পাবনার আটঘরিয়া উপজেলায় দুই শিক্ষিকার অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন খিদিরপুর শহীদ আব্দুল খালেক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১০ নভেম্বর) সকালে বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে এ বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করা হয়।
বিক্ষোভ মিছিলটি খিদিরপুর বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এসে শেষ হয়। এ সময় টায়ার জালিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, মোবাইল ফোন রাখার অপরাধে দুই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী জেসমিন আক্তার জেমিকে কমনরুমে আটকে রেখে বেধড়ক মারপিট ও বেত্রাঘাত করার অভিযোগ ওঠেছে। এ ঘটনায় অপমান সহ্য করতে না পেরে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে জেমি। রোববার (৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে আটটার সময় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় জেমি।
বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ছাত্র, অভিভাবক ও সচেতন মহলের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
উপজেলার মাজপাড়া ইউনিয়নের হাতিগাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের মেয়ে খিদিরপুর শহীদ আব্দুল খালেক উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী জেসমিন আক্তার জেমি। গত ২ নভেম্বর একটি বাটন মোবাইল ফোন নিয়ে ক্লাসে ঢুকেন সে। এ সময় শিক্ষিকা মিনোয়ারা খাতুন শিক্ষার্থী জেমিকে গালিগালাজ ও অপমান করেন।
পরে খন্ডকালীন শিক্ষিকা সালমা খাতুন শিক্ষার্থী জেমিকে কমনরুমে নিয়ে দরজা বন্ধ করে বেত দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত ও জখম করে এবং অপমান-অপদস্ত করে স্কুল থেকে বের করে দেয়।
মারধর ও অপমান সহ্য করতে না পেরে জেমি ঘটনার দিন বিকালে দাদির বাড়িতে গিয়ে ঘাস মারার বিষপান করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরিবার বিষয়টি জানতে পেরে প্রথমে জেমিকে আটঘরিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আরও বেগতিক হলে চার দিন পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার সকাল সাড়ে আটটার সময় জেমি মারা যায়।
জেমির পিতা জাহাঙ্গীর হোসেন আহাজারি করে বলেন, ‘মিনোয়ারা খাতুন ও সালমা খাতুন স্কুলের রুমের মধ্যে আটকে রেখে বেত দিয়ে আমার মেয়ের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মেরে রক্তাক্ত করেছে। আমি ওই দুই শিক্ষিকার ফাঁসি চাই।’
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে মিনোয়ারা খাতুন ও সালমা খাতুনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
আটঘরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুজ্জামান সরকার বলেন, ‘অভিযোগ পাইনি। পেলে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কেকে/এমএ