ভুলতা ফ্লাইওভার, শীতলক্ষ্যা সেতু ও থানা ভবনে ফাটল, সরকারিভাবে ভেঙে ফেলার ভয়ে তথ্য গোপন বাসিন্দাদের।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) উপজেলা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আইমিন সুলতানা এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। তিনি জানান, জলাশয় ভরাট, অপরিকল্পিত আবাসন সম্প্রসারণ, বিল্ডিং কোড অমান্য এবং সতর্কতা ব্যবস্থার অভাব—এসব মিলেই বিপদের মাত্রা বাড়ছে।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পের ক্ষতচিহ্ন প্রকাশ পেতে শুরু করেছে। সরকারি বিভিন্ন স্থাপনা, সেতু ও পাকা ভবনে ফাটল দেখা গেলেও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙে ফেলার আশঙ্কায় অনেক বাসিন্দা ফাটলের তথ্য গোপন করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
গত দুই দিনের কয়েক দফা ভূমিকম্পে ভুলতা ফ্লাইওভারের এপ্রোচ অংশ, মুড়াপাড়া–কায়েতপাড়া শীতলক্ষ্যা সেতুর স্লাব, রূপগঞ্জ থানা ভবন এবং বেশ কয়েকটি কারখানা ভবনে ফাটল দেখা গেছে। আবাসিক এলাকাগুলোর পুরাতন অর্ধশতাধিক ভবনেও ক্ষতির চিহ্ন রয়েছে।
গত শুক্রবারের ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল রূপগঞ্জ সংলগ্ন নরসিংদীর ঘোড়াশাল। তীব্র কম্পনে ভুলতা ফ্লাইওভারের গুরুত্বপূর্ণ অংশে ফাটল সৃষ্টি হয়। ম্যাক্স সোয়েটার্স কারখানায় ফাটল দেখা দিলে শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, তবে পরিদর্শনের পর ভবনটি ঝুঁকিমুক্ত ঘোষণা করা হয়।
স্থানীয়রা বলছেন, গত তিন দশকে রূপগঞ্জে ব্যাপক হারে জলাশয় ভরাট হওয়ায় খাল, বিল ও পুকুর বালির নিচে বিলীন হয়ে গেছে। এতে পরিবেশগত ভারসাম্য নষ্ট হয়ে টেকটোনিক চাপ বাড়ছে, যা ভূমিকম্প ঝুঁকিকে আরও বৃদ্ধি করছে।
রূপগঞ্জ থানার ওসি তরিকুল ইসলাম জানান, ১৯৮০-এর দশকে নির্মিত থানা ভবনটি এখন ভূমিকম্প সহনীয় নয়। সাম্প্রতিক কম্পনে ভবনের পিলারে ফাটল দেখা গেছে, ফলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
স্থানীয়রা আরও অভিযোগ করেছেন, গাজী সেতুতেও ফাটল দেখা দিয়েছিল, কিন্তু উপজেলা প্রশাসনের কেউ এখনো পরিদর্শনে যাননি।
এলজিইডির প্রকৌশলী আকতার হোসেন জানান, সেতুগুলোতে যেসব ফাটল দেখা গেছে, সেগুলো ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ নয় বলে তিনি মনে করেন। তবে কোথাও গুরুতর ক্ষতি হলে তা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করে, রূপগঞ্জে ভূমিকম্প মোকাবেলায় জরুরি কোনো প্রস্তুতি নেই। বর্তমান গতিতে জলাশয় ভরাট ও অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ চলতে থাকলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের দুর্যোগের আশঙ্কা আরও তীব্র হবে।
কেকে/লআ