অশ্লীল স্লোগানধারী ও প্রচারকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা এখন সময়ের দাবি বলে মন্তব্য করেছেন সিনিয়র সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আনোয়ার চৌধুরী।
তিনি মনে করেন, অশ্লীল স্লোগানধারী ও প্ল্যাকার্ড বহনকারীরা যতোটা অপরাধী, তার চেয়েও বেশি অপরাধী অশ্লীল স্লোগান, শব্দ, অশ্লীল ছবি ও প্ল্যাকার্ডের প্রচারকারীরা। সমাজের শুদ্ধতার স্বার্থে অশ্লীলতাকে ‘না’ বলতে সমাজের সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) নিজের ভেরিফাইড ফেইসবুক প্রোফাইলে এক স্ট্যাটাসে আনোয়ার চৌধুরী এই অভিমত ও আহ্বান জানান।
স্ট্যাটাসে আনোয়ার চৌধুরী উল্লেখ করেছেন, ‘প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে অশ্লীল স্লোগান, অশ্লীল পোস্টার-ব্যানার ও প্ল্যাকার্ডই যেনও ধীরে-ধীরে বৈধতা পেয়ে যাচ্ছে পরিবর্তিত বাংলাদেশে। শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রশাসন অশ্লীল স্লোগানের বিষয়ে এখনও নীরব। বরং তার প্রশাসনের লোকজন দাঁড়িয়ে-দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছে অশ্লীল স্লোগানধারী ও প্ল্যাকার্ড বহনকারীদের। আর আমাদের কোনো-কোনো গণমাধ্যম সংবাদ কাভারের নামে অশ্লীল বক্তব্য স্বম্বলিত ছবি প্রকাশ করে নিজেদের অনলাইন পোর্টালের প্রচার বাড়াচ্ছে, ভিউ ব্যবসায় মনোযোগ দিয়েছে।’
জ্যেষ্ঠ এই সাংবাদিকের মতে, ‘অশ্লীল স্লোগানের বিরুদ্ধে রাজনীতিক থেকে শুরু করে বুদ্ধীজীবী, মানবাধিকারকর্মী, শিক্ষক, সমাজসংস্কারসহ গণমাধ্যমের কর্মী—কোনো পক্ষ থেকেই জোরালো প্রতিবাদ দেখা যাচ্ছে না। আকারে-ইঙ্গিতে যারা কিছুটা প্রতিবাদ করছেন, প্রতিবাদের নামে তাদের অনেকই অশ্লীল শব্দগুলো ব্যবহার করে অশ্লীলতাকে আরও ছড়িয়ে দিচ্ছেন।
আনোয়ার চৌধুরী বলেন, ‘কষ্ট লাগে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি গোলাম মাওলা রনির প্রতিবাদের ভাষা দেখেও। ফেইসবুক স্ট্যাটাসে প্রতিবাদের নামে তিনি নিজেই অশ্লীল শব্দগুলো ব্যবহার করেছেন। রনিদের মতো আরও অনেকেই আছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, যাদের প্রতিবাদটাও অশ্লীলতাপূর্ণ। যেনও তাদের টার্গেট ভিউ, লাইক আর কমেন্ট। ভাবটা এমন, সমাজ গোল্লায় যাক, তাতে তাদের কিছু যায় আসে না। শুধু লাইক, কমেন্ট আর ভিউ বাড়লেই চলবে। এই হলো আমাদের পরিবর্তিত বাংলাদেশ!’
স্ট্যাটাসে আনোয়ার চৌধুরী লিখেছেন, ‘অশ্লীল স্লোগান আর হাতে লেখা প্ল্যাকার্ডের সর্বশেষ প্রদর্শনীর দেখা মিলেছে ২৫ আগস্ট ঢাকার সেগুনবাগিচায়। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমানের গ্রেফতারের দাবিতে তার বাসার সামনে ওইদিন গুটিকয়েক তরুণ-তরুণী অশ্লীল স্লোগান দিয়েছে। একজন তরুণীর সামনে ছিল অশ্লীলতাপূর্ণ প্ল্যাকার্ড। তাদের পাহাড়া দিয়েছে প্রশাসন, যেনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।
তিনি আরো উল্লেখ করেন, এর আগে পুরান ঢাকার ভাঙারি ব্যবসায়ী খুনের পর ঢাকায় অশ্লীল স্লোগান হয়েছে খোদ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধেও। এখনও এইসব অশ্লীলতার বিষয়ে প্রশাসন আইনগত কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে বলে শুনিনি। বিএনপি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতাকে নিয়ে প্রকাশ্যে অশ্লীল স্লোগানধারীদের বিরুদ্ধে দলটির কোনো নেতা কিংবা কর্মী আইনগত উদ্যোগ নিয়েছে, এমন কথাও শোনা যায়নি। পরিণতিতে অশ্লীলতার ধারক-বাহকরা এখন বেপরোয়া।
কেকে/এজে