বীভৎস স্বপ্নটা ভীষণরকম ভাবাচ্ছে রিতাকে। আজগুবি মনে হচ্ছিল স্বপ্নটাকে। ঘেমে গেছে রিতা। বিছানা ছাড়তে ইচ্ছে করছিল না। তবুও বিছানা ছেড়ে ওঠে গিয়ে মুখে একটু পানির ছিটা দিয়ে আবার শুয়ে পড়বে, নাকি বসে বসে বইটা শেষ করবে, এরকম দোটানায় রিতা শুয়ে পড়ার সিদ্ধান্তই নিল। বিছানায় শুয়ে টেবিল ফ্যানটার স্পিড বাড়িয়ে দিল। বাতাসে শীতল পরশ খেলে গেল মুখজুড়ে। ফ্যানটা ডানে-বামে ঘুরে ঘুরে বাতাস ছড়াচ্ছে। শরীরটাও জুড়াতে লাগলো। কিন্তু স্বপ্নের ভাবনাটা রয়েই গেল। স্বপ্নে দেখেছিল ঘরে আগুন লাগিয়ে দিয়ে পালিয়ে গেছে একটা ছেলে। ছেলেটা চেনা চেনা লাগলো।
সম্ভবত এই ছেলেটাই কলেজে যাওয়ার পথে মাঝে মাঝে রিতার পিছু নিতো। একটু দূরত্ব রেখেই হাঁটতো ছেলেটা। কোনদিন কথা হয়নি। শুনেছিল মাস্তান ধরণের ছেলে। একদিন মুখোমুখি হলে মাথা নিচু করে পাশ কেটে গেল। কিন্তু সে ঘরে আগুন লাগাতে যাবে কেন। ওর সাথে তো কোনো ভাল-মন্দ সম্পর্ক গড়ে ওঠেইনি কোনোদিন। সেও তো আঠারো বছর আগের কথা। তবে কী রিতার ভেতর ভেতর একটা ভয় রয়ে গিয়েছিল! আজকের স্বপ্নে তার প্রতিফলন ঘটলো!
স্বপ্নের যে বীভৎস দিকটা সেটা হলো- ওর কাজের মেয়েটা বললো, আন্টি আমি আগুনে শুয়ে পড়ি আপনি আমার শরীর মাড়িয়ে বাইরে চলে যান। রিতা তাই করেছিল। মেয়েটা আগুনে পুড়ে ভস্ম হয়ে গেল। কেনো রিতা স্বার্থপরের মতো এ কাজটা করল। এবার আবার ঘামতে লাগল রিতা। মেয়েটা কী আত্মহত্যা করল, নাকি মুনিবকে বাঁচাতে পেরে শান্তিতে ঘুমিয়ে পড়ল। ও কী গায়ে আগুন নিয়ে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করেছিল? স্বপ্নের মধ্যে তো কোন চিৎকার চেচামেচির ঘটনা ঘটেনি। আগুনেও কোনো উত্তাপ ছিল না। শুধু আগুনের শিখা চারিদিকে দাউ দাউ করে জ্বলেছে, সে আগুনে একটা বাইশ বছরের নারী শুয়ে গেল আর তার শরীরের উপর দিয়ে রিতা হেঁটে ঘর থেকে বেড়িয়ে এলো। এই তো মূল স্বপ্নটা। ওর স্বপ্নের মধ্যে কোনো উত্তেজনাই ছিল না। একটা খুবই সাধারণ সাদামাটা ঘটনার মতো। কিন্তু স্বপ্নটা ভেঙে যাওয়া পর রিতার অস্বস্তি লাগার কারণ শুরু হলো। মেয়েটা রিতাকে এতো ভালোবাসে যে জীবন উৎসর্গ করে দিতে প্রস্তুত। এভাবে কেউ জীবন দেয় অন্যের জন্য। কি হতে পারে এর সার-অর্থ! রিতাকে ধর্মীয় বিশ্লেষণেই যেতে হবে।
