ঢাকার সাভার পৌরসভা ও আশুলিয়া মিলিয়ে সাভার সিটি করপোরেশন এবং কেরানীগঞ্জকে ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভা বা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনের পর এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সংযোগ অধিশাখা।
গত ১২ অক্টোবর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব মু. মাহমুদ উল্লাহ মারুফ স্বাক্ষরিত এক পত্রে বিষয়টি জানা গেছে।
সরকারের এ সিদ্ধান্তের ফলে সাভার পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম বিলুপ্ত হয়ে যাবে। বিভাগীয় কমিশনার কর্তৃক গত সেপ্টেম্বরে প্রথম পক্ষের পাক্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই প্রস্তাব বাস্তবায়ন শুরু করে সরকার।
প্রধান উপদেষ্টার কাছে উত্থাপিত ওই প্রস্তাবে বলা হয়, ‘অপরিকল্পিতভাবে শিল্পকারখানা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়-বাণিজ্যের কেন্দ্র ও জনসংখ্যার চাপ মিলিয়ে সাভার এক বিশাল নগর এলাকায় পরিণত হয়েছে। সাভার পৌরসভা থাকলেও তা নাগরিক চাহিদার তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। পৌরসভার সীমিত সম্পদ ও জনবল দিয়ে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার নাগরিক চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। সাভারের আশুলিয়া অঞ্চলে বিপুল সংখ্যক গার্মেন্টস শিল্প, শ্রমিকবসতি ও আবাসিক এলাকা গড়ে উঠেছে। আশুলিয়া এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে পরিকল্পিত নগরায়ণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, যানবাহন নিয়ন্ত্রণ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সুবিধা, নিরাপদ পানি সরবরাহ কিংবা পরিবেশ সংরক্ষণের মতো নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার সক্ষমতাও ইউনিয়ন পরিষদের নেই। ফলে, আশুলিয়া এলাকার জনগণকে যানজট, অপর্যাপ্ত স্যানিটেশন ও অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।’
‘অন্যদিকে ঢাকা শহরের প্রসার ও জনসংখ্যার চাপে কেরানীগঞ্জ উপজেলা অপরিকল্পিতভাবে দ্রুত নগরায়ণের মুখোমুখি হচ্ছে। পৌরসভা বা সিটি করপোরেশনের মতো প্রতিষ্ঠান না থাকায় সড়ক, ড্রেনেজ, পানি সরবরাহ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কিংবা স্বাস্থ্যসেবার মতো মৌলিক নাগরিক সেবা দেওয়া যাচ্ছে না। কেরানীগঞ্জে পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হলে রাজধানীর পাশে একটি আধুনিক ও প্রাণবন্ত উপশহর হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।’
এ অবস্থায়, সাভার পৌরসভা ও আশুলিয়া মিলিয়ে সাভার সিটি করপোরেশন গঠন এবং কেরানীগঞ্জকে ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভা বা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত করার প্রস্তাব পেশ করা হয়।
পরে প্রস্তাবটি প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক অনুমোদনের পর প্রস্তাবের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক বাস্তবায়ন অগ্রগতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে জানাতে বলা হয়।
জানতে চাইলে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘সরকারের এই সিদ্ধান্ত যুগান্তকারী। এর ফলে উন্নয়ন বঞ্চিত ও অবহেলিত এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার কিছুটা হলেও দূর হবে এবং নাগরিক সুবিধা ও মর্যাদা নিশ্চিত করা যাবে।’
কেকে/ এমএ