চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: তৌহিদুল আনোয়ার ঘটনার বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কাকারা ইউনিয়নের শাহওমরাবাদ স্কুলপাড়া এলাকার মোহাম্মদ কালু ও তার ভাতিজা আহমদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। বুধবার সকালের দিকে চাচা মোহাম্মদ কালুর সঙ্গে কথা কাটাকাটি ও তর্কে জড়িয়ে পড়েন ভাতিজা আলী আহমদ। তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে ভাতিজা আলী আহমদ প্রকাশ্যে দিবালোকে বৃদ্ধ কালুকে লাথি মেরে দিলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে বৃদ্ধ কালুর মৃত্যুর খবর পেয়ে স্থানীয় গ্রামবাসী উত্তেজিত হয়ে অভিযুক্ত ভাতিজা আলী আহমদ (৫৭) এর বাড়ি ঘেরাও করে রাখে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময় জনতা গণধোলাই দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে। পুলিশ নিহতের প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, নিহত পরিবারের বরাত দিয়ে জানা গেছে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মোহাম্মদ কালু তার ছেলেদের নিয়ে বিরোধীয় জমিতে চাষ করতে যান। ঠিক তখনই ভাতিজা আলী আহমদ ঘটনাস্থলে এসে বৃদ্ধ কালুর বুকে দু’বার লাথি মারেন। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বৃদ্ধ মোহাম্মদ কালুকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি আরো বলেন, খবর পেয়ে চকরিয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার অভিজিৎ দাসসহ বিপুলসংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যান। কিন্তু পুলিশ ভ্যান শাহ উমরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয় এলাকায় পৌঁছানোর আগেই এলাকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। স্থানীয় মানুষের সহায়তায় আলী আহমদকে আটক করা হয়। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিহতের পরিবার পক্ষথেকে অভিযোগ দেয়া হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিহত বৃদ্ধ কালুর ছেলে ছরওয়ার আলম জানান, তাদের তিন কানি জমি (১২০শতক) গত ২০ বছর ধরে জালিয়াতির মাধ্যমে ভোগ করে আসছিল তাদের জেঠাতো ভাইয়ের ছেলে আলী আহমদ। সম্প্রতি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এক কানি (৪০ শতক) জমির ডিগ্রি নিজেদের অনুকূলে আসে। এরপরও আদালতের রায় অনুযায়ী জমি বুঝিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানায় আলী আহমদ। এ নিয়ে একাধিকবার সালিশি বৈঠকের প্রস্তাব দিলেও তাতে রাজি হয়নি।
তিনি আরও জানান, বুধবার সকালে তাঁদের বাবা জমিতে চাষ করতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। কিন্তু জমিতে পৌঁছানোর পরে আলী আহমদ দৌড়ে এসে তর্কে জড়িয়ে বৃদ্ধ কালুর বুকে লাথি মারলে তিনি মাটিতে পড়ে যান এবং ঘটনাস্থলে মৃত্যুবরণ করেন।