ভারি বর্ষণে গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভোগড়া ও চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে ওই সড়কের উভয়পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। কোথাও হাঁটু পনি, কোথাও তার চেয়ে বেশি পানিতে তলিয়ে যায় মহাসড়ক। এতে যানবাহনগুলো ধীরগতিতে চলতে গিয়ে দেখা দেয় দীর্ঘ যানজট।
শনিবার (৩১ মে) সকাল থেকে হালকা বৃষ্টি হলেও দুপুরে মুষলধারে বৃষ্টি হয় গাজীপুরে। প্রায় এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে নগরীর নিচু এলাকায় পানি জমতে শুরু করে। এছাড়াও নগরীর অনেক নিচু এলাকায় পানিতে তলিয়ে যায়। বাসা-বাড়ি ও দোকানপাটে পানি ঢুকে সৃষ্টি হয় সীমাহীন দুর্ভোগের।
ড্রেন না থাকায় চান্দনা, ভোগড়া এলাকার পানি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে জমে। এতে তলিয়ে যায় মহাসড়ক। পানির কারণে স্বাভাবিক গতিতে যানবাহন চলতে না পেরে সৃষ্টি হয় যানজট। সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই মহাসড়কের ভোগড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে চান্দনা চৌরাস্তা এবং ভোগড়া চৌরাস্তা থেকে নাওজোড় পর্যন্ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজটের প্রভাবে নগরীর বোর্ডবাজার, টঙ্গীর হোসেন মার্কেট এলাকাতেও দেখা দেয় তীব্র যানজট। স্থানীয়দের অভিযোগ পর্যাপ্ত ড্রেনের অভাব, বিআরটি প্রকল্পের ভুল নকশা এবং খাল ভরাটের কারণে এ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
ভোগাড়ার ব্যবসায়ী আব্দুল বারেক মিয়া জানান, বিআরটিএ প্রকল্পের ভুল নকশা এবং কাজ সম্পন্ন না হওয়ার মাসুল দিতে হচ্ছে নগরবাসীসহ এই মহাসড়কের চলাচলকারীদের। নকশায় মহাসড়কের নিচ দিয়ে যে ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সরু। পানি ঠিকমত প্রবাহিত হয় না। চান্দনা ও ভোগড়া এলাকার লাখ লাখ ঘর-বাড়ির পানি ড্রেনে এসে পড়ে। এছাড়া অপরিকল্পিতভাবে বাসাবাড়ি, কারখানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তৈরি করায় সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। তলিয়ে যায় গলি, সড়ক-মহাসড়ক।
গাজীপুর পরিবহন চালক ইব্রাহিম মিয়া বলেন, বিআরটি প্রকল্পে কাজ শেষ না হওয়ায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ রয়েছে। এসব জায়গায় পানি জমে থাকায় যানবাহন স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারে না। ফলে ভোগান্তি বাড়ছে। বিশেষ করে শনিবারের ভোগান্তি ছিল মারাত্মক। এক কিলোমিটার যেতেই দেড় -দুই ঘণ্টা লেগেছে।
ভোগড়া এলাকার বাসিন্দা ও কারখানার শ্রমিক আশরাফ হোসেন জানান, বৃষ্টি বেশি হলে ঘরে পানি ঢোকে। সড়কও তলিয়ে যায়। বাধ্য হয়ে অনেক সময় ভিজে কারখানায় যাতায়ত করতে হয়। সিটি করপোরেশনের উচিত দ্রুত জলাবদ্ধতার নিরসনে পদক্ষেপ নেওয়া।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল লতিফ জানান, ভোগড়া এলাকার পানি মোগরখাল দিয়ে প্রবাহিত হয়। দখল হওয়ার কারণে বৃষ্টির পানি নামতে সময় লাগছে। এতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। ২৩ মে থেকে মোগরখাল উদ্ধার ও খনন করতে কাজ শুরু করেছে গাজীপুর সিটি করপোরেশন। শুক্রবার ছুটির দিনেও কাজ তদারক করেছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ও ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী। কাজ শেষ হলে জলাবদ্ধতা কমবে
কেকে/এএস