সকালের নাস্তা খেয়ে আবার বইটা পড়া শুরু করে রিতা। অদ্ভুৎ অদ্ভুত সব তথ্যে ঠাসা বইটা। বইটার নাম হচ্ছে, ‘গ্রিক-রোমান সভ্যতায় আত্মহত্যা’। অ্যারিস্টেটল মনে করতেন আত্মহত্যা সম্পূর্ণ নিন্দনীয়, নিজের ও রাষ্ট্রের প্রতি অবিচার। আর রোমানরা ছিলেন আত্মহত্যার সবচেয় বড় সমর্থক। আসলেই মৃত্যুতেই সব অসুখ ও কষ্টের সমাপ্তি। তাই বুঝি স্বপ্নে দেখা সেই কাজের মেয়েটা অসুখ বা কষ্ট থেকে মুক্তি খুঁজছিল, না হলে এভাবে আগুনে শুয়ে পড়বে কেন? নিজের জীবনকে বিসর্জন দেবেন কেন? ফ্রন্সিস বেকন তাঁর মৃত্যু বিষয়ক প্রবন্ধে আত্মহত্যাকে বিশ্লেষণ করেছেন নিন্দে না করেই। শেকসপিয়ারের নাটকগুলিতে বায়ন্নটি আত্মহত্যার ঘটনা রয়েছে। এভাবেই রিতা ভ্রু কুঁচকে-কুঁচকেই বইটা পড়ে যাচ্ছিল। নাস্তা শেষে ডাইনিং টেবিলে বসে বসেই পড়ছিল। ওদিকে যে ওর স্বামী অফিস যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে সে-দিকে কোনো খেয়ালই নেই রিতার। সে মনোযোগ দিয়ে পড়েই যাচ্ছিল। হঠাৎ শুনতে পেলো ওর স্বামী বলছে, ইদানিং তুমি তো দেখছি বইয়ের পোকা হয়ে গেলে। টেবিল গোছাতে হবে না!
এবার রিতার পালা- রিতা শুধু বললো, কে করে পরিষ্কার? তুমি করো না আমি! জীবনটাতো পার করে দিলাম কোনা কাজের বুয়া ছাড়াই। এ বাড়ির বুয়া তো আমি নিজেই। শোনো বইটা পড়ে আমার যেটা মনে হয়েছে, তুমি যে ঘরগুলো তৈরি করছো মেয়েদের হোস্টেল করবে বলে, সেখানে কোনো ফ্যানের হুক থাকবে না। অর্থাৎ কোন সিলিং ফ্যান লাগবে না। আমি ভাই কোনো ধরনের আত্মহত্যার সুযোগ রাখব না। কে কোথায় প্রেম করবে, ছ্যাঁকা খেয়ে শালা গলায় ওড়না প্যাঁচিয়ে ঝুলবে এসে আমার বাড়িতে, তা হবে না। পুলিশ-টুলিশ সামলাতে পারব না। মনে রেখো কিন্তু।
ওর হাসবেন্ড মনোযোগ দিয়ে শুনছিল কথাগুলো এবং তার কথাগুলো পছন্দ হলো। একটু গর্বীতও হলো। এই না হলে সে আমার বউ। মাস্টার্স করা বউ। মনে মনে সুন্দর একটা ভাবনা নিয়ে অফিসের দিকে চলে গেলো। ভাবলো আসলে কখনোই বই পড়া বৃথা যায় না। নিজেরও বই পড়তে ইচ্ছে করে। কিন্তু অফিস, বাজার-সদাই, কনস্ট্রাকশনের কাজ, রড-সিমেন্ট-ইটের হিসাব রাখতে রাখতে পড়ার ভাবনাটা একবারেই হারিয়ে গেছে।
