চট্টগ্রামের হালদা নদীতে নিখোঁজের ৪ দিন পর মিলল দেড় বছরের শিশু তাহিয়ার লাশ। গত বৃহস্পতিবার সকালে ফটিকছড়ি উপজেলার পূর্ব সুয়াবিল এলাকার পৈতৃক বাড়ির উঠোন থেকে নিখোঁজ হয় শিশুটি। নিখোঁজের পর তাকে খুঁজতে থাকে স্বজনসহ এলাকাবাসী। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলও এসে তল্লাশী চালায়। কিন্তু কোথাও তার হদিস পাওয়া যায়নি।
অবশেষে সোমবার (২৩ জুন) হালদা নদীর শেষপ্রান্তে চট্টগ্রাম নগরের কালুরঘাট সেতুর কাছে শিশুটির ভাসমান লাশ পাওয়া যায়। চারদিন পর রোববার বিকালে পুলিশ লাশের সুরতহাল তৈরি করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসাপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
তবে, বাবার সন্দেহ পূর্ব পরিকল্পিতভাবেই তাহিয়াকে হত্যা করা হয়েছে। কারণ নিখোঁজের সময় পরনে প্যান্ট ছাড়া কোনো কাপড় ছিল না তাহিয়ার। লাশ উদ্ধারের পর তার গায়ে জামা-কাপড় দেখা যায়। এতে সন্দেহের দানা বাঁধে বাবার। পুরো বিয়ষটি সাংবাদিকদের কাছে পরে খোলাসা করবেন বলে তিনি আশ্বস্থ করেন।’
তাহিয়া উপজেলার পূর্ব-সুয়াবিল গ্রামের বাসিন্দা মো. মানিক ড্রাইভারের কন্যা। তার ছয় বছরের আরেকটি ভাই আছে। তাহিয়ার বাবা এলাকার একজন আদর্শ সিএনজি অটোরিকশা চালক।
শিশুর স্বজনেরা জানান, বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকাল সাড়ে এগারটা পর্যন্ত শিশু তাহিয়াকে বসত ঘরের সামনে উঠোনে খেলতে দেয় তার মা। এর পর থেকেই তাকে আর পাওয়া যাচ্ছিল না। তাদের বসত ঘরের অল্প দূরেই হালদা নদী। পরিবারের লোকজন ধারণা করেছিলেন মুহুর্তেই তাহিয়া হালদায় তলিয়ে যেতে পারেন। কারণ নদীতে অথৈ পানি। বিষয়টি জানাজানি হলে নদীর দুইপাড়ে উৎসুক মানুষ ভিড় করেন। বিভিন্নস্থানে তল্লাশি করেন।
নাজিরহাট পৌরসভার কাউন্সিলর মো. আমান উল্লাহ বলেন, ‘নিখোঁজের পর অবশেষে তার লাশ মিলেছে হালদায়। বাড়ি থেকে অন্তত ৩০ কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রাম নগরের কালুরঘাট সেতুর কাছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা খবর দিলে শিশুটির বাবা সেখানে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন। নিহতের বাবার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা ভাবতে শুরু করেছি। এখন পুরো এলাকায় চলছে শোকের মাতম।’
শিশুটির বাবা মোহাম্মদ মানিক কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ‘আদরের কন্যার লাশ বহন করার শক্তি আমার নেই। আপনারা অনেক শ্রম দিয়েছেন, সহযোগিতা করেছেন। তবে লাশ স্বচক্ষে দেখার পর মনে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। কারণ তার পরনে প্যান্ট ছাড়া কোন কাপড় ছিল না। ফলে আমার সন্দেহ হচ্ছে কেউ পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মেয়েকে হত্যা করতে পারেন। তবে পুরো বিষয়টিকে পরিস্কার করতে ‘সময়’ নিচ্ছি। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ দাফনের পর পরই বিষয়টি সাংবাদিকদের খোলাসা করতে চাই। এর আগে কিছুই বলতে চাই না।’
কেকে/এজে