চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে আসন্ন ঈদুল আজহার পশুর হাটে প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের পশু সেবা কার্যক্রম নেই। প্রতিবছর কুরবানির আগে নিরাপদ ও সুস্থ পশু বাজারে ক্রয়-বিক্রয় এবং পশুর বর্জ্য অপসারণে নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু সবই যেন খাতায় লিপিবদ্ধ। কাজের কাজ কিছুই করছেন না তারা। তাই বলা চলে চলে কাজীর গরু খাতায় আছে, গোয়ালে নেই!
প্রাণিসম্পদ দফতর উপজেলায় স্থায়ী ও অস্থায়ী ২৯টি পশুরহাটে ৮টি মনিটরিং দল গঠন করে বাজার তদারকি করার কথা। কিন্তু বাস্তবে তদারকির কিছুই নেই। দল গঠন করলেও তা অনেকটাই কাগজে-কলমে। বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন মেলেনি। ফলে পশুর স্বাস্থ্যসেবার বালাই নেই বললেই চলে।
শনিবার (৩১ মে) উপজেলার নাজিরহাট বাজারে তাদের কোনো সেবা কার্যক্রম দেখা যায়নি। ২ জুন উপজেলা সদরের বিবিরহাট বাজারে তাদের কোন কার্যক্রম ছিল না। অথচ রাত অবধি প্রচুর পশু বেচাকেনা চলেছে। একইভাবে ২ জুন চামার দিঘীর অস্থায়ী বাজারে সরেজমিনে গিয়ে ভেটেরিনারি হাসপাতালের কোনো টিমের সদস্যের দেখা যায়নি।
জানা গেছে, তারা কোথাও পশুর সেবা দিয়েছেন এমন নজিরও নেই। অনেকের মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। বিবিরহাট বাজারের গরু বিক্রেতা মো. সমির বলেন, বিক্রি করতে আনা একটি গরু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে আমি কোনো প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ডাক্তারকে পাইনি। পরে একজন গ্রাম্য ডাক্তার দিয়ে অসুস্থ গরুকে সুস্থ করে তুলেছি। ততক্ষণে আরেকটি গরু রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েছে।
নাজিরহাট বাজারের গরু বিক্রেতা মো. আকবর আলী বলেন, ভেটেরিনারি হাসপাতালের টিমের কোনো কার্যক্রম বাজারে কোন দিন দেখা যায়নি। খবর নিয়ে জানা গেছে, তারা মাঝে মধ্যে আসলেও ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা ফি নিয়ে নামমাত্র সেবা দেন। এভাবে চরম অবহেলায় আমাদের পশুর দিন কাটে।
মনিটরিং দলের সদস্য মো. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা নিয়মিত বাজারে টহলে থাকি। তবে অনেকেই আমাদের চেনেন না বা বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না। তবে আমরা কাজের বিষয়ে সচেতন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আবদুল মমিন বলেন, আমাদের দফতরে লোকবল কম। তারপরেও আমরা চেষ্টা করছি পশুরহাটে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে। গঠিত ৮টি দল তাদের সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাচ্ছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে মাঠ কর্মীদের অবহেলার কথা শুনা যায়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, এটি চরম অন্যায়। সরকারের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী এমনটি করতে পারেন না। আনীত অভিযোগের বিষয়ে খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেকে/এএম