রংপুরের পীরগাছায় শিশু ধর্ষণের চেষ্টার মামলা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের সাজানো ঘটনায় ক্ষুব্ধ উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের দামুশ্বর ও কাশিম এলাকার সাধারণ মানুষ। একটি প্রকৃত ঘটনা আড়াল করতে পরিকল্পিত ঘটনা সাঁজিয়ে এমন মিথ্যাচার করায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দুই গ্রামের কয়েক শতাধিক মানুষ।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সরেজমিনে গেলে সাংবাদিকদের নিকট এমন অভিযোগ করেন গ্রামবাসী। একজন শিশু ধর্ষণ চেষ্টাকারীকে বাঁচাতে কতিপয় ব্যক্তি এমন কাজ করছেন বলে দাবি করছেন মামলার বাদি ও গ্রামবাসীরা।
জানা গেছে, উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের দামুশ্বর গ্রামের বাসিন্দা মেহেদী হাসান সুমনের শিশু সন্তানকে প্রতিবেশী মৃত তফায়েল হোসেনের ছেলে মিজানুর রহমান (৪৫) গত ২৪ অক্টোবর বিকালে বাড়ির পাশে বাঁশের টং এর উপর নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ নিয়ে গ্রামবাসী মিমাংসার জন্য বৈঠকের সময় নির্ধারণ করলেও অভিযুক্ত মিজানুর রহমান কালক্ষেপণ করে তালবাহানা করতে থাকেন। পরে ওই দিন রাতে পীরগাছা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন শিশুটির পিতা। মামলার বিষয়টি জানতে পেরে অভিযুক্ত মিজানুর রহমান একই দিন রাতে ঘটনা দেখিয়ে বাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট করার একটি অভিযোগ করেন। এ নিয়ে দুই গ্রামবাসীর মাঝে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম, সুলতান মাহমুদ বাবু, আব্দুল মান্নান, মোছা. সুরভী বেগম বলেন, নারী লোভী মিজানুর রহমান ওই এলাকার নারীদের জন্য একটি আতঙ্ক। ইতিপূর্বে তার বিরুদ্ধে অনেক নারী কেলেঙ্কারীর ঘটনা রয়েছে। অথচ একটি শিশু ধর্ষণের ঘটনা তিনি ভিন্ন খাতে নিতে মিথ্যা মামলা করার চেষ্টা করছেন। ঘটনাটির সঠিক তদন্ত হওয়া দরকার।
অভিযুক্ত মিজানুরের প্রতিবেশী আব্দুল হক, শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার দিন হঠাৎ মিজানুরের বাড়ির লোকজন চিল্লাচিল্লি করে একটা ঘটনা সাঁজিয়েছে। ওইদিন এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। মামলা থেকে বাঁচতে সবই পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে।
স্থানীয় পাওটানাহাট বাজারের ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলাম বলেন, আমরা শিশুর বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু মিজানুর রহমান হঠাৎ করে এমন একটা ঘটনা সাঁজাবে তা কেউ কল্পনাও করেনি।
অপর এক ব্যবসায়ী শাহালম মিয়া বলেন, মিজানুর যে ঘটনা বলছে, ওই সময় শিশু ধর্ষণের বাদি আমার সাথে একটি বাজারে ছিল। যা অনেক ব্যবসায়ী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা দেখেছে।
মামলা বাদি মেহেদী হাসান সুমন বলেন, মামলা করেছি বলে মিজানুর কল্পকাহিনী সাঁজিয়ে অভিযোগ করছে। যা ওই এলাকার সব মানুষ জানে। তারা আমাদের হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। যে কোন সময় মেরে ফেলবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। আমি সঠিক বিচার চাই।
এ সময় অভিযুক্ত মিজানুরের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। বাড়ির অন্যরাও এ বিষয়ে কথা বলতে চায়নি।
পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রোমেল বড়ুয়া বলেন, এ ধরনের কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি।
কেকে/এআর