চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ফরাজীকান্দি ইউনিয়নে পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর টাকার বিনিময়ে মুক্তি পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত যুবলীগের এক সভাপতির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যার পর উপজেলার নতুনবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফরাজীকান্দি ইউনিয়নের নিষিদ্ধ ঘোষিত যুবলীগের সভাপতি কবির হোসেন ওইদিন বিকেলে “হোয়াইট হাউস রেস্টুরেন্টে” খাবার খেতে যান। এ সময় মতলব উত্তর থানার এসআই জাফর আহমেদ ও এএসআই মনির হোসেন তাকে আটক করেন। পরে মোটরসাইকেলে করে থানায় নেওয়ার সময় কথিতভাবে সোর্সদের মাধ্যমে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনার পর যুবলীগ নেতা কবির হোসেন নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট দেন, যেখানে তিনি লেখেন, “আল্লাহ তায়ালা যা করেন মানুষের কল্যাণের জন্যই করেন আলহামদুলিল্লাহ।” তার এই পোস্টটি স্থানীয়ভাবে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
স্থানীয়দের দাবি, ঘটনাটির প্রকৃত সত্য জানতে রেস্টুরেন্টের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করলেই সবকিছু স্পষ্ট হয়ে যাবে।
এদিকে, কয়েকদিন আগে এসআই জাফর আহমেদকে স্থানীয় একটি অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে। এতে করে তার রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা এবং দায়িত্ব পালনে নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।
স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন এসআই জাফর আহমেদ। পুলিশের দায়িত্বশীল পদে থেকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততা ও অনৈতিক আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর। বিষয়টি প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত।
এ ঘটনায় মতলব উত্তর উপজেলা বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি ও গণঅধিকার পরিষদের নেতৃবৃন্দ চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা জানান, কিভাবে প্রশাসনের লোক হয়ে একজন নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের সক্রিয় কর্মীকে আটকের পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনা সুষ্ঠ তদন্তের দাবী জানান তারা।
নেতৃবৃন্দ আরও জানান, নামমাত্র কিছু সংখ্যক পুলিশ এখনও ফ্যাসিস্টের সহযোগী হয়ে কাজ করছে। সারাদেশে যেখানে অপারেশন ডেবিল হান্টের মাধ্যমে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে, সেখানে প্রশাসনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হয়ে একজন ফ্যাসিস্টের সহযোগীকে ছেড়ে দেওয়া হইলো।
এ বিষয়ে এসআই জাফর আহমেদের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
সহকারী পুলিশ সুপার (মতলব সার্কেল) জাবীর হুসনাইন সানীব বলেন, আমি বর্তমানে চাঁদপুরের বাইরে রয়েছি। আগামী ৭/৮ অক্টোবর কর্মস্থলে ফিরে বিষয়টি খোঁজখবর নেব। যদি সত্যিই আটক ব্যক্তিকে অর্থের বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে থাকে, তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেকে/ আরআই