সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫,
২৮ আশ্বিন ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম: ১১ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় এক বিলিয়ন ডলার      জিয়া পরিবার জনগণের পরিবার : আমান উল্লাহ      রোমে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা      ২০০ তালেবান সৈন্যকে হত্যার দাবি পাকিস্তানের      বাতিল হওয়ার শঙ্কায় বিশ্বজয়ী আর্জেন্টিনার ভারত সফর      বিচারব্যবস্থাকে ব্যবহার করে দেশে স্বৈরশাসন পাকাপোক্ত হয়েছিল      প্রেসক্লাবে শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গে সাউন্ড গ্রেনেড-লাঠিচার্জ      
দেশজুড়ে
পশুর হাট জমে উঠলেও নেই ক্রেতা, বিপাকে ব্যবসায়ীরা
রেজাউল করিম রাজ্জাক, আদিতমারী
প্রকাশ: রোববার, ২৫ মে, ২০২৫, ৫:৩৪ পিএম
পশুর হাট। ছবি : প্রতিনিধি

পশুর হাট। ছবি : প্রতিনিধি

পবিত্র ঈদুল আজাহা যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই জমজমাট হয়ে উঠছে লালমনিরহাটের কুরবানির পশুর হাটগুলো। জেলার উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী পাঁচটি উপজেলার ঐতিহ্যবাহী সাপ্তাহিক পশুর হাটগুলো এখন প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর। উল্লেখযোগ্য হাটের মধ্যে দুরাকুটি, বড়াবাড়ী, শিয়ালখোওয়া, চাপারহাট, মহিষখোচা, দইখাওয়া, বড়খাতা চামটারহাটসহ বিভিন্ন হাটে ইতোমধ্যে ভিড় জমেছে গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়ার ব্যাপক সরবরাহে। এই হাটগুলো সকাল থেকে শুরু হওয়া রাত পর্যন্ত চলে বেচা কেনা। 

ঈদের বেচা কেনা ছাড়াও অন্যান্য দিনের সাপ্তাহিক হাটগুলোতে অনেক দূরদূরান্ত থেকে পাইকার নসিমন,ভটভটিসহ বিভিন্ন যানবাহনযোগে বিক্রি করার জন্য গরু নিয়ে আসে থাকে। অন্যদিকে বাহিরের জেলার পাইকাররা গরু কিনে ট্রাকযোগে নিয়ে যেতে দেখা যায়। প্রতি বছর কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা পশু কিনে গাড়ীতে নিয়ে যায়।খামারিদের আশা, ঈদে জেলার অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও কোরবানির পশু পাঠানো সম্ভব হবে।

শনিবার (২৪ মে) দুরাকুটি হাটে সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, প্রতি বছরের ন্যায় কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে পশুর হাট জমে উঠলেও ক্রেতা নেই দামও নেই। হাটে ব্যাপক গরু উঠলেও চাহিদা নেই। তাই বিভিন্ন এলাকা থেকে নিয়ে আসা গরু ব্যবসায়ী ও খামাড়িরা গরু নিয়ে বসে আছে ক্রেতা না থাকার কারনে দাম কম। 

গরু ব্যবসায়ীরা জানান, খামাড় থেকে বেশি দামে কিনে এনে বাজারে বিক্রি করতে এসে দেখি বাজারে দাম নেই। তারা এখন লোকসানের কবলে পড়ে গেছে। দেখা গেছে বাজারে গরু আমদানীর তুলনায় ক্রেতা একেবারেই নেই। ব্যবসায়ী হাটে গরু নিয়ে বসে আছে। 

ব্যবসায়ীরা জানান, প্রত্যকটা গরু থেকে বর্তমানে বিক্রি করলে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার মত লোকসানের কবলে পড়তে হবে। কোরবানী জন্য বড় জাতের গরু যদি বাজার থেকে ঘুরে নিয়ে যায় তাহলে গরুকে বসে বসে প্রতিদিন ৮শ থেকে ১ হাজার টাকার মত গরুর পিছনে খরচ করে খাওয়াতে হবে বিধায় তারা বাধ্য হয়ে লোকসান করে বিক্রি করতে হচ্ছে। আবার কেউ কেউ বিক্রি না হওয়ায় গাড়ীতে করে গরু বাড়ীতে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের অভিযোগ প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন এলাকার গরু ব্যবসায়ীরা আসত কিন্তু এ বছর নানা কারনে না আসায় হাটে গরু দাম কম।

