মুন্সিগঞ্জের চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে দ্বন্দের জেরে ২ জন নিহতের ঘটনায় মামলার চাঞ্চল্যকর অন্যতম আসামি রিপন ছয়ালকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে দশটার সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের একটি যৌথ আভিযানিক দল নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকা থেকে রিপনকে গ্রেফতার করে।
এদিকে শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে র্যাব-১১ এর কোম্পানী কমান্ডার মো. নাঈম উল হক স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গ্রেফতারকৃত রিপন ছয়াল চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর থানাধীন উত্তর দশানী এলাকার মৃত জুলমত ছয়ালের ছেলে।
বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়, গত ৩০ জানুয়ারি বিকেলে রাসেল ফকির কালিরচর সংলগ্ন মেঘনা নদীতে মাছ ধরার জন্য বের হয়। তার সাথে মতলব উত্তর থানার মো. রিফাত খানও ছিল। নদীতে মাছ ধরার সময় হঠাৎ সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার সময় কয়েকটি ইঞ্জিন চালিত বোট ও স্পীডবোট ঘটনাস্থলে এসে ঘন কুয়াশার মধ্যে রাতের অন্ধকারে অভিযুক্ত আসামিরা এলোপাথাড়ি গোলাগুলি শুরু করে। ঐ সময় আসামীদের ছোঁড়া গুলিতে রাসেল ফকির ও তার সঙ্গী মো. রিফাত খান গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়। পরে রাসেল ফকির ও তার সঙ্গী মো. রিফাত খানকে গুরুতর আহত অবস্থায় মুন্সিগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাদেরকে মৃত ঘোষনা করেন। এ ঘটনায় আইয়ুব আলী নামের আরেকজন গুলিবিদ্ধ হন। পরবর্তীতে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নিহতরা হলেন, চাঁদপুর মতলব থানাধীন পশ্চিম হানিফার গ্রামের মো. আক্তার হোসেন খানের ছেলে রিফাত খান এবং মতলব ভাষানচর দক্ষিণ কান্দি গ্রামের মো. কামাল ফকিরের ছেলে রাসেল ফকির।
মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে মুন্সীগঞ্জ সদরের কালীরচর গ্রামে কানা জহির ও কিবরিয়া মিজি গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। মুন্সিগঞ্জ সদরের কালিরচর এলাকার কিবরিয়া মিজি ও তার লোকজন মুন্সীগঞ্জ-মোহনপুর সীমানাধীন চর বাংলাবাজার এলাকায় ২৫ থেকে ২৬ টি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে। অপরদিকে কালিরচর গ্রামের বাসিন্দা কানা জহির গ্রুপও একইভাবে বালু উত্তোলনের চেষ্টা করলে বিরোধ দেখা দেয়। এরই জেরে গত ৩০ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কানা জহির ও তার লোকজন প্রতিপক্ষ কিবরিয়া মিজির অবৈধ বালু মহালের পাশে ড্রেজার বসিয়ে বালু তুলতে গেলে কিবরিয়া মিজির বালু সিন্ডিকেটের সশস্ত্র সদস্যরা তাদের ধাওয়া দেয় এবং গুলিবর্ষণ করে। এতে ট্রলার ও স্পিডবোটে থাকা রিফাত, রাসেল ও স্পিডবোট চালক আইয়ুব আলী গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাদের উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে রিফাত ও রাসেলের মৃত্যু হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামি রিপন ছয়ালের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে র্যাবের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
কেকে/ আরআই