কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলাকে জেলা করার দাবিতে রেলওয়ে জংশন অবরোধ করেছে স্থানীয় ছাত্র-জনতা। তারা লাল কাপড় ও ব্যানার হাতে নিয়ে “ভৈরবকে জেলা চাই” স্লোগান দেন। সকাল থেকে চলা এ আন্দোলনের একপর্যায়ে উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে ইটপাটকেল নিক্ষেপে কয়েকজন যাত্রী আহত হন ও ট্রেনের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকাল ১০টায় রেলওয়ে স্টেশনে জড়ো হয়ে ছাত্র-জনতা রেলপথ অবরোধ শুরু করে। সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে নোয়াখালী থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনটি ভৈরব স্টেশনে এসে আটকা পড়ে।
এ সময় বেশ কয়েকটি ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় ঘটে। ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী কন্টেইনার ট্রেন আটকে ছিল নরসিংদীর দৌলতকান্দি স্টেশনে। তিতাস ট্রেন মেথিকান্দা ও কর্ণফুলী ট্রেন খানাবাড়ি স্টেশনে আটকে ছিল। চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী চট্টলা ট্রেন আটকে ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তাল শহর স্টেশনে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও রেলওয়ে সূত্র জানায়, আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে চললেও বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে আন্দোলনকারীদের মধ্যে থেকে কিছু দুষ্কৃতিকারী হঠাৎ উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে বৃষ্টির মতো পাথর ছুড়তে শুরু করে। এ সময় ট্রেনের হেডলাইট ও কিছু গ্লাস ভাঙচুর করা হয় এবং কয়েকজন যাত্রী আহত হন। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
১১টা ৪৫ মিনিটে পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সহযোগিতায় উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে স্টেশন ত্যাগ করে। এই অবরোধের ফলে বিদেশগামী যাত্রীসহ শত শত সাধারণ ট্রেনযাত্রী চরম ভোগান্তিতে পড়েন। অবরোধের আতঙ্কে কালনি এক্সপ্রেস, চট্টলা এক্সপ্রেসসহ বেশ কিছু ট্রেন সময়মতো স্টেশনে পৌঁছাতে না পেরে পার্শ্ববর্তী স্টেশনে অপেক্ষায় ছিল।
ভৈরব রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাঈদ আহমেদ বলেন, ‘রেলপথ অবরোধের কারণে ১০টা ২৫ মিনিটে উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনটি স্টেশনে আটকা পড়ে। প্রায় এক ঘণ্টার মতো ট্রেনটি আটকা ছিল। পরে পুলিশের সহযোগিতায় ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’
ভৈরব রেলস্টেশন মাস্টার মো. ইউসুফ বলেন, ‘আন্দোলনের মুখে ট্রেনটি স্টেশনে আটকা পড়ে। আমরা ও পুলিশ ট্রেনের ওপর ও লাইন থেকে আন্দোলনকারীদের সরাতে চাইলে আন্দোলনকারীদের একটা অংশ ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ করে। ১১টা ৪০ মিনিটে ট্রেনটি স্টেশন ছেড়ে যায়। অবরোধের কারণে কয়েকটি ট্রেন পার্শ্ববর্তী স্টেশনে অবস্থান নেয়। এতে কিছুটা শিডিউল বিপর্যয় হয়।’
এদিকে ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনার পর ভৈরব ছাত্র ও যুবসমাজের আহ্বায়ক মো. সাইফুর রহমান শাহরিয়ার রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. ইউসুফ ও রেলওয়ে কর্মকর্তাদের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করেন।
তিনি অভিযোগ করেন, রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার ও রেলওয়ে কর্মকর্তারাই পাথর নিক্ষেপের পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন।
সাইফুর রহমান বলেন, ‘আন্দোলন বানচাল করতে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ করেছে। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেছি। এ ঘটনার দায় আমাদের না।’
কেকে/এমএ