রিতা ভাবে যারা আত্মহত্যা করে তারা কী নিজের কাছ থেকে বাঁচতে চায়? আর যারা পারে না তারা অনিচ্ছা সত্ত্বেও নিজের সঙ্গে নিজেকে ঘৃণা করে বেঁচে থাকে! জীবন অনেক জটিল। তবুও মানুষ জটিলের সাথে আপস করে। রীতা আজকে দার্শনিকদের মতো ভাবতে শুরু করেছে। না এখন এইসব আত্মহত্যার ভাবনা বাদ দিয়ে রান্নার প্রস্তুুতি নিতে হবে। এমন সময় কলিং বেল বেজে ওঠল। দরজা খোলাই ছিল। এগিয়ে গেল রিতা। দুটি মেয়ে দাঁড়িয়ে দরজার পাশে। একজন নমস্কারের ভঙ্গিতে দুটি হাত জোড় করে বলল, আমরা বিজ্ঞাপন দেখে এসেছি। ঘর ভাড়া হবে শুনলাম।
রিতা ওদের ঘরে নিয়ে বসায়। ওদের মধ্যে একজন বলে ওঠল, আমি শতাব্দী রায়, ভূগোলে অনার্সে ভর্তি হয়েছি, আর ও হলো নিধি তালুকদার এবার বাংলায় অনার্স নিয়ে ভর্তি হয়েছে। আমরা কলেজ জীবনের বন্ধু। বিজ্ঞাপনে লিখা আছে শুধু মেয়েদের জন্য ভাসা ভাড়া দেবেন, তাই এসেছি।রিতা মনোযোগ দিয়ে ওদের কথা শুনছিল। ওদের দেখলে মনে হয় এখনো স্কুলে পড়ে; পিচ্চি মেয়ে। রিতার নিজের কলেজ জীবনের কথা মনে পড়ল। সে মনে মনে হাসলো। তখনো নিশ্চয় আমাকে দেখে বড়রা এমনটাই ভাবতো, পিচ্চি মেয়ে!
চা খাবে কিনা জানতে চাইলো রিতা, দুজনেই একসাথে ‘না’ বলে ওঠলো। কিছু কথা বলার পর দুজনকেই প্রথম ভাড়াটিয়া হিসেবে ভালো লাগলো রিতার। ওরা দুজনেই মফস্বল শহর থেকে এসেছে। এই শহরে আত্মীয়ের বাসায় এসে ওঠেছে। রিতা ওদের নিয়ে নতুন নির্মিত ঘর গুলো ঘুরে দেখালো। প্রতিটি রুমের সাথে এটাচ্ট্ বাথ রয়েছে। তবে আগামী মাসের পনেরো তারিখ থেকে থাকা যাবে।
আসলে রঙ করা সহ পুরো তৈরি হতে গেলে এর পরের মাসের এক তারিখই হবে উত্তম সময়। ভাড়া এবং অন্যান্য সুবিধাদি শুনে ওরা আরেকদিন এসে এডভান্স দিয়ে যাবে বলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিল।রিতা ওদেরকে বসতে অনুরোধ করল এবং আন্তরিকতা দিয়ে অনেক কাছের করে নিল। বললো, আমি তোমাদের ‘তুমি’ করেই বলছি। আর শোন তোমাদের বন্ধবীদের বা চেনা-জানা অন্যান্য মেয়েদেরকেও জানাবে আমাদের হোস্টেলের কথা। এখানে মোট চল্লিশজন মেয়ে থাকতে পারবে। আমিই এই হোস্টেলের পুরো নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবো। এই ঘরগুলো করতে গিয়ে আমি আমার জীবনে ঘটে যাওয়া বাধা-বিপত্তি ও প্রতিবন্ধকতাকে কন্সিডারে নিয়েছি। আর শোনো, এই রুমগুলোতে কোনো সিলিং ফ্যান লাগানোর ব্যবস্থা রাখব না। তবে টেবিল ফ্যান ব্যবহার করা যাবে। প্রতিটি রুমেই সাধ্যমতো ফার্নিচার থাকবে। অর্থাৎ চেয়ার টেবিল, খাট, আলনা, শোকেস ইত্যাদি।
দুজনেই চুপ করে কথা শুনছিল। শতাব্দীই বললো, আমার কোনো আপত্তি নেই, তবে সিলিং ফ্যানের ব্যাপারটা বুঝলাম না। রিতা জানালো প্রেমে ব্যর্থ হয়ে কেউ গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করতে পারে সিলিংয়ের হুকে।
