বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, ইরানে ইসরায়েল ও মার্কিন সামরিক হামলা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী তৎপরতা ও স্বাধীন জাতিরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের সামিল।
এসময় ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষণার আহ্বান, অনতিবিলম্বে ইরানে হামলা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের ডাক এবং ফিলিস্তিন ও ইরানের পক্ষে সংহতি দিবস পালনের আহ্বান জানান সাইফুল হক।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সম্মুখে পার্টির ঢাকা মহানগর কমিটির উদ্যোগে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
সাইফুল হক বলেছেন, কোন উসকানি ছাড়া ইরানের পরমানু স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অঞ্চল লক্ষ্য করে ইসরায়েল ও মার্কিনীদের বেপরোয়া ক্ষেপণাস্ত্র, বোমা ও ড্রোন হামলা আন্তর্জাতিক বর্বর সন্ত্রাসী তৎপরতা। পরিকল্পিত এই সন্ত্রাসী সামরিক হামলা আন্তর্জাতিক সকল ধরনের বিধিবিধানকে পদদলিত করা হয়েছে। এ ধরনের পদক্ষেপ জাতি রাষ্ট্রের স্বাধীন সার্বভৌম অস্তিত্বকে গুরুতর হুমকির মধ্যে নিক্ষেপ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গাজাসহ ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে এই শতাব্দীর সবচেয়ে বড় গণহত্যা চালিয়ে যাওয়ার মাঝেই ইরানে এই যৌথ সামরিক হামলা ইসরায়েল ও মার্কিনীদের চূড়ান্ত ঔদ্ধত্বমূলক আন্তর্জাতিক অপরাধের বহিঃপ্রকাশ। ইসরায়েল ও মার্কিনীদের এই যুদ্ধবাদী আগ্রাসী তৎপরতা গোটা মধ্যপ্রাচ্যসহ দুনিয়াকে মারাত্মকভাবে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে, ব্যাপক যুদ্ধের বিস্তার ঘটাতে পারে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ইসরায়েল ও মার্কিনীদের এই বেপরোয়া আগ্রাসী তৎপরতার পিছনে রয়েছে গোটা আরব বিশ্বে তাদের নিরঙ্কুশ রাজনৈতিক, সামরিক ও অর্থনৈতিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা। বস্তুত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মদদের কারণেই গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল আগ্রাসী সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। এর লক্ষ্য হচ্ছে আরব দুনিয়ার বিভক্তির সুযোগ নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে অপ্রতিরোধ্য সামরিক শক্তি হিসাবে নিজেদের নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা।
তিনি আরো বলেন, এদের কূটকৌশ আরব বিশ্বের দেশগুলোকে ভেড়া বানিয়ে রেখেছে। এই কৌশলের অংশ হিসাবে এশিয়ার এই অঞ্চলে মার্কিনীদের প্রধান সামরিক আউটপোস্ট হিসাবে ইসরায়েলকে গড়ে তোলা হয়েছে।
একারণে ফিলিস্তিনসহ আরব দুনিয়ার দেশগুলোর বিরুদ্ধে ইসরায়েলের বেপরোয়া সন্ত্রাসী তৎপরতা ও যুদ্ধাপরাধকে নানাভাবে দায়মুক্তি দেয়া হচ্ছে। জাতিসংঘকে এরা পুরোপুরি ঠুটোঁ জগন্নাথে পরিনত করেছে। তিনি পরাশক্তি সমূহের ভেটো ক্ষমতা বাতিল করে জাতিসংঘকে গণতান্ত্রিক ধারায় পুনর্গঠনের আহ্বান জানান তিনি।
এসময় তিনি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ফিলিস্তিন ও ইরানের জনগণের সাথে সংহতি জানাতে বাংলাদেশে একদিন সংহতি দিবস ঘোষণা করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহবান জানান।
মহানগর কমিটির সভাপতি মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম, মহানগর কমিটির সদস্য আবুল কালাম, মীর রেজাউল আলম, জামাল সিকদার, বাবর চৌধুরী প্রমুখ।
সমাবেশে বহ্নিশিখা জামালী ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষণা করার দাবি জানান।
আকবর খান বলেন, ইসরায়েল ও মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন বন্ধ করতে না পারলে ফিলিস্তিনসহ আরব দুনিয়ায় শান্তি আসবে না। সমাবেশের পর একটি একটি বিক্ষোভ মিছিল ঢাকার কয়েকটি রাজপথ প্রদক্ষিণ করে।
কেকে/এজে