বান্দরবানের লামা পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড লাইনঝিরির বাসিন্দা মৃত হানিফ ভান্ডারির পরিবার কর্তৃক প্রতিবেশী মো. আবদুল বারেকের পরিবার ও তাদের সন্তানদের ওপর সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে হামলা, মামলা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত করেছেন।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুরে লামা প্রেস ক্লাবে হলরুমে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আবদুল বারেকের পরিবারের পক্ষে মো. ইসহাক লিখিত বক্তব্যে বলেন, সাম্প্রতিককালে আমাদের ভূমিচ্যুত করার জন্য প্রতিবেশী মৃত হানিফ ভান্ডারির ছেলেরা হামলা নির্যাতন মিথ্যা অভিযোগ ও অপপ্রচারের মাধ্যমে আমাদের সন্তান, ভাই বোন ও নিকটাত্মীয়দের দিশেহারা করে তুলেছে। মৃত হানিফ ভান্ডারির ছেলে, আমির হোসেন, আনোয়ার হোসেন (বিজিবি সদস্য), ডাই মো. শাহাজান, সোহরাব হোসেন ও সোহরাব হোসেনের ছেলে মনির হোসেন প্রায় সময় ভাড়াটিয়া লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে কিছুদিন পরপর আমাদের দোকানপাটে হামলা চালায়। সর্বশেষ গত ১০ জুন রাত ৮.০০ ঘটিকায় মধুঝিরি থেকে একদল ভাড়া করা সন্ত্রাসী নিয়ে আমাদের ভোগদখলীয় জমি থেকে উচ্ছেদ করতে হামলা চালায়। পুলিশ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আমরা রেহায় পাই।
হানিফ ভান্ডারির পিতা রুস্তম আলীর নামীয় দুই চৌহদ্দিতে আর/ ৩১২নং হোল্ডিংয়ে মোট ৫ একর ২য় ও ৩য় শ্রেণির জমি রয়েছে। যার অবস্থান আমাদের দখলীয় জায়গা থেকে অনেক দূরে। এছাড়া রুস্তম আলীর নামে ২২৮ নং হোল্ডিংয়ে দুই চৌহদ্দিতে ৩য় শ্রেণির ৫ একর জায়গা ছিলো, যাহা মাতামুহুরি কলেজের নামে সম্পূর্ণ নাম জারি হয়। কলেজের জায়গা ঘেঁষে উত্তর পাশ দিয়ে লামা চকরিয়া সড়ক বিদ্যমান। আমাদের বর্তমান দখল লামা চকরিয়া সড়কের উত্তর পামে সড়ক ঘেঁষা ওপরদিকে লামা চকরিয়া সড়ক ঘেঁষে উত্তর দিকে আমার দাদা, পিতা ওমর আলীর নামীয় ৪৯৬ খতিয়ানে বিভিন্ন দাগাদির আব্ন্দর ২ একর জমি রয়েছে।
ওই সব দাগাদির কতক জমি বিক্রিও করা হয়েছে। সুতরাং আমাদের বর্তমান দখলীয় দোকানপাটসহ জায়গা আনুমানিক ০.১৫ শতক; হয় আমাদের দাদা, পিতা ওমর আলীর মাথাখিলা খাস, না হয় সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গা। বিগত ৯০'র দশকে হানিফ ভান্ডারীর পিতা রুস্তম আলী উক্ত জায়গা জবর দখল করতে চেয়েছিলো। তৎসময়ে ১ম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ আলী মিয়ার মধ্যস্থতায় রুস্তম আলী উক্ত জায়গা দাবি করেব না মর্মে লিখিত অঙ্গিকার দেন।
২০০৪ সালে আমাদের উক্ত জায়গা দোকানপাটসহ হানিফ ভান্ডারি জবরদখল করতে চায়লে, তৎসময় লামা থানায় আমরা একটি সাধারণ ডাইরি নং-২৭৫, তারিখ- ৮/৭/২০০৪ ভুক্ত করলে ওই সময়েও একই অপরাধ আর করবে না বলে আদালতে মুচলেকা দেয়। ২০২২ সালে হানিফ ভান্ডারির পরিবার আবারো জবরদখল চেষ্টা চালালে লামা থানায় আবারও তাদের নামে সাধারণ ডায়েরি নং-৪৪৬, তারিখ: ১১/৪/২০২২ অন্তর্ভুক্ত হয়। একই সময় তারাও লামা উপজেলা নির্বাহী আদালতে পিটিশন মামলা নং ১৯/২০২২ দাখিল করেন। তাদের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে লামা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কানুনগোদ্বারা সরেজমিন তদন্ত করায় তদন্ত রিপোর্ট উল্লেখ করা হয়।
সরজমিন তদন্ত প্রাপ্ত সার্বিক বিষয়াদি পর্যালোচনায় পক্ষদ্বয়ের দাখিলীয় জমাবন্দি দৃষ্টে দেখা যায় জমাবন্দি ভুক্ত চৌহদ্দির সঙ্গে সরজমিন বাস্তব চৌহদ্দি যথাযথ নয় মর্মে প্রতীয়মান। তর্কিত নালিশি জায়গা সরকারি রাস্তার জায়গা বিধায় পক্ষদ্বয়কে নালিশি জমিতে প্রবেশ করা হতে বিরত থাকার আদেশ দেওয়া যেতে পারে। ওই মামলার আদেশে বলা হয়, জায়গা "বাদি পক্ষের বেদখল হয় নাই মর্মে প্রতীয়মান হওয়ায় মামলা নথিজাত"।
উক্ত জায়গাটি দীর্ঘকাল ধরে আমাদের দখলে। আমরা সেখানে দোকানপাট দিয়ে আয় রোজকার করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। কিন্তু আমির হোসেন ও তার ভাই বিজিবি সদস্য আনোয়ার অন্যান্য চাচা ও চাচাতো ভাই মনির হোসেন আগস্ট পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক খোলস পাল্টিয়ে যত্র তত্র মব সৃষ্টি করছে। একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক দলের নামভাঙিয়ে ও সাংগঠনিক পরিচয় দিয়ে আমাদেরকে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ট্যাগ লাগিয়ে আমাদের দখলি সম্পত্তি স্থাপনা ভাঙচুর ও দখল করতে না পেরে মনগড়া তথ্য দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে মানহানিকর মিথ্যা খবর ছড়াচ্ছে।
মব সৃষ্টিকারী ভূমি দস্যু এ পরিবারটির রাহুগ্রাস থেকে আমরা মুক্তি চাই। আমাদের বিরুদ্ধে থানা আদালতে এ পর্যন্ত কোনো বেআইনি কর্মকাণ্ডের অভিযোগ নেই। অপরদিকে তাদের বিরুদ্ধে বেআইনি নানা কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। এ অবস্থায় আপনাদের লেখনির মাধ্যমে এ জবরদখলের পাঁয়তারাকারী রাজনীতির খোলস বদলানো হানিফ ভান্ডারির পরিবারের আগ্রাসনের বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর আনার দাবি করছি।
কেকে/এএস