এবার নিধি বলে ওঠলো, আত্মহত্যা শুধু মাত্র দুঃখ থেকে হয় না, এটা একটি মানসিক, শারীরিক, সামাজিক অসুখ! কোনো উদ্দিষ্ট বস্তু বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রকাশিত হতে না পারলে তা নিজের দিকে ঘুরে আসে, আর এভাবেই আত্মহত্যার প্রবণতা জাগে। আসলে হতাশা থেকেও নয়, অনেক ক্ষেত্রে আত্মহত্যা হলো জীবনের অনুশাসনকে অতিক্রম করে যাওয়ার সাহসও।
রিতা নিধির প্রশংসা করতে সময় নিল না বলল, বাহ্ বেশ ভালো বলেছ তো। তুমি বাংলায় কেন পড়বে তোমার তো দর্শন নিয়ে পড়া উচিত। জীবন সম্পর্কে তোমার যে ধারণা- তা অনেক উঁচু মানের। তুমি দর্শনে ভালো করতে। একটু লজ্জাই পেল নিধি। নিধির ফর্সমুখটা গোলাপি রঙ ধারন করলো। মাথা নিচু করেই বললো, না মানে অবসর পেলেই বই-টই পড়ি। আসলে দর্শনের চেয়ে আমার সাইকোলোজি পড়তে ভালো লাগে। রিতা প্রতি-উত্তরে জানালো, বই পড়াটা খুবই ভালো অভ্যাস। আজকালকার ছেলে-মেয়েরা সারাদিন শুধুু মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যাস্ত থাকে। এটা এক ধরনের এডিকশন। বলা যায় বিহেভিয়ারাল এডিকশন। মনে মনে ভাবছে কি আবোল-তাবোল বকছি। আর শোনো, তোমরা সময় পেলে এসো। গল্প করা যাবে। তোমাদের দুজনকেই আমার ভালো লেগেছে।
ওরা চলে গেলে রান্না ও অন্যান্য কাজ সারতে লাগলো রিতা। এখন আর বইটা পড়া হবে না। যদিও মাথার ভেতর বইটা গেঁথে আছে।
সন্ধ্যা হবার আগেই অবসর পেয়ে গেল রিতা। বইটা নিয়ে বসলো বেড রুমে। লাইট জ¦ালালো। না জ¦ালালেও পারতো। তবুও এই অতিরিক্ত আলো স্পষ্ট করে তুলছে অক্ষরগুলোকে। এই চ্যাপটারটা জ্যামিতিবিদ পিথাগোরাসকে নিয়ে। কিন্তু যতই পড়ছে আর জানছে যে, পিথাগোরাস ছিলেন একজন আয়োনিক গ্রিক দার্শনিক। জন্মস্থান ছেড়ে দিয়ে ইতালির দক্ষিণাঞ্চলে একটি গ্রিক কলোনি ক্রোতোনে চলে আসেন। তাঁকে ঘিরে তৈরি হয় একটি আধ্যাত্মিক-দার্শনিক সম্প্রদায়। তাঁর অনেক পরীক্ষিত অনুসারী জুটে যায়, সম্প্রদায় গড়ে ওঠে। রিতা বই পড়ে আর অবাক হয়ে ভাবে ও যদি এই হোস্টেলের মেয়েদের নিয়ে গড়ে তুলতে পারতো একটি মানবিক সম্প্রদায়, যাদের কেনো ধর্ম থাকেবে না, যারা শুধু মানুষের জন্য নিবেদিত হবে। যাদের ধর্ম হবে মানবতা।
