শিক্ষা, চিকিৎসা ও যোগাযোগ সমস্যায় ভুগছে নীলফামারীবাসী। এসব সমস্যা দ্রুত সমাধানের দাবিতে পদযাত্রা ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
রোববার (৬ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে জেলা শ্রমিক ঐক্য সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে ওই কর্মসূচি পালিত হয়।
জেলা শহরের বড়বাজার ট্রাফি মোড় থেকে পদযাত্রাটি শহরের পৌরমার্কেট, চৌরঙ্গীমোড় প্রদক্ষিণ করে। এসময় শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পথচারীদের মাঝে দাবি সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করা হয়। পরে বড়বাজার ট্রফিকমোড়ে ফিরে সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা দেন সংগঠনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জয়নাল আবেদীন, সহসভাপতি কৃষিবিদ মো. মাহবুবুল আলম টুলু, সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম আবু, সাবেক ছাত্রনেতা মো. মহিউদ্দিন মহি প্রমুখ।
বক্তরা উল্লেখ করেন, জেলা শহরটি একটিমাত্র সড়কের ওপর অবস্থিত। সড়কটি সম্প্রসারণের কোন উদ্যোগ না থাকায় যানবাহন এবং মানুষ চলাচলে মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছে। নামেমাত্র একটি বাইপাস সড়ক থাকলেও আট কিলোমিটারে অন্তত ৩৬টি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকের কারণে চলছে না যানবাহন।
অপরদিকে মানুষের মানসন্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে পাঁচ বছর আগে জেলায় একটি মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হলেও অবকাঠামো নির্মিত হয়নি। অবকঠামো নির্মাণের সকল সুযোগ থাকলে শুধুমাত্র উদ্যোগের অভাবে তা পিছিয়ে পড়েছে। ফলে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের মাত্র ২৫০ শয্যায় চলছে প্রায় ২২ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা। হাসপাতালটিতে নেই কার্ডিওলোজি ইউনিট। সংকট রয়েছে চিকিৎসকের।
শিক্ষা ব্যবস্থায় জেলা শহরের সরকারি, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মান অন্যান্য উপজেলার প্রতিষ্ঠানের চেয়েও শোচনীয়। ফলে মানসন্মত শিক্ষার জন্য প্রতিদিন জেলা শহর থেকে উপজেলা শহরে যাতায়াত করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এতে করে সময় এবং অর্থের অপচয় হচ্ছে। অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীর আর্থিক সামর্থ না থাকায় বাধ্য হয়ে এসব মানহীন প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করতে হচ্ছে। শিক্ষার মানোন্নয়ে সকল সুযোগ সুবিধা বিদ্যমান থাকলেও মূলত প্রতিষ্ঠানগুলোতে জবাবদিহিতা না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে শহরের প্রধান সড়টির সম্প্রসারণ ও নতুন বাইপাস সড়ক নির্মাণ, স্বাস্থ্য সেবার মান বাড়াতে মেডিকেল কলেজের অবকাঠামো নির্মাণ ও নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের অবকাঠামোর উন্নয়ন, ৫০০ শয্যায় উন্নীতকরণ ও চিকিৎসকের ঘাটতি পূরণ এবং শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তনে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, শিক্ষানুরাগী ও সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঢেলে সাজানোর দাবি জানানো হয়।
জেলা শ্রমিক ঐক্য সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন বলেন, আমরা জেলার শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ মৌলিক সমস্যাসমূহ সমাধানে ১৯৯২ সাল থেকে সংগ্রাম করে যাচ্ছি। চিহ্নিত সমস্যাগুলো সমাধান করা হলে নীলফামারী একধাপ এগিয়ে যাবে। দ্রুত সমস্যাসমূহ সমাধানে সরকারের দৃষ্টি কামনা করছি।
কেকে/এজে