মাদারীপুরে অবৈধ ড্রেজার বালু ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এক নেতা ও তার স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ এনসিপির আরেক পক্ষের ইশারায় এ ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) সন্ধ্যার দিকে জেলার রাজৈর উপজেলার হোসেনপুর ইউনিয়নের তাতিকান্দা গ্রামের ২নং ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে রাজৈর থানার পুলিশ।
আহতরা হলেন এনসিপির জেলা সমন্বয়কারী কমিটির সদস্য ও রাজৈর উপজেলার হোসেনপুর ইউনিয়নের তাতিকান্দা ২নং ব্রিজ এলাকার বাসিন্দা মহাসিন ফকির (৩৫) ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী জান্নাতুল জারা নিপা (৩০)। তাদের উদ্ধার করে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, অবৈধ ড্রেজার বালু ব্যবসার জন্য পাইপ লাইন টানেন হোসেনপুর ইউনিয়ন যুবদল নেতা এনামুল শেখ ও তার লোকজন। পরে তাদের বাধা দেন মহাসিন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এনামুলসহ বিএনপি নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে মহাসিনকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বাড়ির সামনের সড়কের ওপর ডেকে এনে বেধড়ক মারধর শুরু করে।
এ সময় চিৎকার চেচামেচি শুনে স্বামীকে বাঁচাতে এসে মারধরের শিকার হন মহাসিনের দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী নিপা। পরে স্বজন ও স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন রাজৈর থানার পুলিশ। এ ঘটনায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মাদারীপুর জেলা ও উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এনসিপির নেতারা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে সঠিক বিচার দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মাদারীপুর জেলা সমন্বয়কারী কমিটির সদস্য আহত মহাসিন ফকির জানান, ‘এনামুল শেখ আগে আওয়ামী লীগ করত। এখন হোসেনপুর ইউনিয়ন যুবদলের প্রার্থী হতে চাচ্ছে। তাদের অবৈধ ড্রেজার বালুর ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় আমার ওপর হামলা চালিয়েছে। লতিফ বয়াতি (বিএনপি নেতা) আমাকে ফোন করে ঘর থেকে বের করে আনে এবং এনামুল ও হকসহ আরো ৭/৮ জন মিলে আমাকে বেধড়ক মারধর করে। একই সঙ্গে আমার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকেও মারধর করা হয়। শুধু তাই নয়, আমার মা ও এনসিপির নাম তুলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তারা।’
তবে এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মাদারীপুর জেলা সমন্বয়কারী কমিটির সদস্য মিরাজুল ইসলামের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
আরেক অভিযুক্ত হোসেনপুর ইউনিয়ন যুবদল নেতা এনামুল শেখ উল্টো অভিযোগ করে বলেন, বাড়ি নির্মাণের জন্য আমার একটা পুকুর ভরাট করতে এনসিপি নেতা মিরাজুলকে বলেছিলাম। তার ড্রেসার পাইপ লাইন নিয়েছি। এর জন্য মহাসিন ফকির চাঁদা দাবি করছে। চাঁদা না পেয়ে ড্রেসার চালানোর সঙ্গে সঙ্গে গোড়া থেকে একটা পাইপ ভেঙে ফেলছে।
মাদারীপুরের রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদ খান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। রাতে একপক্ষের একটা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তবে এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
কেকে/এএস