শুক্রবার, ২২ আগস্ট ২০২৫,
৭ ভাদ্র ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

শুক্রবার, ২২ আগস্ট ২০২৫
শিরোনাম: ইসরাইলি হামলায় গাজায় ২৪ ঘণ্টায় আরো ৭০ ফিলিস্তিনি নিহত      ফের পিএস বিতর্কে আসিফ      ভাগ পেতেন ডিসি-এসপিরাও      রাজস্ব খাতের নেতৃত্ব দেবেন অভিজ্ঞরাই      ইতা‌লির প্রধানমন্ত্রী মেলোনির ঢাকা সফর বাতিল      সাগর-রুনির পরিবারকে বুঝিয়ে দেয়া হলো রাজউকের প্লট      মহানবী (সা.) এর সিরাতই তরুণদের চরিত্র গঠনের রোল মডেল: ধর্ম উপদেষ্টা       
খোলা মত ও সম্পাদকীয়
আরব মোড়লরা আর কতকাল নীরব দর্শকে থাকবে
আবু বকর
প্রকাশ: শুক্রবার, ২৭ জুন, ২০২৫, ৮:৫০ পিএম

পৃথিবীতে এমন এক ধর্মীয় জাতি যারা সবচেয়ে বেশি বিশ্বাসঘাতকতা, লাঞ্ছনা, আক্রোশ, নিপীড়ন ইত্যাদির মতো ঘৃণ্য কাজের শিকার হয়েছে। তবুও কণ্টকাকীর্ণ পথে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থায় বারবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তবে যুগে যুগে বিশ্বাসঘাতকতার পরিণতিও ভোগ করতে হয়েছে এ জাতিকে। বলছি এমন মুসলিম জাতির কথা যারা একসময় পৃথিবী শাসন করলেও বর্তমানে সবচেয়ে নির্যাতনের শিকার। যে জাতির রয়েছে অর্ধশতাধিক মুসলিম প্রধান দেশ, বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় ঐক্য জোট ওআইসি। আরো রয়েছে আরব লীগ। বিশ্বে তেল বাণিজ্যের সর্ববৃহৎ সংগঠন ওপেক-এর নিয়ন্ত্রণ। তবুও কিছুই যেন এ জাতিকে মুক্তির ঘ্রাণ দিতে পারে না।
 
এবার কিছু নিজেদের স্বার্থপরতার কথা তুলে ধরা যাক। নিপীড়িত মুসলমান জাতি বারবার নিজেদের মধ্যেই প্রতারণার মুখোমুখি হয়েছে। এ যেন এক ঘরের শত্রু বিভীষণ। দেশের গণমাধ্যম দৈনিক কালবেলার ৯ জুন ২০২৫ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মুসলিম দেশ আজারবাইজান গাজায় ইসরাইলি বর্বর হামলায় ২০২৩ সালে দেশটির সঙ্গে তেল রফতানি বন্ধের ঘোষণা দেয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা ঘটেনি। বিষয়টি ফাঁস করে দেয় ইসরাইলি গণমাধ্যম দৈনিক হারেৎজ। হারেৎজ জানায়, তেল সরবরাহের জন্য আজারবাইজান এখন ‘তৃতীয় দেশের’ পরিচয় ব্যবহার করছে। একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানান, আমরা আজারবাইজানীদের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়েছি, জ্বালানি ও কৌশলগত সম্পর্ক পূর্বের মতোই অব্যাহত থাকবে। চিন্তার কিছু নেই। অন্যদিকে, প্রতিবার ওআইসি সম্মেলনে সংস্থাটি ইসরাইলের বর্বরতার বিরুদ্ধে বিবৃতি দিলেও গাজাবাসীর ওপর নৃশংস হামলা বন্ধে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি।

ইতিহাস বলে যারা যুগে যুগে এভাবে নিজের বিরুদ্ধে গিয়ে শত্রুর পক্ষ নিয়ে চরম বিশ্বাসঘাতকতার পরিচয় দিয়েছে, তারা কালের প্রবাহে চরম লজ্জাজনক পরিণতি ভোগ করেছে। ইতিহাস আরো বলে, একটি রাষ্ট্র বা সাম্রাজ্য ধ্বংস হয় বাহিরের পরাশক্তিতে নয়; বরং নিজেদের মধ্যে থাকা বিশ্বাসঘাতকতায়। আজ যারা হত্যাকারীদের সাহায্য করছে এবং বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়েছে।
 
এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ধৃষ্টতা দেখিয়েছে জর্ডান। দেশটি বিভিন্ন সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের ক্যান্সার খ্যাত ইসরাইল ও তার মিত্রদের প্রকৃত বন্ধুর পরিচয় দিয়ে আসছে। যেমন—১ এপ্রিল ২০২৪, সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি দূতাবাসে ইসরায়েলের বিমান হামলায় ইসলামিক বিপ্লবী গার্ড (আইআরজিসি)-এর আট কর্মকর্তা ও দুই সিরীয় বেসামরিক নাগরিকসহ ১৬ জন নিহত হয়েছিল। পরে প্রথমবারের মতো ইরান ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ছুড়েছিল। কিন্তু এক্ষেত্রে ইরানের বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে জর্ডান। দেশের শীর্ষ গণমাধ্যম বলছে, দেশটি নিজ দেশের আকাশসীমা রক্ষার কথা বললেও ইরানের পাঠানো ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ভূপাতিত করেছিল আর ইসরায়েলের জন্য তাদের আকাশ পথ বরাবরই উন্মুক্ত ছিল। আবার ১৩ জুন ২০২৫ শুক্রবার গভীর রাতে ইসরায়েল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আক্রমণ করে ইরানে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায়। পাল্টা জবাবে ইরানও হামলা চালায়। কিন্তু এবারও জর্ডান তাদের ইসরায়েলের প্রতি বন্ধুত্বের পরিচয় দিয়েছে।
 
আবার, গাজাবাসী ক্ষুধার জ্বালা, মৃত্যু, অনিশ্চিত ভবিষ্যতে প্রহর গুনছে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শরণার্থী রোহিঙ্গা নিজ দেশে প্রত্যাবাসনে অনিশ্চয়তা, যুগ যুগ ধরে চলা কাশ্মীর-উইঘুর মুসলমানদের ওপর নির্যাতন ও নিধন তো রয়েছেই। ২১ জানুয়ারি ২০২৫ সালে প্রকাশিত জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো জাতিসংঘের ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা সংক্রান্ত সংস্থার (ওসিএইচএ) এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে জানায়, ২০২৩ সালে হামাসের হামলার পর ইসরায়েলের আগ্রাসনে গাজার ৯২ শতাংশ বাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংখ্যার হিসেবে ৪ লাখ ৩৬ হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ ৬০ হাজার বাড়ি পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে আর ২ লাখ ৭৬ হাজার বাড়ি পুরোপুরি বা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওসিএইচএর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজার ১৮ লাখ মানুষের জরুরি আশ্রয় ও প্রয়োজনীয় গৃহস্থালি জিনিসপত্র প্রয়োজন। আর জাতিসংঘের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, গাজাজুড়ে প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এর মধ্যে একেকজনকে ১০ বার বা তার বেশি বাস্তুচ্যুত হতে হয়েছে।
 
অপরদিকে, ২০২২ সালে চোখ ধাঁধানো ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজন করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল মধ্যপ্রাচ্যের ধনী রাষ্ট্র কাতার। আবার, তাদের একের পর এক বিলাসী জীবনযাপন, বিখ্যাত খেলোয়াড়দের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারে কিনে খেলার আয়োজন, ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড বৈধতার জন্য দেশের আইন পরিবর্তনসহ আরো কত কী!
 
এবার দেখা যাক মুসলিম বিশ্বের সক্ষমতা। গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, সৌদি আরব দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্বের তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে একেবারে প্রথম সারিতে রয়েছে। বিশ্বের তেল ব্যবসায় সৌদি আরবের দাপটও প্রশ্নাতীত। আরো রয়েছে গ্যাস তেল ও গ্যাস, স্বর্ণ, কয়লা ইত্যাদি খনিজ সম্পদের আতুর ঘর যা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। আবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫-এ প্রকাশিত গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সামরিক শক্তি পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের ২০২৫ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বের সামরিক শক্তিতে সবচেয়ে এগিয়ে মুসলিম দেশ তুরস্ক। বিশ্বের শীর্ষ ১৪৫টি দেশের তালিকায় দেশটির অবস্থান নবম। দ্বিতীয় অবস্থানে পাকিস্তান। দেশটি বিশ্ব র‍্যাংকিংয়ে ১২তম অবস্থানে রয়েছে। দেশটি একমাত্র পরমাণু অস্ত্রের অধিকারী একমাত্র মুসলিম দেশ। আর তৃতীয়তে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া। এটি বিশ্ব র‍্যাংকিংয়ে এটি ১৩তম। এরপর রয়েছে ইরানের অবস্থান যা বিশ্ব র‍্যাংকিংয়ে ১৬তম। এ ছাড়াও রয়েছে মিশর, সৌদি আরব, আলজেরিয়া, নাইজেরিয়ার। কিন্তু এতৎসত্ত্বেও গাজার হামাসের পক্ষে লড়ার জন্য যেন কেউ নেই শুধু ইরানের ছায়া সংগঠন হিজবুল্লাহ ও হুথি ছাড়া।
 