রিতা বইটা পড়ে যেতে থাকে- পিথাগোরাসের তত্ত্ব সমাজকে প্রভাবিত করা শুরু করলে শাসক গোষ্ঠী ক্ষেপে যায়, পিথাগোরাসকে ওরা শত্রু ভাবতে থাকে এবং একদিন তাঁর সভাস্থলগুলো পুড়িয়ে দেয়। তাঁকে বাধ্য করে ক্রোতোন ছেড়ে চলে যেতে। কপালে ভাঁজ পড়ে রিতার। ভাবে রিতা, তবে কি এই ধর্ম না মানা সম্প্রদায় গড়ে ওঠলে কী বর্তমান সমাজের মানুষেরা তার হোস্টেল পুড়িয়ে দেবে? স্বপ্নে কী সে এই ঘটনাটার ইঙ্গিত পেয়েছে? অবচেতন মনে কি রিতা বইয়ের শেষাংশটা পড়ে নিয়েছিল? পিথাগোরাসের তত্ত্বটা রিতার মনে ঘুর ঘুর করছে যে, ‘আত্মা অবিনশ্বর, বহুবার এর পুনর্জন্ম হয়’।
পিথাগোরাসের মৃত্যু নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দেওয়া আছে বইটিতে। তবে যে তথ্যটা সবচেয়ে বেশি বিচলিত করলো রিতাকে সেটা হলোÑ পিথাগোরাসের শত্রুরা যখন আস্তানাটি পুড়িয়ে দিচ্ছিল. তখন তার শিষ্যরা আগুনের মধ্যে শুয়ে পড়ে একটি সেতুর মতো তৈরি করেছিল, যেন পিথাগোরাস তাদের দেহের ওপর দিয়ে হেঁটে পালিয়ে যেতে পারে। পিথাগোরাস ঠিকই পালাতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু তাঁর প্রিয় শিষ্যদের মৃত্যুতে এতটাই হতাশ এবং বিমর্ষ হয়ে পড়েন যে তিনি আত্মহত্যা করেন।
রিইউন করার মতো রিতা এবার আজ রাতের দেখা স্বপ্নটা পুনরায় মিলিয়ে নিলো। হ্যাঁ ঠিক এমনটাই; স্বপ্নে দেখেছে যে কাজের মেয়েটার দেহের উপড় দিয়ে রিতা স্বপ্নে পালাতে পেরেছিল, আগুন থেকে নিজেক রক্ষা করতে পেরেছিল। এটা কী তবে প্রতীকী স্বপ্ন। রিতা পিথাগোরাসের জন্য যতটা না কষ্ট পেয়েছিল তার চেয়ে বেশি রাগ হয়েছিল সেই শাসক শ্রেণির উপর। যারা আগুন দিয়ে ছিল। এই রাগই রিতার মধ্যে জন্ম দিল দৃঢ়তার।
রিতার জেদ বেড়ে গেল- যে করেই হোক হোস্টেলের মেয়েদের নিয়ে সে একটা সংগঠন গড়ে তুলবে যাদের মধ্যে মানবিক ধর্ম ছাড়া আর কোনো ধর্ম থাকবে না। একদল হোস্টেল ছেড়ে চলে গেলে অন্য যে নতুন দল আসবে রিতা সবার মধ্যেই এই মানব ধর্ম প্রচার করবে। এভাবে ওরা ছিটিয়ে পড়বে দেশের আনাচে কানাচে। এক দিন মানুষের ধর্ম হবে মানব ধর্ম।
রিতা আরো ভাবলো যে তাকে এখন থেকে প্রাণী নিয়েও ভাবতে হবে। হতে হবে প্রাণময়। মানবিক আর প্রাণময় না হতে পারলে একজন মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ব লোপ পায়, সে আর মানুষ থাকে না।
বই পড়তে পড়তে রিতা ভুলেই গেল যে এখনো রাতের জন্য ভাত রান্না করা হয়নি।
কেকে/এমএ