‘মৌলভীবাজার কারাগারে জেল সুপারের বাণিজ্য’ শিরোনামে গত ২৫ এপ্রিল দৈনিক খোলা কাগজ পত্রিকার শেষ পাতায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদটি প্রকাশের পর বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় এবং বিষয়টি কারা অধিদফতর পর্যন্ত গড়ায়। পরে তদন্ত ও অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে মৌলভীবাজার থেকে রাঙামাটিতে বদলি করা হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ মে) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের কারা-১ শাখা থেকে উপসচিব মো. হাফিজ-আল-আসাদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ বদলি আদেশ দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, কারা অধিদফতরের প্রস্তাবনার আলোকে মৌলভীবাজারের জেল সুপার মুজিবুর রহমান মজুমদারকে রাঙামাটি জেলা কারাগারে জেল সুপার হিসেবে বদলি করা হয়েছে। জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
বুধবার (১৪ মে) বিকালে মৌলভীবাজার জেল সুপার মজিবুর রহমানের বদলির বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের নিশ্চিত করেছেন সিলেট বিভাগের ডিআইজি প্রিজন মো. ছগির আহমেদ।
মুজিবুর রহমান মজুমদার ২০২৩ সালের ১ অক্টোবর জেল সুপার পদে মৌলভীবাজার কারাগারে যোগদানের পর থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে কারাগারের ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনকে একটি মুনাফার খনিতে পরিণত করাসহ কারাগারে বন্দিদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, ঘুষ গ্রহণ, সিট ও খাবারের বাণিজ্যসহ তার বিরুদ্ধে আরো অনিয়মেয় অভিযোগ ওঠে।
এর আগে মৌলভীবাজার জেলা কারাগারে বন্দিদের নির্যাতন, সিটবাণিজ্য, ওয়ার্ডবাণিজ্য, মোবাইল কলের বাণিজ্য, সাক্ষাৎবাণিজ্য, ক্যান্টিনে খাবারবাণিজ্যসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে দৈনিক খোলা কাগজসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে জেল সুপার মুজিবুর রহমান মজুমদারের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ হয়।
দুদক সূত্রে আরো জানা যায়, জেল সুপার মো. মজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে বেশ কিছু লিখিত অভিযোগ ইতোমধ্যে দুদকে জমা হয়েছে। এক্ষেত্রে তদন্তকারী কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান, তার স্ত্রী রীনা সুলতানা এবং তার সন্তানের নামে থাকা সম্পদ সম্পর্কিত তথ্য চেয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে চিঠি পাঠানো হয়েছে এবং যথাযথ রেকর্ড পত্রও সংগ্রহ করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক অনুসন্ধান চালাচ্ছে। অনুসন্ধান পরবর্তী রিপোর্টটি কমিশনে দাখিল করার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের পর আরো বড় পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে। এদিকে মৌলভীবাজার জেল সুপার মুজিবুর রহমান মজুমদারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে, সেগুলোর বিষয়ে এখনও তার কাছ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
কেকে/এএম