বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার বলিপাড়া ইউনিয়নের বলিবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) গভীর রাতে হঠাৎ লাগা আগুনে বাজারের ১৩টি দোকানঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
দেড় বছরের ব্যবধানে এলাকায় তৃতীয়বারের মতো বড় অগ্নিকাণ্ড এটি।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, শনিবার দিবাগত রাতে আনুমানিক ২টার দিকে বাজারের একটি খাবারের হোটেল থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়, মুহূর্তের মধ্যেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের দোকানগুলোতে।
বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি অংসিংম্যা মারমা জানান, তখন রাত গভীর হওয়ায় সবাই ঘুমিয়ে ছিলাম, হঠাৎ বাজারে দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্ত থেকে থেকে হৈচৈ শব্দ শুনে দোকান থেকে বের হয়ে দেখি, আগুন জ্বলছে। টিটু দাশের রেস্টুরেন্ট ও জাফর আহম্মদের সারের দোকানের মাঝখান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে জানা গেছে।
বাজারের পাশে পাড়ার (বাগান পাড়া) বাসিন্দা মংলুং মারমা জানান, হঠাৎ বাজার থেকে হৈচৈ শুনে ঘর থেকে বের হয়ে দেখি, আকাশে আগুনের শিখা। দেখামাত্রই মোটরসাইকেল বের করে বাজাররের দিকে দৌড়ে দেখি, তখনই আগুন জ্বলছে। আশপাশের এলাকার মানুষ আরও অনেকেই ছুটে এসে আগুনে নেভানোর চেষ্টা করে।
আগুনে ক্ষতিগ্রস্থ কাপড় ব্যবসায়ী হ্লায়ইচিং মারমা বলেন, ‘খুব দুর্ভাগ্য আমার। ২০২০ সালের ১০৯টি দোকান এবং ২০২৩ সালেও একবার রাতে আগুনে পুড়ে প্রায় ৫০টি দোকান ভস্মীভূত হয়েছিলো। আজ আবারও পুড়লো, এবারও মালামাল সরানোর সুযোগ পেলাম না।’
বলিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়া অং মারমা জানান, আগুনের ঘটনা জানার পরপরেই বাজারে এসেছি। এলাকার মানুষের সাথে কথা বলেছি। আগুনে মোট ১৩টি দোকান পুড়ে গেছে। ১৩টি দোকানের প্রায় ৩ কোটি ৩৫ লক্ষাধিক মালমাল ও নগদ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে তথ্য পেয়েছি। ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তা করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
থানচি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশনের ফায়ার লিডার পিয়ার মোহাম্মদ জানান, শনিবার দিবাগত রাতে সোয়া দুইটার দিকে বলিপাড়া বাজার হতে ব্যবসায়ীরা আমার মুঠোফোনের সংবাদ দিলে দেরী না করে দুইটি ইউনিট আগুন নিভানো ও উদ্ধার তৎপরতা চালাই। তৎক্ষণিকভাবে আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে যে ধারণা, সেটি হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সুত্রপাঠ হওয়ার সম্ভাবনা বেশী, তবে তদন্ত করে বিস্তারিত পরে জানানো যাবে।
থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আদুল্লাহ আল ফয়সাল বলেন, ‘বলিপাড়া বাজারে অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন অবগত রয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে দ্রুত শুকনো খাবার, কম্বল বিতরণ ও এই বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
কেকে/এমএ