ঢাকার হাজারীবাগের আরিফ মির হত্যাকাণ্ডে মিলেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তবে এখনও অন্ধকারে পুলিশ। বসিলা ব্রিজ সংলগ্ন নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আরমান হোসেন বলেছেন, ‘ময়না তদন্তের পর মূল রহস্য জানা যাবে।’
মেসেঞ্জারে ডাকা বার্তা পেয়ে গত শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ভোরে বাসা থেকে বের হয় হাজারীবাগের আরিফ। শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে বুড়িগঙ্গা নদীতে ভেসে ওঠে তার মরদেহ। ঘটনার সাত দিন পার হলেও পুলিশ এখনও হত্যা রহস্য উদঘাটনে অন্ধকারে। তবে অনুসন্ধানে মিলেছে— একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য ও সিসিটিভি ফুটেজ, যা হত্যাকারীদের শনাক্তে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হতে পারে।
আরিফের স্বজনদের একটাই প্রশ্ন— “কারা হত্যা করে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দিলো আরিফকে?”
মরদেহ উদ্ধারের পর হাজারীবাগ থানায় অপমৃত্যুর মামলা হলেও তদন্ত করছে নৌ পুলিশ। আরমান হোসেন জানিয়েছেন, তদন্ত চলছে। তবে এখনো কোন অগ্রগতি নেই।’
অনুসন্ধানে জানা যায়, শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টার দিকে ফেসবুকের মেসেঞ্জারে জাহিদ হাসান জাহিদ নামের এক যুবকের সঙ্গে যোগাযোগ হয় আরিফের। সকাল সাড়ে ৫টা থেকে তাদের কথোপকথন চলে। পরে সকাল ৬টা ৩৭ মিনিটে জাহিদ আরিফের বাসার সামনের গলিতে দাঁড়িয়ে ছবি পাঠায় মেসেঞ্জারে। আরিফ জবাবে লেখেন—“ওকে, দাঁড়াও। আমি নদীর পাড়ে আসছি।”
তদন্তে ওই গলির প্রায় একাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হয়। এতে দেখা যায়, সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে গোলাপি রঙের গেঞ্জি পরিহিত এক যুবক গলিতে ঢুকে মোবাইল দেখতে দেখতে। ধারণা করা হচ্ছে, তিনিই গলির ছবি তুলে আরিফকে পাঠান। ৬টা ৩৭ মিনিটে মেসেজ পাওয়ার পরপরই গলিতে আসে আরিফ। তার আগেই একই পথে আরও তিনজনকে নদীর পাড়ের দিকে যেতে দেখা যায়।
ফুটেজে দেখা যায়, গলিতে প্রবেশের ১০ মিনিট পর ৬টা ৪৬ মিনিটে তড়িঘড়ি করে বেরিয়ে যায় গোলাপি গেঞ্জি পরা যুবক। এর ১১ মিনিট পর একই পথে আরও পাঁচ যুবককে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়। কিন্তু আরিফ আর ফিরে আসেননি। শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) গলির মাথায় নদীর পাড়েই পাওয়া যায় তার নিথর দেহ। পাশে পড়ে ছিল তার জুতা।
ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় ২০ মিনিটের মধ্যেই সংঘটিত হয় এই কিলিং মিশন। স্বজন ও স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত তদন্ত করে প্রকৃত আসামিদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
আরিফের নিহত হওয়ার বিষয়ে দৈনিক খোলা কাগজে গত রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেখানে উল্লেখ হয়, হাজারীবাগে নিখোঁজের এক দিন পর আরিফ মির (২৬) নামে এক যুবকের লাশ বুড়িগঙ্গা নদীতে ভেসে উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। পরিবারের দাবি, তাকে ফোন করে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে এবং লাশ গুম করতে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার সাত দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও পুলিশ শনাক্ত করতে পারেনি কারা এর সঙ্গে জড়িত। আরিফের পরিবার অত্যন্ত গরীব বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, যদি আরিফ খুন হয়ে থাকে, তাহলে কি আদৌ বিচার পাবে তার পরিবার?
কেকে/ এমএ