নাটোরের লালপুর উপজেলার কেশবপুর গ্রামে খলিশাডাঙ্গা নদীতে অপরিকল্পিত খননের ফলে গ্রামীণ সড়ক নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে ভাঙনের শঙ্কায় পড়েছে দুই শতাধিক পরিবার। গ্রামবাসী এখন বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) গত বছর কোটি টাকার প্রকল্প নিয়ে নদী খনন ও গাইড ওয়াল নির্মাণ করে। কিন্তু নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও নানা অনিয়মের কারণে ছয় মাসের মধ্যেই ওয়ালে ফাটল ধরে। এরপর আবারও ভেকু দিয়ে নদী থেকে অবৈধভাবে মাটি খনন করে ওয়ালের ব্যাক সিলিং ভরাট করায় ক্ষতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে। ফলে নদীপাড়ের প্রায় ২০০ পরিবার ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে। ইতিমধ্যে একটি বাড়িও ভাঙনের কবলে পড়েছে। এদিকে একমাত্র সড়ক নদীতে তলিয়ে যাওয়ায় ছোট যানবাহন গ্রামটিতে প্রবেশ করতে পারছে না।
স্থানীয়রা জানায়, ছোট যানবাহন গ্রামটিতে প্রবেশ করতে না পারায় ৫০ মিটার নদী পার হতে হলে ফসলি জমির কাঁদাপানি মাড়িয়ে প্রায় দেড় কিলোমিটার ঘুরে সড়কে উঠতে হচ্ছে। গ্রামবাসী নিজেদের উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে ঝুঁকি নিয়ে পায়ে হেঁটে চলাচল করছেন। শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের জন্য এটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোস্তাক আহম্মেদ ও আল-আমিন বলেন, ছোটবেলা থেকে দেখি বর্ষা ছাড়া নদীতে পানি থাকে না। তবুও বিগত সময়ে আওয়ামী লীগ নেতার ছত্রছায়ায় ও দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলীদের যোগসাজশে অপরিকল্পিত নদী খনন করা হয়েছে। এতে এবারের বর্ষায় নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। আমরা দ্রুত কার্যকরী প্রতিকার ব্যবস্থা চাই।
এর আগে, গত ২৭ মে 'নির্মাণের ছয় মাসেই গাইড ওয়ালে ফাটল, নদী ভাঙনের শঙ্কায় ২০০ পরিবার' শিরোনামে এনটিভি অনলাইনে সংবাদ প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট প্রকল্প শেষ না করেই কাজ বন্ধ করে দেয় বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে বাকি কাজ আর শেষ হয় নি।
এ বিষয়ে বিএমডিএ’র বড়াইগ্রাম জোন (লালপুর) উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবুল বাসার স্বীকার করেছেন, বর্ষার আগে নিয়মবহির্ভূত ভাবে নদী থেকেই মাটি খনন করে ওয়ালের ফাঁকা জায়গা ভরাট করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, রাস্তা বিলীন হওয়ায় আপাতত বিকল্প ব্যবস্থা নিতে হবে। বর্ষা শেষে স্থায়ী সমাধানের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান বলেন, প্রকল্প বন্ধের বিষয়টি সমন্বয় সভায় আলোচনার জন্য উপস্থাপন করা হবে। পাশাপাশি পৌরসভা থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
কেকে/ আরআই