পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলায় একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রকে মারধর ও আটকে রাখার অভিযোগ ওঠেছে। এ ঘটনায় ১২ বছর বয়সী ছাত্র লিমন মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে দাবি করেছে তার পরিবার। তবে ঐ শিক্ষক ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ঘটনা পুরোপুরি অস্বীকার করে বলেছেন, ‘শিশুটির আগে থেকেই মানসিক সমস্যা ছিল।’ বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা লিমনের ‘সিজোফ্রেনিয়া’ থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে লিমন ভর্তি থাকাকালীন তার নানি তৌহিদা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, ‘শব্দ করে দরজা লাগানোর অপরাধে মন্নাপাড়া ইমদাদুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষক জান্নাতুন বারী মানিক লিমনকে মারধর করে একটি রুমে দরজা বন্ধ করে রেখে দিয়েছিলো। আমি পরে মাদ্রাসা থেকে তাকে বাড়িতে নিয়ে এসেছি।’
তিন জানান, বাড়িতে আসার পর লিমন কিছু খায় না, আবোল তাবোল বলতেছে এবং ছটফট করে। তারপর আমি বোদায় ও রংপুরে চিকিৎসা করেছিলাম।
তৌহিদা খাতুন আরও বলেন, ‘আগে লিমনের কোন মানসিক সমস্যা ছিল না।’
ঘটনাটি গত চার মাস আগের বলে তিনি দাবি করেন।
সরেজমিনে গেলে অভিযুক্ত শিক্ষক জান্নাতুন বারী মানিক ঘটনা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন।
তিনি বলেন, ‘এ কথাগুলো ঠিক না। গত চার মাস আগে নাকি আমি লিমনকে মারধর করেছি? কিন্তু আমি গত জানুয়ারি মাস থেকে মাদ্রাসায় আসি না। লিমন প্রায় দুই বছর আগে এই মাদ্রাসায় ছিল।’
তবে তিনি একটি বিষয় আংশিক স্বীকার করে বলেন, ‘দরজা লাগানোর বিষয়টা যে রাতুলের নানি বলেছিলো, গত বছরের শুরুর দিকে যেদিন ঘটনাটি ঘটে, সেদিন ছাত্রদের সাথে লিমন অদ্ভুত আচরণ করার কারণে পাশের রুমে কিছুক্ষণের জন্য রাখা হয়েছিলো। সে আগে থেকেই অদ্ভুত আচরণ করত।’
মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ লিমনের পারিবারিকভাবে মানসিক সমস্যার ইতিহাস থাকার দাবি করেন।
মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘১৭ মাস আগে বাচ্চাটি এখান থেকে চলে যায়। পরে সে পার্শ্ববর্তী ভাসাইনগর মাদ্রাসায় ভর্তি হয় বলে আমি জানি।’
ভাসাইনগর দারুল উলুম ইসলামিয়া মাদরাসার এক শিক্ষক নিশ্চিত করেন যে, লিমন প্রায় এক বছর আগে তাদের মাদ্রাসায় ভর্তি হয়েছে।
বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফুল কবির মুঠোফোনে বলেন, ‘লিমনকে যে ডাক্তার দেখেছেন, তিনি পরিষ্কার করে রোগের কথা লেখেননি। তবে মানসিক সমস্যা তো বটেই। সিজোফ্রেনিয়া মনে হচ্ছে। লিমনকে বোদা হাসপাতাল থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। মানসিক ডাক্তার দেখানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’
কেকে/এমএ