আজ তথাকথিত মানবতার ফেরিওয়ালা জাতিসংঘ ও পশ্চিমা শক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়ানো মুসলিম নেতাদের কাছে আতঙ্কের নাম। কিন্তু এতৎসত্ত্বেও একটি কথা বিবেকে নাড়া দেয়, আর কত মুসলিম নিধন হলে আরব নেতারা সজাগ হবে? কীসের বিনিময়ে তারা এত নিশ্চুপ শুধু সম্পদ ও ক্ষমতার কাছে কি সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়েছে তারা নাকি অন্য কিছু? আজ ওআইসি-এর আলোচনা এখন শুধু হাসি তামাশায় বস্তুতে পরিণত হয়েছে। তারা সংস্থাটির কার্যক্রম দায় সাড়া কাগজের বক্তব্য ও ফটোবন্দিতেই সীমাবদ্ধ। এ যেন খাঁচায় বন্দি থাকা বাঘের গর্জন দেওয়ার মতো। সাহস থেকেও যেন কোনো এক আতঙ্কে চুপ। মুসলিম বিশ্বের এত এত কাণ্ডজ্ঞানহীন কাজে পশ্চিমা বিশ্বসহ মিত্র শক্তি আড়ালে হাসছে আর বলছে, এমনই তো চেয়েছিলাম যারা নিজেদের স্বার্থ ভুলে এভাবে ভাই-বোন, বাবা-মা, বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজনদের মৃত্যু দেখবে আরব নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। এভাবেই তথাকথিত এ নেতারা নিজেদের এ করুণ পরিণতি চেয়ে দেখবে।
 
ইতিহাস বলে যারা যুগে যুগে এভাবে নিজের বিরুদ্ধে গিয়ে শত্রুর পক্ষ নিয়ে চরম বিশ্বাসঘাতকতার পরিচয় দিয়েছে, তারা কালের প্রবাহে চরম লজ্জাজনক পরিণতি ভোগ করেছে। ইতিহাস আরো বলে, একটি রাষ্ট্র বা সাম্রাজ্য ধ্বংস হয় বাহিরের পরাশক্তিতে নয়; বরং নিজেদের মধ্যে থাকা বিশ্বাসঘাতকতায়। আজ যারা হত্যাকারীদের সাহায্য করছে এবং বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়েছে।

এক্ষেত্রে সবারই জানা ছোটবেলায় ক্লাসে পড়া ‘একতাই বল’—গল্পটির সাদৃশ্য পাওয়া যায়। গল্পটি এমন যে—এক গ্রামে একটি পরিবারের কয়েকজন সদস্য ছিল যেখানে বাবা তার কয়েকজন ছেলে নিয়ে বসবাস করত। কিন্তু ছেলেদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। একদিন বাবা তার প্রত্যেক সন্তানকে একে একে ডেকে এনে প্রথমে একটি লাঠি ভাঙতে দেয়। তারা সহজেই তা ভেঙে ফেলে। পরে কয়েকটি লাঠি একসঙ্গে ভাঙতে দিলে কেউই তা ভাঙতে পারে না। বাবা তার সন্তানদের বলেন—যদি সমাজে তোমাদের নিজেদের মধ্যে ঐক্য না থাকে, তাহলে এই একটি লাঠির মতো যে কেউ তোমাদের ক্ষতি করতে পারবে। আর যদি একসঙ্গে ঐক্যবদ্ধ থাক, তাহলে কেউই তোমাদের ক্ষতি করতে পারবে না। গল্পটির প্রেক্ষাপট শুধু কাল্পনিক হলেও এর শিক্ষা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ও বাস্তবসম্মত। পৃথিবীতে এককভাবে চলাফেরা করলে অবশ্যই ক্ষতির সম্মুখীন হবে যদি না সে ঐক্যবদ্ধ হয়। তাই তো মানুষকে বলা হয়, সামাজিক জীব। যারা একসঙ্গে সম্মিলিতভাবে বসবাস করে। তবে এখানে বুঝার বিষয় হলো—সম্মিলিত বসবাসের কথাটি দুটি অর্থে ব্যবহার করা যায়। এক. কোনো স্থানে পারস্পরিক সহযোগিতা রক্ষার্থে একসঙ্গে বসবাস করা। দুই. একই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণে কিছু মানুষ বা গোষ্ঠীর ঐক্য সংঘ।

আজ মুসলিম বিশ্ব ঠিক এই একতা না থাকার কারণেই সব ধরনের শক্তি থাকা সত্ত্বেও আজ নির্বিকার। অপরদিকে, ইসরাইল ভৌগোলিকভাবে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে থাকা খুবই ছোট একটি দেশ হওয়া সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা শক্তির এক বলিষ্ঠ সমর্থন পেয়েই যাচ্ছে।

লেখক : আন্তর্জাতিক বিষয়ে লেখক

কেকে/এএম
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

সবজির দাম গরিবের নাগালের বাইরে, ডিমের ডজন ১৫৫
নেতানিয়াহু গাজা শহর দখলের অনুমোদন দেবেন
ইসরাইলি হামলায় গাজায় ২৪ ঘণ্টায় আরো ৭০ ফিলিস্তিনি নিহত
মেহেরপুর সীমান্তে আটক বাংলাদেশিকে ফেরত দিল বিএসএফ
ফের পিএস বিতর্কে আসিফ

সর্বাধিক পঠিত

মদনে স্ত্রীর নির্যাতন মামলায় সাবেক কমিশনার গ্রেফতার
শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কৃষি সংস্কার ও খাদ্য নিরাপত্তার অভিযাত্রা
জয়পুরহাটে বজ্রপাতে আলু ব্যবসায়ীর মৃত্যু
নীলফামারীতে বালিকাদের ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত
প্রকাশ্যে দিবালোকে ঘুরে বেড়ানো আ.লীগ নেতা অবশেষে গ্রেফতার

খোলা মত ও সম্পাদকীয়- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close