সরকারি কর্মকর্তা সেজে সহজসরল চাকরিপ্রার্থীদের চাকরি দেওয়ার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে সাইদুর রহমান ওরফে বিপ্লব নামে এক প্রতারককে গ্রেফতার করেছে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে কালীগঞ্জ থানা আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম মালিক।
সংবাদ সম্মেলনে ওসি সেলিম মালিক জানান, সাইদুর রহমান বিপ্লবের প্রতারণার ইতিহাস বেশ পুরোনো। তিনি বিভিন্ন সময়ে নিজেকে সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের বিশ্বাস অর্জন করত। এমনকি ২০১৪ সালে এই প্রতারক নিজেকে জেলা প্রশাসক পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করতে গিয়ে জনতার হাতে ধরা পড়েছিল। সে ঘটনায় দায়ের হওয়া দুটি মামলায় তার জেলও হয়েছিল। কিন্তু কারামুক্তির পরও তিনি তার প্রতারণার কৌশল বদলাননি।
ওসি আরো জানান, সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, বিশেষ করে প্রায় সাতটি থানায় মোট আটটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এই মামলাগুলোতেও তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মকর্তা সেজে প্রতারণা এবং অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, সাইদুর রহমান একটি সুসংগঠিত প্রতারক চক্রের সদস্য। এই চক্রটি দীর্ঘ দিন ধরে বেকার যুবক-যুবতীদের সরকারি চাকরির স্বপ্ন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিত। বিপ্লব নিজেকে কখনো শিক্ষা দফতরের বড়কর্তা, কখনো খাদ্য দফতরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা আবার কখনো অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা ব্যক্তি হিসেবে পরিচয় দিত। তার মিষ্টি কথায় বিশ্বাস করে অনেকেই সর্বস্বান্ত হয়েছেন।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ সম্প্রতি এই প্রতারক চক্রের উপর নজরদারি শুরু করে। অবশেষে, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে সাইদুর রহমান ওরফে বিপ্লবকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। তবে এই চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি সেলিম মালিক।
সংবাদ সম্মেলনে ওসি সেলিম মালিক সাধারণ মানুষকে এ ধরনের প্রতারক চক্রের ফাঁদে পা না দেওয়ার জন্য সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকারি চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো প্রকার মধ্যস্থতাকারী বা আর্থিক লেনদেনের সুযোগ নেই। যদি কেউ এমন প্রস্তাব দেয়, তবে বুঝতে হবে সেখানে প্রতারণার সম্ভাবনা রয়েছে। যেকোনো সন্দেহজনক ব্যক্তির বিষয়ে দ্রুত পুলিশকে জানানোর জন্য অনুরোধ করছি।
পুলিশ আশা করছে, সাইদুর রহমানের গ্রেফতারের মাধ্যমে এই প্রতারক চক্রের মূলোৎপাটন করা সম্ভব হবে এবং ভুক্তভোগীরা ন্যায়বিচার পাবেন। বর্তমানে গ্রেফতারকৃত বিপ্লবকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং তার সহযোগীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
কেকে/এএম