ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, রাজনৈতিক দলগুলোর তৎপরতা তত বাড়ছে। বিশেষ করে ঘর গোছানোর পাশাপাশি চলছে জোটের নানা হিসেব নিকেশ। বিএনপি তার সমমনাদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই জোট গঠন করেছে। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীসহ ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোও বৃহত্তর ইসলামী ঐক্য গঠনের চেষ্টায় রয়েছে। নির্বাচনকেন্দ্রিক এ দুই জোটই মূল আলোচনায় আছে। তবে এর বাইরেও তৃতীয় একটি জোট গঠনের প্রক্রিয়া চলছে ভেতরে ভেরতে। যদিও এ জোটের বিষয়টি এখনো আলোচনার মধ্যে রয়েছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গণতন্ত্র মঞ্চের ছয় দল, এবি পার্র্টি, গণঅধিকার পরিষদসহ কয়েকটি রজনৈতিক দলের মধ্যে তৃতীয় জোট গঠনের প্রাথমিক আলোচনা চলছে। এরই মধ্যে দলগুলোর নেতারা নিজেদের মধ্যে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।
সম্ভাব্য এই জোটে নজর রয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টিরও (এনসিপি)। দলটি যদিও ঘোষণা দিয়েছে ৩০০ আসনে একক প্রার্থী দেবে তারা। তবে মতে মিল হলে সম্ভাব্য এ জোটকেও তারা বিবেচনা করছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের কাউন্সিলের সভা হয়। সেখানে এনসিপির নির্বাচনি চিন্তা, সম্ভাব্য জোট-সমঝোতা এবং দলকে নিয়ে চলে নানা আলোচনা।
একজন দায়িত্বশীল নেতা বলেন, ‘বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী দুই দলই আগামী নির্বাচনে এনসিপিকে সঙ্গে রাখতে চায়। বিএনপির চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের যেসব সমালোচনা গত এক বছরে এনসিপির নেতারা করেছেন, তাদের সঙ্গে জোট বা সমঝোতায় গেলে তার দায় নিতে হবে। অন্যদিকে জামায়াতের সঙ্গে গেলে তাদের ঐতিহাসিক দায়ভার বহন করতে হবে। সার্বিক বিবেচনায় এনসিপির স্বতন্ত্র অবস্থানে থাকাই ভালো হবে, এ আলোচনা নির্বাহী কাউন্সিলে হয়েছে।’
তবে গণতন্ত্র মঞ্চের ছয় দল, এবি পার্টি ও গণ অধিকার পরিষদের সমন্বয়ে সম্ভাব্য তৃতীয় জোটের একটি সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা হয় এনসিপির সভায়।
এনসিপির ওই নেতার ভাষ্য অনুযায়ী, শীর্ষ নেতারা নির্বাহী কাউন্সিলকে জানান যে, জোটের বিষয়ে অনেক দলই আগ্রহী। কিন্তু এ দলগুলোর অনেকেই বিএনপির সঙ্গে একধরনের সমঝোতায় আছে। তারা সেই অবস্থান থেকে সরে এলে তৃতীয় জোট হতে পারে। পাশাপাশি জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে ৯ দল যৌথভাবে কিছু করতে পারে কি না, সেই আলোচনাও রয়েছে।
তবে নির্বাচনি জোট নিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, জুলাই সনদ ও সংস্কার বাস্তবায়নে ৯ দলীয় রাজনীতিক জোট হওয়ার সম্ভাবনার কথাও জানান দলের শীর্ষ এ নেতা।
সম্ভাব্য এ জোটের অন্যতম উদ্যোক্তা বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি খোলা কাগজকে বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কিছু হয়নি। আলাপ আলোচনা চলছে। নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া চলছে। তবে এখনো জোটের কোনো চূড়ান্ত রূপ হয়নি। কী দাঁড়াবে এখনো পরিষ্কার বলা যাচ্ছে না। তবে আমরা চেষ্টা করছি।’ তিনি আরো বলেন, দলগুলোর মধ্যে আদর্শিক মতপার্থক্য আছে। তো ইস্যু ভিত্তিক আলোচনা চলছে। দেখা যাক কী হয়।
কেকে/এআর