আজ পঁচিশে বৈশাখ, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মজয়ন্তী। স্মৃতিবিজড়িত কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে নানা আয়োজনে উদযাপিত হবে দিনটি। পড়ন্ত বৈশাখের উৎসবে কুঠিবাড়ি সেজেছে অনন্য সাজে।
সেইসঙ্গে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠান ও গ্রামীণ মেলা বাড়িয়েছে বাড়তি আকর্ষণ। বাহারি পণ্য দিয়ে দোকান সাজিয়েছেন দোকানিরা। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতির সঙ্গে মিশে আছে শিলাইদহ কুঠিবাড়ি।
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় পদ্মা নদী ঘেঁষে এ ঐতিহাসিক স্থানটি স্বগর্বে দাঁড়িয়ে আছে। জেলা শহর থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে এটি অবস্থিত। স্থানটি প্রায় ১১ একর জায়গার ওপর দাঁড়িয়ে। গ্রামীণ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত এ পর্যটনস্থল দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা হাজারো দর্শনার্থীর আগমনে দিনভর মুখর থাকে। পদ্মাতীরের ছায়াশীতল নিরিবিলি পরিবেশের কারণেই বিশ্বকবি বারবার এখানে ফিরে এসেছেন।
এখানে বসেই কবি রচনা করেছেন কালজয়ী সব কাব্যগ্রন্থ, ছোট গল্প, নাটক ও উপন্যাস। যে গীতাঞ্জলি কাব্য রচনা করে কবি নোবেল জয় করেছিলেন, সেই কাব্যের অনেকটাই তিনি রচনা করেছিলেন শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে বসে। বহু প্রতিভার অধিকারী এ কবি তার আপন আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছিলেন বিশ্ব দরবারে। পেয়েছিলেন বিশ্বকবির সম্মান। প্রতিবারই কবির স্মৃতিধন্য কুষ্টিয়ার শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে বিশেষ আয়োজন থাকে।
এবারও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। জন্মজয়ন্তী উদ্যাপনের প্রস্তুতির সব কর্মকাণ্ড তদারকি করেছেন কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের প্রস্তুতি চলমান রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
জানা গেছে, কুঠিবাড়িতে ২৫ শে বৈশাখ কবির জন্মজয়ন্তী বিশেষ আয়োজনে পালন করা হয়। এদিন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন ও দর্শনার্থীদের পদভারে মুখরিত থাকে কুঠিবাড়ির আঙ্গিনা। এবছর কুঠিবাড়ি চত্বরে স্থায়ীভাবে নির্মিত মঞ্চে কবিগুরুর গান, কবিতাও শিল্প-সাহিত্যের আলোচনায় মুগ্ধতা ছড়াবেন সাহিত্য সমালোচক ও দেশবিদেশের বরেণ্য রবীন্দ্র শিল্পীরা। রবীন্দ্র সাহিত্য ও সুরের মূর্ছনায় সাহিত্য ও ব্যক্তি জীবনের অনুপ্রেরণা পাবেন এমন ধারণা ভক্ত অনুরাগীদের।
শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ির কাস্টোডিয়ান আল-আমিন জানান, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এবং কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন উদ্যোগে কুঠিবাড়িতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ উৎসব। শিলাইদহ কুঠিবাড়ির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ সব কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। আয়োজন সফল করতে কোনো ঘাটতি নেই।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ জানান, অতিথি ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, বিরূপ আবহাওয়া নিয়ে শঙ্কা থাকলে আয়োজনে নেই কোন গড়িমসি। সবার সহযোগিতায় নির্বিঘ্নে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন করতে পারব।
কেকে/এআর