রূপসী বাংলার কবি, নির্জনতম কবি জীবনানন্দ দাশের প্রয়াণ দিবস আজ।
বরিশালের নদী, জোনাকি ছেড়ে তুমি পা রেখেছিলে সাপের মতো এলিয়ে থাকা কলকাতার ট্রামলাইনের ওপর। পৃথিবীর দিকে তুমি তাকিয়েছিলে বিপন্ন বিস্ময়ে। সস্তা বোর্ডিংয়ে উপার্জনহীনভাবে দিনের পর দিন কুঁচো চিংড়ি খেয়ে থেকেছেন।
অমন বেদনার জীবন কাটাতে কাটাতেই পিঁপড়ার মতো গুটি গুটি অক্ষরে লিখেছ হাজার হাজার পৃষ্ঠা। জাগতিক অর্থে একটা ব্যর্থ মানুষের জীবন। চাকরি থাকে না, পড়াতে পারেন না, ছাত্ররা হাসাহাসি করে, লেখকেরা চিঠির উত্তর দেয় না, সম্পাদকরা গণ্ডার খেতাব দেয়, ঠিকমতো কথা বলতে পারেন না, এমনকি হাসিও স্বাভাবিক না।
পুরো জীবন এমন পুড়ে, পুড়ে কবিতা লিখলেন। ঘোর লাগা সব প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন আমাদের জীবন আর হৃদয়কে লক্ষ্য করে। আমরা এখন জীবনানন্দ হতে চাই। কিন্তু তার পুড়ে যাওয়া, ক্ষয়ে যাওয়া জীবন ভয় পাই। এমন জীবন মেনে না নিলে, এমন জীবনানন্দ হওয়া অসম্ভব।
প্রিয় কবি, তোমাকে সবাই ভালোবাসি। কিন্তু তোমার জীবন কেউ চাই না। তুমি আমাদের জীবন আর হৃদয়ের নির্জন বাঁশিওয়ালা। তোমার বাঁশির সুর আমাদের পাগল করে। আমরা তোমার বাঁশির সুর ঠিকই শুনি কিন্তু সুরের পেছনে বুক আর কন্ঠের কোন কান্না শুনিনা। এইতো জীবন, মানুষের জীবন...
কেকে/এজে