উজানের ঢল ও বৃষ্টির কারণে লালমনিরহাটে তিস্তাসহ ২৬টি নদ-নদীর পানি বেড়ে গিয়েছিল, যার ফলে চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। যদিও বর্তমানে পানি কমছে, তবুও নদীভাঙন নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা। এছাড়াও নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হওয়ায় সেখানকার মানুষদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
রোববার (৩ আগস্ট) গভীর রাতে তিস্তার পানি বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও সোমবার সকাল থেকে তা কমে বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বর্তমানে সব নদ-নদীর পানি বিপদসীমার নিচে রয়েছে।
ভাঙন আতঙ্কে নদীপাড়ের মানুষ
পানি কমলেও তিস্তা নদীর বিভিন্ন স্থানে নদীভাঙন দেখা দেওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। বসতভিটা, আবাদি জমি ও অন্যান্য স্থাপনা ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে। অনেক জায়গায় নদীপাড়ের বাসিন্দারা নিজেদের উদ্যোগে বালুভর্তি বস্তা ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছেন।
কালীগঞ্জের ভোটমারী এলাকার কৃষক রহমত জানান, তিস্তার পানি বাড়ায় তাদের এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। এর ফলে শত শত বসতভিটা, রাস্তাঘাট এবং ফসলিজমি ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। তিনি বলেন, গতকাল রাত থেকে আমরা নিজেরাই বস্তায় বালু ভরে নদীভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছি।
আদিতমারীর গোবর্ধান গ্রামের কৃষক সহিদার রহমান বলেন, নদীর পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়লেও সোমবার সকাল থেকে তা কমতে শুরু করেছে। তবে নদীপাড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে, যা তাদের বসতভিটা ও ফসলি জমির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলার নিচু এলাকাগুলোতে পানি ঢুকে পড়ায় প্রায় ৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এ কারণে বেশকিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার জানিয়েছেন, উজানের বালু ও পলি জমে তিস্তার বুক ভরাট হয়ে যাওয়ায় সামান্য পানি বাড়লেই তা উপচে পড়ে। তিনি জানান, এখনো বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তবে ভাঙন নিয়ে যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, সেদিকে তারা নজর রাখছেন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, যেকোনো বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসনের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।
কেকে/এএস