ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের ফরদাবাদে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শালিশে ডেকে নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের ঘটনায় দুই গ্রুপের কমপক্ষে ২০ জন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।
রোববার (১৫ জুন) সকাল ১০টায় ইউনিয়ন বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন ও স্বেচ্ছাসেবক দলের উপজেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শিপনসহ গ্রামবাসী আহত হয়েছে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। ফরদাবাদ এলাকায় থমথমে ভাব বিরাজ করছে। সংঘর্ষ এড়াতে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী সূত্র থেকে জানা গেছে, উপজেলার ফরদাবাদ গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলছিল।
আজ রোববার সকাল ৯ টায় সালিশের ডাক দেয় রুপসদী ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মুসা হায়দার। বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শিপন তার লোকজন নিয়ে ফরদাবাদ শান্তির বাজারে গেলে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় ফরদাবাদ ইউনিয়নের সাবেক যুবদল সভাপতি সালাউদ্দিন। এতে শিপন গ্রুপের ১৩ জন ও সালাউদ্দিন গ্রুপের ৩ জন আহত হয়। শিপন গ্রুপের ২ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, শিপনের লোকজন উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চলে আসলে ছয়টি বাড়িতে হামলা চালিয়ে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার মালামাল লুটপাট করে সালাউদ্দীনের লোকজন। এমনকি বেশকিছু ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে।
হামলায় আহতদের স্বজনরা জানান, সালাউদ্দিন দলের নাম ভাঙ্গিয়ে ৫ আগষ্টের পর থেকে একের পর এক অপরাধ করে আসছে। চাঁদাবাজি ছাড়া তার গ্রুপের অন্যকোনো কাজ নেই। বাঁধা দিলেই বিপত্তি বাঁধে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত সালাউদ্দিনের পক্ষের কথা বলতে চাইলে কেউ বলতে রাজি হননি।
আহতরা হলেন- ইমন, শাহপরান, শিশু মিয়া, সোহেল, ফারুক, সাদ্দাম, রোহেল, সালাউদ্দিন, মামুন, সালমা, আখি আক্তারসহ অজ্ঞাত আরো ১০/১২ জন।
হামলার বিষয়ে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ম.ম ইলিয়াস বলেন, আধিপত্য বিস্তার কিংবা ভুলবোঝাবুঝির কারণে এমন হামলা হতে পারে। দুই গ্রুপের লোকজনই বিএনপির। আমি বিস্তারিত জেনে পরে জানাব।
আজকের হামলা নিয়ে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোরশেদুল আলম চৌধুরী বলেন, ফরদাবাদ ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের সংবাদ পেয়ে পৃথক দুটি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে সক্ষম হয়েছি। পরবর্তী সংঘর্ষ এড়াতে উভয় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় কোন পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাই নাই। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেকে/এএম