বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও কুরবানি ঈদকে ঘিরে সিদ্ধিরগঞ্জে জমে উঠেছে কাশেম পাড়া নাভানা সিটি বালুর মাঠে গবাদিপশুর হাট। হাটে ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বেশি থাকায় বড় গরু নিয়ে কিছুটা চিন্তিত ব্যাপারীরা। তবে সিদ্ধিরগঞ্জের সব পশুর হাটের মধ্যে ব্যতিক্রম কাশেম পাড়া নাভানা সিটি বালুর মাঠে অবস্থিত পশুর হাটটি। ক্রেতাদের জন্য আকর্ষণীয় পুরস্কার হিসেবে ‘আর ওয়ান ফাইভ’ একটি মোটরসাইকেল ঘোষণা করেছেন হাট কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (৪ জুন ) সিদ্ধিরগঞ্জে সকাল থেকেই আকাশ কিছুটা মেঘলা রয়েছে। এমন
প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও নাসিক ৭নং ওয়ার্ডের কাশেম পাড়া নাভানা সিটি বালুর
মাঠে হাট ঘুরে দেখা যায়, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে গত রোববার থেকে বিভিন্ন
এলাকা হতে আসতে শুরু করেছে গরু। ছোট, বড় ও মাঝারি আকারের গরু কয়েক বছর
লালন পালনের পর বিক্রির জন্য এই হাটে তুলেছেন খামারিরা।
একটি গরু ক্রয় করলে তার সঙ্গে ক্রেতাকে একটি লটারির কুপন দেওয়া হচ্ছে। যা ঈদপরবর্তী একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ভাগ্যবান সেই ক্রেতার হাতে উক্ত পুরস্কার তুলে দেবেন হাট কর্তৃপক্ষ।
এদিকে সাগরে নিম্নচাপ থাকায় গত কয়েকদিন ধরে থেমে থেমে ঝিরিঝিরি ও মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে সিদ্ধিরগঞ্জসহ বিভিন্ন জায়গায়।
তবে নদী পথে গরু আসতে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে খামারিদের। নদী পথে গরু আসার সময় নারায়ণগঞ্জের বেশ কয়েকটি পয়েন্টে দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সন্ত্রাসীরা জোরপূর্বক এক হাটের গরু অন্য হাটে নামাতে বাধ্য করছেন খামারিদের এমনটাই অভিযোগ তুলেছেন কাশেম পাড়া নাভানা সিটি হাট কর্তৃপক্ষ।
তবে গেল কয়েকদিন ধরে লক্ষ্য করা গেছে, হাটে ক্রেতাদের আনাগোনা থাকলেও বিক্রি ছিল কিছুটা কম। অধিকাংশ ক্রেতাই ঘুরে ঘুরে দেখেছেন গরু, যাচাই করছেন দাম। সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বুধবার সকাল থেকেই ক্রেতাদের সংখ্যা বাড়তে দেখা গেছে।
ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে কাশেম পাড়া নাভানা সিটি কোরবানির পশুর হাট জুড়ে দেশীয় খামারিরা নিয়ে এসেছেন বিভিন্ন জাতের গরু, মহিষ ও ছাগল। বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও ক্রেতা-বিক্রেতার জমজমাট উপস্থিতিতে ঈদের আমেজে মুখরিত হয়ে উঠেছে এই হাট এলাকা। ফরিদপুরের মো. ইসহাক মোল্লা ২২টি গরু নিয়ে এসেছেন এ হাটে। মাঝারি আকারের গরুর দাম হাঁকাচ্ছেন ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।
সিরাজগঞ্জ থেকে আসা খামারি ইসলাম মিয়া বলেন, পশু পালনে খরচ বেড়েছে। কিন্তু সে তুলনায় মিলছে না দাম। গত বছর ২ হাজার টাকায় যে খড় পাওয়া যেত এবছর তার দাম ৩ হাজার টাকা। ভূষি, খুদ, কুড়ার দামও প্রায় আগের তুলনায় ৫০ ভাগ বেড়েছে। খরচ বাড়লেও গরুর দাম আগের মতোই।
ভোলা থেকে আসা সালাম মিয়া বলেন, বৈরী আবহাওয়ার জন্য ক্রেতা কম। এছাড়াও বিগত বছরগুলোতে যারা বড় বড় গরু কিনতেন রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে তাদের বেশিরভাগ পলাতক। ফলে বাজারে গরু বেচাকেনা কম।
কাশেম পাড়া নাভানা সিটি বালুর মাঠের ইজারাদার মো. বাবুল হোসেন বলেন, হাটে পর্যপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন তারা। পুরো হাটজুড়েই বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরার। পর্যাপ্ত গরুও এসেছে তাদের হাটে। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে ক্রেতা হাটে কম আসছে বলে জানান তিনি।
এদিকে হাটের সার্বিক তত্ত্বাবধায়নের দায়িত্বে থাকা অ্যাড. রাকিবুর রহমান সাগর বলেন, খামারি ও ক্রেতাদের সুবিধার জন্য কয়েক ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। জাল টাকা শনাক্তকরণের ডিজিটাল মেশিনের ব্যবস্থা রয়েছে। তাছাড়া ক্রেতাদের জন্য আকর্ষণীয় ‘আর ওয়ান ফাইভ" মোটরসাইকেল পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। তাই ক্রেতাদের উদ্দেশে সাগর বলেন, গরু কিনুন ‘আর ওয়ান ফাইভ’ মোটরসাইকেল জিতুন।
কেকে/এএস