কেউ এমন করে না। এবছর থেকে কাঁঠাল বিচি বিক্রি শুরু হয়েছে দেখে বাড়ির মহিলারা কাঁঠাল বিচি যত্ন করে সংগ্রহ করছে। সেগুলো বিক্রি করে ভালো টাকা পাওয়ার স্বপ্ন দেখছে।
এ বিষয়ে ব্যবসায়ী আইনুল হক বলেন, আমরা ৮ জন ব্যবসায়ী কাঁঠাল বিচির ব্যবসা করছি। এ কাজের জন্য আমরা কিছু লোককে আমাদের কাজে যুক্ত করেছি। তাদের টাকা-পয়সা দিয়ে গ্রামে গ্রামে পাঠিয়ে দেই কাঁঠাল বিচি সংগ্রহ করতে। সপ্তাহে তিনদিন ধোঁয়া বাছাইয়ের কাজ চলে। ৪-৫ টন কাঁঠাল বিচি সংগ্রহ হলে সেগুলো একসঙ্গে ধোঁয়ার পর রোদে শুকিয়ে বাজারজাত করা হয়।
ব্যবসায়ী গাজী মাহমুদ বলেন, যেখানে কাঁঠাল বিচিগুলো স্থানীয় বাসিন্দারা ফেলে দিতো সেগুলো আমরা কেজি দরে ক্রয় করছি। তাতে করে তারাও লাভবান হচ্ছে। গ্রাম থেকে সংগ্রহ করা কাঁঠাল বিচি প্রক্রিয়াজাত করে ঢাকার কারওয়ান বাজার ও শ্যাম বাজারসহ কয়েকটি বাজারে বিক্রি করা হয়। প্রতিকেজি কাঁঠাল বিচি ১৭-১৮ টাকা কেজি বিক্রি হয়।
এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুমাইয়া সুলতানা বন্যা বলেন, শ্রীপুরে কাঁঠালের বিচি সংগ্রহ করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রি হচ্ছে। এটা খুবই ভালো একটা সংবাদ। এটি কিভাবে আরো বেশি প্রসারিত করে ছড়িয়ে দেয়া যায় সে ব্যাপারে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেয়া হবে। যারা এ ধরনের উদ্যেগ নিবে তাদেরকে আমরা সর্বাত্বক সহযোগিতা করব। তবে সে যেন আমাদের সাথে যোগাযোগ করে।
কেকে/ এমএস