রাজধানীতে মেট্রোরেল বন্ধ থাকায় সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন নগরবাসী।
গতকাল রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে মেট্রোরেলে দুর্ঘটনায় একজন নিহত হওয়ার পর দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর পর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে দেখা দেয় ভয়াবহ ট্র্যাফিক জট।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর মিরপুর রোড, বিজয়সরনী, ফার্মগেট, সংসদ ভবন এলাকা, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, উত্তরা, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, প্রেসক্লাব ও সচিবালয়সহ প্রায় সব এলাকাতেই ছিল তীব্র যানজট।
পথচারী ও অফিসগামী সাধারণ মানুষ জানান, মেট্রোরেল বন্ধ থাকায় তাদেরকে ভয়াবহ ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়েছে। নিয়মিত মেট্রোরেল ব্যবহারকারী সুমন নামের এক অফিস কর্মী বলেন, “প্রতিদিন মিরপুর থেকে শাহবাগে অফিসে যাতায়াত করতাম মেট্রোরেলে। কিন্তু আজ যেতে-আসতে তিন-চার ঘণ্টা লেগে গেছে। বাস পাওয়া যায়নি, আর পেলেও যানজটে আটকে পড়েছি।”
রাইড শেয়ারিং চালক বাবুল হোসেন বলেন, “মেট্রোরেল বন্ধ থাকায় আজ যাত্রী অনেক বেশি ছিল। তবে তীব্র যানজটের কারণে একেকটা ট্রিপ শেষ করতে সময় লেগেছে দ্বিগুণ। ফলে ইনকাম আগের চেয়ে অনেক কম।”
অন্যদিকে নগরীর গণপরিবহনে ছিল অতিরিক্ত ভিড়। যেখানে একটি বাসের ধারণক্ষমতা ৫০-৬০ জন, সেখানে ৮০-৯০ জন যাত্রী গাদাগাদি করে উঠেছেন। এক বাসের হেলপার বলেন, “আগে যাত্রী পেতাম না, এখন মানুষকে ঠেলেও নামানো যাচ্ছে না।”
তাছাড়া সিএনজি ও রাইড শেয়ারিং ভাড়াতেও দেখা গেছে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। স্বাভাবিক ভাড়া যেখানে ৩০০ টাকা, সেখানে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের।
ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা জানান, “মেট্রোরেলে প্রতিদিন কয়েক লাখ মানুষ যাতায়াত করে। হঠাৎ সেটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সবাই বিকল্প যানবাহন ব্যবহারের চেষ্টা করছে। এ কারণেই এত বড় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।”
তারা আরো বলেন, “কিছুদিন আগেও রাজধানীর যানজট অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু মেট্রোরেল দুর্ঘটনা ও বন্ধ থাকার কারণে পরিস্থিতি কিছুটা বিঘ্নিত হয়েছে। মেট্রোরেল চালু হলে আবারো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।”
সব মিলিয়ে, গতকাল থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত রাজধানীজুড়ে ঢাকাবাসী যেন এক ভোগান্তির শহরে দিন কাটিয়েছে।
কেকে/এআর