শ্রীপুরে পিস্তল দেখিয়ে এক স্কুলছাত্রকে তুলে নেওয়ার দুঘন্টা পর ফেরত দিয়েছে অস্ত্রধারীরা। এঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকালে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ধনুয়া গ্রামের হাজী মার্কেট এলাকায় হাজী প্রি কেডেট স্কুলে এ ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার বিকালে স্কুলছাত্রকে তুলে নেওয়ার ২২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। স্কুলের সামনে থেকে স্কুলছাত্রকে অস্ত্র ঠেকিয়ে তুলে নেওয়ার ঘটনায় আতংকিত হয়ে পড়ে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। ঘটনার পরপরই অস্ত্রধারীরা পালিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী স্কুলছাত্র মো. ফেরদৌস আহমেদ (১৪) উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের মো. সাইফুল ইসলামের ছেলে।
অভিযুক্ত অস্ত্রধারী মো. কাওসার আহমেদ (৩০) উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ধনুয়া গ্রামের মৃত ইমান আলীর ছেলে। সে গাজীপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতি বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী। এ সময় এমদাদুল হক, নূরুল হক, মোস্তফাসহ কয়েকজন স্কুলছাত্রকে তুলে নিতে সহযোগিতা করেছিল যা সিসি ফুটেজে দেখা যায়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, সাদা শার্ট পড়া একজন স্কুলছাত্রকে কয়েকজন যুবক মারতে মারতে নিয়ে যাচ্ছে। স্কুল শিক্ষক রুবেলসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে রক্ষা করতে চেষ্টা করে। এ সময় টিশার্ট পড়া অস্ত্রধারী ক্ষিপ্ত হয়ে স্কুলের শিক্ষক রুবেল হোসেনের দিকে পিস্তল তাক করে ভয় দেখায়। এসময় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী তাদের সহপাঠীকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসে।
নবম শ্রেণির ছাত্র হৃদয় বলে স্কুল ছুটি হওয়ার পরপরই আমরা বাহিরে যাই। হঠাৎ করে কয়েকজন যুবক এসে ফেরদৌসকে ধরে মারতে মারতে টেনে হিচরে নিয়ে যেতে থাকে। এসময় আমরা ডাক চিৎকার দিলে শিক্ষকরা এগিয়ে আসে। এরপর আমরা তাকে রক্ষা করতে চেষ্টা করি। হঠাৎ করে একজন রুবেল স্যারের দিকে পিস্তল তাক করে বলে কেউ এগিয়ে আসলে গুলি করে উড়িয়ে দিবো। এরপর সবাই ভয় পেয়ে এদিক সেদিক চলে যাই।
হাজী প্রি ক্যাডেট স্কুলের সহকারী শিক্ষক আলমগীর হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের ডাক চিৎকার কান্নাকাটি শুনতে পেয়ে আমরা বাইরে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখতে পাই। আমরা আমাদের শিক্ষার্থীকে রক্ষার জন্য চেষ্টা করি। কিন্তু অস্ত্রধারীরা বেশ কয়েকবার ফায়ার করার চেষ্টা করে। এই বলে যে সামনে আসবে তাকেই শেষ করে দিবো। এরপর আমরা পিছু হটি। গুলির ভয়ে কেউ সামনে আসেনি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূরুনাহার বলেন, ঘটনার পরপরই আমরা সবাই ছুটে যায়। কিন্তু অস্ত্র তাক করার পরপরই সবাই ভয়ে আতংকিত হয়ে পড়ে। তবে কি কারণে স্কুলছাত্রকে তুলে নিলেন এ বিষয়ে জানতে পারিনি। স্কুল ছুটি হওয়ার পরপরই স্কুল গেইট থেকে তাকে তুলে নেয়। এসময় অনেক মারধর করে তাকে। স্বজনদের সহযোগিতায় দু'ঘণ্টা পর অস্ত্রধারীরা ছেড়ে দেয়।
অপহৃত স্কুলছাত্রের মামা নাদিম মাহমুদ বলেন, বিষয়টি জানার পরপরই আমরা সবাই ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। তুলে নেওয়ার পর থেকে অস্ত্রধারীর স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে দু'ঘণ্টা পর আমাদের হাতে তুলে দেয়। তবে কি কারণে তাকে তুলে নিল সেটি জানতে পারিনি।
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক তদন্ত শামীম আকতার বলেন, বিষয়টি জানার পরপরই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ডে নিলে পিস্তলসহ বিস্তারিত তথ্য বেরিয়ে আসবে।
শ্রীপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ মহম্মদ আব্দুল বারিক জানান, এ ঘটনায় পুলিশ অস্ত্রধারী কাউসারসহ দুইজনকে আটক করেছে। পরবর্তী আইগত ব্যাবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
কেকে/এআর