সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। এবছর রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় ৯৩টি পূজা মণ্ডপে উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসব উদ্যাপিত হয়।
উপজেলা প্রশাসন ও মডেল থানা পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তা ও নজরদারিতে পূজার পাঁচদিন ভক্তরা নির্বিঘ্নে উৎসব পালন করেন।
বৃহস্পতিবার ছিল বিজয়া দশমী। এদিন মণ্ডপগুলোতে বিহিত পূজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে দর্পণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানানো হয়। গঙ্গাচড়া কেন্দ্রীয় দুর্গা ও কালী মন্দির মণ্ডপসহ উপজেলার সব মণ্ডপে নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ, কিশোর-কিশোরীরা উপবাস থেকে দেবীর নৈকট্য লাভের আশায় অরাধনা ও পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করেন।
গঙ্গাচড়া কেন্দ্রীয় দুর্গা ও কালী মন্দির মণ্ডপের পুরোহিত বলেন, বিসর্জনের সময় মণ্ডপে বেজে উঠেছিল বিদায়ের সুর। নবমীর দিনের সব আচার শেষে আজ দশমীতে কৈলাশে (স্বামীর বাড়ি) ফিরে যাবেন দেবী দুর্গা। আর বিসর্জনের আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে শেষ হয় দুর্গাপূজা।
এর আগে বুধবার মহানবমী উপলক্ষে বেশ কয়েকটি মণ্ডপে সকাল থেকেই ভক্তদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। ঢাকঢোলের শব্দে মুখর ছিল চারপাশ। সকালে দুর্গার মহাস্নান, তর্পণ এবং ষোড়শ উপচারে পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর অঞ্জলি ও প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
সনাতন ধর্মমতে, নবমী নিশীথেই দুর্গাপূজার মূল উৎসবের সমাপ্তি ঘটে। এই দিনটি কেবল আধ্যাত্মিকতার নয়, বিদায়ের আবেগে আবৃত থাকে ভক্তদের হৃদয়ও। বিশ্বাস করা হয়, নবমীর পুণ্য তিথিতে দেবী দুর্গা অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে শুভ শক্তির আবির্ভাব ঘটান।
বিজয়া দশমীর মূল তাৎপর্যও গভীর। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে, মানুষের মনের অসুরিক প্রবৃত্তি—কাম, ক্রোধ, হিংসা, লালসা—এগুলোকে বিসর্জন দিয়ে শুভ শক্তিকে ধারণ করাই এ উৎসবের উদ্দেশ্য। এই বিসর্জনের মধ্য দিয়ে ভ্রাতৃত্ববোধ ও বিশ্বশান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেন ভক্তরা।
গঙ্গাচড়া শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি কমল কান্ত রায় ও সাধারণ সম্পাদক তপন রায় জানান, এবারের পূজা নির্বিঘ্নে সর্বোচ্চ উৎসবমুখর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদ হাসান মৃধা ও থানার অফিসার ইনচার্জ আল এমরানসহ রাজনৈতিক দল এবং সকল শ্রেণী পেশার মানুষের সহযোগিতায় সনাতনী ধর্মাবলম্বীরা নিরাপদে পূজা উদ্যাপন করতে পেরেছি।
কেকে/ আরআই