লালমনিরহাট সদর ভাটিবাড়ী এলাকা থেকে আসা গরু ব্যবসায়ী আলমগীর জানান, তিনটি ফ্রিজিয়ান জাতের বড় ষাড় গরু এনেছি যার প্রতিটি ষাড়ের ওজন প্রায় ৮ থেকে ১০ মণের মত হবে । প্রতিটি ষাড়েরর কেনা দাম ১ লক্ষ ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকায় কিনে হাটে নিয়ে এসেছি। এখন এসে দেখি হাটে ব্যাপক গরু উঠলেও ক্রেতা নেই। প্রতিটি ষাড় যা কেনার দাম থেকে ১৫ থেকে ২০ হাজার কম বলছে। প্রত্যাশা ছিল প্রতিটি ষাড় ১ লাখ ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি হবে, কিন্তু ক্রেতারা কম দামে কিনতে চাচ্ছেন। তাই ষাড় নিয়ে বসে আছি। বিক্রি করতে না পরলে এই ষাড় গরুগুলো কোথায় নিয়ে রাখব আর খেতে কি দিব। একটি ষাড়ের পিছনে প্রতিদিন ৫ শত থেকে ৭ টাকার মত খাবার দিতে হয়।

তিনি আরো জানান, খামার থেকে যখন একটি গরু বাহির করে হাটে নিয়ে আসা হয় বিক্রি করতে না পারলে তখন নানা সমস্যাসহ বিরাট লোকসানের কবলে পড়তে হয়। 

আদিতমারী থেকে আসা গরু ব্যবসায়ী মজিদুল বলেন, প্রতি বছর কুরবানি ঈদকে সামনে রেখে গরু ব্যবসা করে বেশ লাভজনক হয়েছিলাম সে আশায় আজকে এ হাটে এসে দেখি যে গরু আমদানী হয়েছে সে তুলনায় ক্রেতা একেবারেই কম দামও অনেক কম। গরু বিক্রি করলে কেনার দামের চেয়ে প্রতি গরুতে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকায় কমে বিক্রি করতে হবে তাই বাধ্য হয়ে গরু বাড়ীতে নিয়ে যাচ্ছি।

খামারিরা বলছেন, গো-খাদ্য ও উৎপাদন খরচ বাড়লেও বিক্রিতে আশানুরূপ দাম পাওয়া যাচ্ছে না। 

ভেলাবাড়ি ইউনিয়নের বাগদির বাজর পাঠানঝাড় আলাকার খামারি আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, বছরব্যাপী একটা ষাড় মোটাতাজাকরন করতে পরিশ্রম ও প্রচুর খরচ করতে হয়। তাছাড়া বর্তমানে বাজারে খাদ্যদ্রব্যর দামও অনেক বেশি। সে হিসেবে গত বছরের তুলনায় এ বছর খরচ অনেক বেড়েছে, কিন্তু দাম তেমন বাড়েনি। 

তিনি আরো জানান, গত বছর ঈদে একটি উন্নত জাতের ষাড় বিক্রি করেছিলে ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার মত পেয়েছিলাম। এ বছর বেশি লাভের আশায় সে আরো তিনটি উন্নতজাতের ষাড় ঈদে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছে যা প্রতিটি ষাড়ের ওজন প্রায় ৮ থেকে ১০ মনের মত মাংস হবে। কিন্তু বর্তমানে বাজারে দাম না থাকায় হতাশায় ভুগতেছেন।

দুরাকুটি হাটের ইজারাদার মো. হায়দার আলী জানান, হাটে পাইকার ও খামারিদের মধ্যে একটি কথা উঠেছে সেটার বিষয়ে কাটিয়ে উঠতে দু-চারটা হাটের মত সময় লাগবে এবং খামারি ও স্থানীয় পাইকাররা যাতে বেশি মূল্যে বিক্রি করতে পারে তার জন্য দুর-দুরান্তেরর পাইকারদের সাথে যোগাযোগ চলছে তাতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। 

তিনি আরো জানান বিগতদিনে হাটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের ফলে হাটটি নষ্ট হওয়ার পথে চলে গিয়েছিল। আমরা এ বছর হাটের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে সরকারি নিয়মে সঠিকভাবে টোল আদায় করছি। আমরা কোন অনিয়মের সাথে নেই। 

কেকে/ এমএস
আরও সংবাদ   বিষয়:  ঈদুল আজাহা   পশুর হাট   ক্রেতা   ব্যবসায়ী  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

ট্রাক ভাড়া করে ঘুরে ঘুরে ডাকাতি করত তারা
শিশু বলাৎকার ও হত্যার অভিযোগে কিশোর গ্রেফতার
১১ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় এক বিলিয়ন ডলার
মুরাদনগরের ওসি জাহিদুরের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বসহ নানা অভিযোগ, অপসারণ দাবি
জিয়া পরিবার জনগণের পরিবার : আমান উল্লাহ

সর্বাধিক পঠিত

আসছে নাটক ‘অপ্রকাশিত ভালোবাসা’
চিকিৎসক ও জনবল সংকটে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা
রাজশাহীতে বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস পালিত
পাল্লা বাজারে রক্তলাল শাপলার মনভোলানো সমাহার
কালাইয়ে বিএনপির গণমিছিল ও লিফলেট বিতরণ

দেশজুড়ে- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close