কক্সবাজারের উখিয়ায় মাত্র তিন ঘণ্টার সমন্বিত, দ্রুত ও সাহসী অভিযানে দুই অপহৃত যুবককে জীবিত উদ্ধার করেছে উখিয়া থানা পুলিশ।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে জালিয়াপালং ইউনিয়নের ছেপটখালী এলাকায় চিকিৎসার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন সাইফুল ইসলাম (৩০) ও ফরিদুল আলম (৪২)। পথের ডালার মুখ এলাকায় সিএনজি গাড়ি থামিয়ে তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে গহীন পাহাড়ি জঙ্গলে নিয়ে যায় ছয়–সাতজনের একটি সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্র। পরে দুই পরিবারের কাছে ৬ লাখ টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
হঠাৎ পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠায় পরিবার দ্রুত জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯–এ ফোন করে সাহায্য চায়। কল পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তৎপর হন উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল হক। তার নির্দেশনায় ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ দূজয় সরকার ও এএসআই দিদারের নেতৃত্বে একটি চৌকস পুলিশ টিম তাৎক্ষণিকভাবে অভিযানে নামে।
দুর্গম পাহাড়, অন্ধকার জঙ্গল এবং অপহরণকারীদের অবস্থান বুঝে পৌঁছানো—সবকিছুর বাধা অতিক্রম করে পুলিশ ধাপে ধাপে অভিযানের বিস্তার ঘটায়। মাত্র তিন ঘণ্টার টানা অনুসন্ধান ও কৌশলগত অগ্রগতির পর রাত সাড়ে ৭টার দিকে ছেপটখালী ঢলার মুখ এলাকার গভীর জঙ্গল থেকে দুই ভিকটিমকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। এ সময় অপহরণকারীরা পালিয়ে যায়, তবে তাদের শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
উদ্ধারের পর সাইফুল ইসলাম জানান, চিকিৎসার উদ্দেশ্যে বের হয়ে এমন ঘটনার মুখে পড়বেন তা কেউ কল্পনা করেননি। অপহরণকারীরা জঙ্গলের ভেতরে নিয়ে গিয়ে তাদের মারধর করে এবং মুক্তিপণ না দিলে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি জানতে পারার পর দ্রুত ৯৯৯–এ যোগাযোগ করায় তারা শেষ পর্যন্ত বাঁচতে পেরেছেন।
ওসি জিয়াউল হক বলেন, অপহরণকারীরা অভিযান টের পেয়ে পালিয়ে গেছে। তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। গ্রেফতারের জন্য বিশেষ অভিযান চলছে। এ ঘটনায় একটি অপহরণ মামলা প্রক্রিয়াধীন।
উখিয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে আইন–শৃঙ্খলার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পুলিশের এমন দ্রুত পদক্ষেপ স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক স্বস্তি ও আস্থা তৈরি করেছে। তিন ঘণ্টার এই অভিযানকে এলাকাবাসী দৃষ্টান্তমূলক ও প্রশংসনীয় হিসেবে মূল্যায়ন করছে।
কেকে/এআর