উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের প্রেস সেক্রেটারি মাহফুজ আলমকে ঘিরে টেন্ডার কমিশন সংক্রান্ত একটি কথোপকথন সামাজিকমাধ্যমে ফাঁস হওয়ার পর নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। অডিও ফাঁস করেছেন সাংবাদিক জাওয়াদ নির্ঝর। ফাঁস হওয়া ওই অডিওতে তাকে টেন্ডারের কমিশন নিয়ে এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে শোনা যায়।
বুধবার (২০ আগস্ট) রাতে জাওয়াদ নির্ঝর তার ফেসবুকে অডিওটি ফাঁস করেন। মুহূর্তেই তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ফেসবুক পোস্টে জাওয়াদ নির্ঝর বলেন, ‘মাহফুজ আলমের (আসিফ মাহমুদের প্রেস সেক্রেটারি) সিডিআর মানে কললিস্ট নিয়ে কাজ করছিলাম। সে দুবাইয়ে রিয়েল স্টেট এবং বিনিয়োগ কোম্পানিতে ফোন দেয়। আগেও এর ধান্দাবাজির অন্য অডিও ফাঁস হয়েছে।’
মাহফুজ আলমের এই অডিও নিয়ে তদন্ত করার দাবি জানিয়েছেন জাওয়াদ নির্ঝর।
ফাঁস হওয়া অডিওতে মাহফুজ আলমকে এক ব্যক্তির সঙ্গে টেন্ডার নিয়ে কথা বলতে শোনা যায়। কথার একপর্যায়ে ফোনের অপরপ্রান্তে থাকা ব্যক্তি ৩ পার্সেন্ট কমিশন দেওয়ার কথা বলেন।
তখন মাহফুজ আলম বলেন, ‘কাজ কনফার্ম করে দিলে ৩ পার্সেন্ট, এটা হইলো। এখন কিছু কাজ চলতেছে, যেগুলো আমি সিক্স পার্সেন্টে করেছি আপনি খোঁজ নেন। ওয়ান পার্সেন্ট মিডিলম্যান এবং ফাইভ পার্সেন্ট মিনিস্ট্রির জন্য। এগুলো ফিক্সড থাকে। ’
কাজের প্রসেস সম্পর্কে তাকে বলতে শোনা যায়, আমি যেটা করছি তা হলো অ্যাডভাইজর মহোদয় সাইন করবেন, ফিফটি পার্সেন্ট দিয়ে দিবে; সিসিজিবি পাস হবে, বাকি ফিফটি পার্সেন্ট দিয়ে দিবে। তাকে আরো বলতে শোনা যায়, আপনি ওদেরকে বলেন এখন সবগুলা হচ্ছে এই ফরমেটে।
কথা ঠিক না থাকলে ফাইল আটকে দেওয়ারও হুমকি দেন মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, ‘আমি ফাইল আটকে রাখব এখন। কমিটমেন্ট ঠিক না থাকলে তো এখন দেখছেন। কথা দুইরকম হইলে কিন্তু সমস্যা হয় বুঝছেন?...আমি আজকে ইজিপি করাব, করায়ে কিন্তু আমি নোয়া (চুক্তিপত্র) ঝুলিয়ে রাখব। আপনি কনফার্মেশন দেবেন এরপরে নোয়া। আর দুইটা ১.৫, দুইটা ১ পার্সেন্ট এগুলো কিন্তু হবে না ভাই; ১.৫ মানে ১.৫, দ্যাটস ইট। ’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই অডিও ফাঁস নিয়ে চলছে আলোচনা। অনেকেই ঘটনাটি নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। কেউ কেউ বলছেন, বিষয়টি সত্য হলে এটি প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির প্রতি বড় চ্যালেঞ্জ। একজন মন্তব্যে লিখেছেন, ‘এটা যদি সত্যি হয়, তবে এটা শুধু ব্যক্তি মাহফুজের না, পুরো প্রশাসনিক ব্যবস্থার দুর্নীতির প্রতিফলন। ’
কেকে/এআর