বাঞ্ছারামপুরে স্কুল কমিটির নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ, বিতর্কে প্রধান শিক্ষক ছিদ্দিকুর
ফয়সল আহমেদ খান, বাঞ্ছারামপুর ( ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
প্রকাশ: সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:৫১ পিএম
ছিদ্দিকুর রহমান
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার হায়দরনগর কলাকান্দি এইচকে আছমাতুননেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির আসন্ন নির্বাচনে অনিয়ম ও প্রভাব খাটানোর অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক ছিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে। তিনি একাধিক মামলা ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগে আলোচনায় থাকা ব্যক্তি।
ছিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আব্বাস আলীকে ম্যানেজ করে হায়দরনগর কলাকান্দি এইচকে আছমাতুননেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির আসন্ন নির্বাচনটিকে পকেটস্থ করার জন্য ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং শুরু করে দেওয়ার গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। আগামী ৯ নভেম্বর এই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু, এর আগেই শুরু হয়েছে নির্বাচনের দুর্নীতি ও অনিয়ম।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফেরদৌস আরার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্কুলের এক ছাত্রের অভিভাবক।
সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এবি তাজুল ইসলামের সাথে ছিদ্দিকুর রহমান
অভিযোগ পত্রে বলা হয়, পাহাড়িয়াকান্দি ইউনিয়নের হায়দরনগর কলাকান্দি এইচকে আছমাতুননেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার সর্বশেষ তারিখ ছিল ২১ অক্টোবর। সরকারি বিধিমালা অনুযায়ী মনোয়ন পত্র জমা ও নির্বাচনের তারিখ বিদ্যালয়ের নোটিশ বোর্ডসহ বিদ্যালয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম,স্কুলের নোটিশ বোর্ড ও মাইকিং করে প্রকাশ করা। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিদ্দিকুর রহমান ও তার আস্থাশীল কমিটির লোকজন কোন কিছুই করে নাই।
বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক পায়েল তালুকদার অভিযোগ করেন, আমরা বিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারে দেখতে পাই যে, মোট ১৪ জন প্রার্থী মনোয়ন পত্র কিনেছেন। পরবর্তী জানতে পারি, নির্ধারিত তারিখের পরেও বিদ্যালয়ের কমিটির লোকজন মনোনয়ন ফর্ম বিক্রি করেছে; যা বিদ্যালয়ের ছাত্রৎছাত্রীর অভিভাবকসহ এলাকার অনেক লোকজন অবগত নয়।
জানা গেছে, ছিদ্দিকুর রহমান তার ঘরানার ৪ সদস্যের নিজস্ব কমিটি গঠন করার জন্য নির্বাচন প্রক্রিয়ার পুরো বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে ডামি প্রার্থী দিয়ে নির্বাচন করার চেষ্টা করছে।
এদিকে এলাকাবাসীর দাবি, ছিদ্দিকুর রহমানের সংশ্লিষ্টতা ছাড়া স্কুলের আসন্ন তফসিল পুনঃনির্ধারণ করা হোক; যাতে সবাই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে।
এ বিষয়ে প্রিজাইডিং অফিসার আব্বাস আলীর বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি।কিন্তু আমাকে প্রধান শিক্ষক জানিয়েছিল, তিনি সব প্রক্রিয়া সঠিকভাবে পালন করেছিলেন। এখন যদি অভিযোগের সত্যতা পাই, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম ফারুক বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে সত্যতা যাচাই-বাছাই করা হবে।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ছিদ্দিকুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে ফেসবুক, স্কুলের নোটিশ বোর্ড বা মাইকিং করতে পারিনি। তবে, স্কুলের দেয়ালে সাটিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা।’
ফেরদৌস আরা বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। নির্বাচন নিয়ে কোন গাফলতি পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’