এশিয়া কাপ ফাইনাল-২০২৫। গতকাল ২৮ সেপ্টেম্বর হয়ে গেল পাক-ভারত যুদ্ধ। পাকিস্তান ও ভারতের মুখোমুখি ম্যাচ মানেই বাড়তি উত্তেজনা।
দুবাই অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপের ফাইনাল ম্যাচটি চরম উত্তেজনাকর একটি ম্যাচ ছিল। ম্যাচের শেষটা ছিল রোমাঞ্চকর। পাকিস্তানের ১৪৬ রান তাড়ায় ভারতের শেষ ওভারে দরকার ছিল ৮ রান। হারিস রউফের দ্বিতীয় বলে তিলক বর্মার ছক্কা আর চতুর্থ বলে রিংকু সিংয়ের চারে ভারত সেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ২ বল হাতে রেখে। এবারের আসরে পাকিস্তানের বিপক্ষে টানা তৃতীয় জয়ে ভারত পেয়েছে এশিয়া কাপে নবম শিরোপার দেখা।
এশিয়া কাপ ২০২৫ ফাইনাল
ফাইনাল খেলাটি সমাপ্ত হতে না হতেই পুরস্কার বিতরণী মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু হয়ে যায়। ১০-২০ মিনিটের মধ্যে শুরু হয়ে যায় অনুষ্ঠানও। কিন্তু দুবাইয়ে তখনই গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে, ভারতীয় দল আদৌ ট্রফি অনুষ্ঠানে অংশ নেবে কি না। গুঞ্জনের কারণ টুর্নামেন্টজুড়ে পাকিস্তান বিষয়ে ভারতের নেতিবাচক অবস্থান।
১৪ সেপ্টেম্বর দুই দলের প্রথম ম্যাচের টসের সময় পাকিস্তান অধিনায়কের সঙ্গে হাত মেলাননি ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। আর ম্যাচ শেষ হওয়ার পর ভারতের ক্রিকেটাররা ড্রেসিংরুমের দরজাই বন্ধ করে দেন।
পরে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে সূর্যকুমার জানান, ভারত সরকার ও বিসিসিআইয়ের অবস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এমন আচরণ তার দলের। এমনকি গত মে মাসে পাকিস্তানে চালানো ভারতের সামরিক অভিযানের প্রসঙ্গও টানেন সূর্যকুমার। সেই থেকে টুর্নামেন্টজুড়ে ভারত-পাকিস্তান রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের বৈরী সম্পর্কের ছাপ ছিল দুই দলের মাঠের খেলায়ও।
এশিয়া কাপ ২০২৫
নিয়মানুযায়ী, এশিয়া কাপের ট্রফি বিজয়ীদের হাতে তুলে দেন সংস্থাটির সভাপতি। বর্তমানে এর সভাপতি পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) প্রধান মহসিন নাকভি, যিনি আবার পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও। খেলা শেষে তিনি সময়মতোই মাঠে নামেন। কিন্তু পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শুরু তখনো বাকি। এ সময় ভারতের ক্রিকেটারদেরকে মাঠে উদ্দেশ্যহীনভাবে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। কেউ বসেছিলেন ঘাসের ওপর, কেউবা ছোট ছোট দলে জটলা হয়ে। পাকিস্তান দল তখন মাঠেই নেই। পুরো দল খেলা শেষে ড্রেসিংরুমে যাওয়ার পর আর বের হয়নি।
অস্বাভাবিক ওই পরিস্থিতির মধ্যে চলছিল আলোচনা। ভারত জানিয়ে দেয়, তারা নাকভির হাত থেকে ট্রফি নেবে না। সেই সময়ে ভারতীয় খেলোয়াড়দের বোঝানোর চেষ্টা করেন এসিসি কর্মকর্তারা। ম্যাচ রেফারি রিচি রিচার্ডসন, মাঠের দুই আম্পায়ার আহমাদ শাহ পাকতিন ও মাসুদুর রহমানকেও কথা বলতে দেখা যায়।
এশিয়া কাপ ২০২৫
একপর্যায়ে ভারত জানায়, মাঠে থাকা এমিরেটস ক্রিকেট বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান খালিদ আল জারুনির হাত থেকে ট্রফি নিতে চায় তারা। তখন বেঁকে বসেন নাকভি। এসিসি সভাপতি হিসেবে তিনিই পুরস্কার তুলে দেবেন, নয়তো দেওয়া হবে না। এমন অচলাবস্থার মধ্যেই শেষ হয় এশিয়া কাপ ফাইনালের পুরস্কার বিতরণ।