মা ইলিশ সংরক্ষণে সরকার ঘোষিত ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলমান থাকলেও ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার পদ্মা নদীর চরে বসছে ইলিশের অস্থায়ী বাজার। নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে প্রশাসনের দুর্বলতা ও নজরদারির অভাবে প্রতিদিনই এ বাজার থেকে পাচার হচ্ছে বিপুল পরিমাণ মা ইলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ঢেউখালী ইউনিয়নের মুন্সীরচরের মোল্লা কান্দি ঘাট এলাকায় প্রতিদিন ভোর ও সন্ধ্যায় বসছে মাছের এ অবৈধ হাট। বাজারটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী একটি মহল।
না প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে ক্রেতা পরিচয়ে অন্য একজন ব্যবসায়ীর সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ১০-২০ কেজি ইলিশ দেয়া যাবে। মাছ নিতে চাইলে মোল্লা কান্দি ঘাটে আসতে হবে।
প্রশাসনিক তৎপরতা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এই এলাকায় প্রশাসন আসে না। এখান থেকে মাছ নিতে কোনো ঝুঁকি নেই।’’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, দীর্ঘদিন ধরেই নিষেধাজ্ঞার সময় এই ধরনের অবৈধ বাজার বসে আসছে। প্রতিদিন ভোর ও সন্ধ্যায় এই বাজারে চলে ইলিশ বেচাকেনা। বাইক ও নৌকায় করে গোপনে এসব মাছ পাচার করা হচ্ছে জেলার বিভিন্ন এলাকায়।
সদরপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমাদের জনবল সংকট রয়েছে। অভিযানের জন্য প্রয়োজনীয় নৌযানও নেই। অঞ্চলটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া সেখানে কার্যকর অভিযান চালানো সম্ভব নয়। আমরা শিগগিরই প্রশাসনের সহায়তায় অভিযান পরিচালনার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘পদ্মার চরে ইলিশ বিক্রির বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা এটি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। মৎস্য বিভাগের সাথে সমন্বয় করে শিগগিরই অভিযান চালানো হবে।’
বলে রাখা ভাল, মা ইলিশ সংরক্ষণ ও ইলিশের প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত দেশব্যাপী ইলিশ ধরা, পরিবহন, মজুত, বিক্রি ও বাজারজাতকরণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। তবে, মাঠপর্যায়ে এই নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে নানা অনিয়ম ও গাফিলতি প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
কেকে/ এমএ