‘থুথু’ ফেলা নিয়ে ড্যাফোডিল-সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ
মো. শরিফ শেখ, সাভার (ঢাকা)
প্রকাশ: সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫, ১১:৩১ এএম আপডেট: ২৭.১০.২০২৫ ১১:৫৯ এএম

সংগৃহীত ছবি
সাভারের আশুলিয়ার খাগান এলাকায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে সিটি ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থীর মোটরসাইকেল থেকে থুথু ফেলাকে কেন্দ্র করে দুই ইউনিভার্সিটির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে।
রোববার (২৬ অক্টোবর) দিবাগত রাতে সংঘর্ষের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শত শত শিক্ষার্থী রাতে ঘটনাস্থলে জড়ো হন। উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা সিটি ইউনিভার্সিটির দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম ও পুলিশ তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন।
পরে প্রক্টর ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুরোধে শিক্ষার্থীরা ব্যাচেলর প্যারাডাইসের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় সিটি ইউনিভার্সিটির হামলাকারী শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ‘ওই এলাকায় ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা মিলে একটি বাসায় থাকেন। বাসাটি ‘ব্যাচেলর প্যারাডাইস হোস্টেল’ নামে পরিচিত। রোববার সন্ধ্যায় ওই বাসার সামনে সিটি ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী মোটরসাইকেল থেকে থুথু ফেললে তা ড্যাফোডিলের এক শিক্ষার্থীর শরীরে লাগে। এ নিয়ে উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। পরে রাত ৯টার দিকে সিটি ইউনিভার্সিটির প্রায় ৪০-৫০ জন শিক্ষার্থী দেশীয় অস্ত্র ও ইট-পাটকেল নিয়ে ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীদের ওই বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন।’
পরে ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীদের মধ্যে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রায় এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে সিটি ইউনিভার্সিটির দিকে অগ্রসর হলে শুরু হয় ভয়াবহ সংঘর্ষ।
চোখেমুখে আতঙ্ক, চারদিক জ্বলছে আগুন— এমন পরিস্থিতিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয় ড্যাফোডিলের প্রক্টরিয়াল টিম। একপর্যায়ে রাত ১২টার পর ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা সিটি ইউনিভার্সিটির ভেতরে ঢুকে প্রশাসনিক ভবনসহ বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর চালায়। লুট করা হয় কম্পিউটারসহ গুরুত্বপূর্ণ মালামাল, পুড়িয়ে ফেলা হয় তিনটি বাস ও একটি প্রাইভেটকার। আরো পাঁচটি যানবাহন ভাঙচুরের শিকার হয়।
সংঘর্ষের সময় আতঙ্ক সৃষ্টি করতে একাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। ভোররাত পর্যন্ত চলা এ সংঘর্ষে উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।
অভিযোগ উঠেছে, দীর্ঘ চার ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ চললেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সহায়তা পাননি শিক্ষার্থীরা। ঘটনাস্থলে এখনো টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
কেকে/এআর