চলছে আষাঢ় মাস। দিনভর হচ্ছে বৃষ্টি। কখনো ভারী বর্ষণ কখনো গুড়ি গুড়ি। গত কয়েক দিনের অতিমাত্রার বৃষ্টিপাতে তলিয়ে গেছে আমন ধানের বীজতলা। তাই আমন চাষ নিয়ে চাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। আশেপাশের এলাকা থেকে খোলা প্রতি ৫শ থেকে ৬শ দিয়ে ধানের চারা ক্রয় করে আমন ধান রোপনের কাজ সারছেন ক্ষুদ্র চাষিরা। তবে আমনের চাষাবাদ নিয়ে চিন্তায় দিন পার বড় ও মাঝারি চাষিরা।
সরেজমিনে উপজেলার তাড়খড়ি, বুনাগাতী, ধনেস্বরগাতী, শতখালীসহ কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, ৫-৭ ইঞ্চি লম্বা ধানের চারা পানির নিচে তলিয়ে গেছে, কোথাও কোথাও সদ্য তৈরী করা বীজতলার পুরোটাই পানির নিচে, কোথাও আবার চারা ধানের মাথাটুকু শুধু জেগে আছে। তবে বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ায় তা নিয়েও শঙ্কিত চাষিরা। তলিয়ে যাওয়া চারা ধান বাঁচাতে ডিস বা গামলা দিয়ে নিজ জমির পানি অপসারণে ব্যস্ত সময় পার করছেন অনেকে।
এদিকে আষাঢ়ের এ টানা বৃষ্টিতে সদ্য রোপন করা ধানী জমিও তলিয়ে গেছে কয়েক জায়গায়। পানি দ্রুত অপসারিত না হলে বীজতলা এবং ধানি জমি ক্ষতির মুখে পড়বে বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল। উপজেলা সদর আড়পাড়া ইউনিয়নের পুকুরিয়া গ্রামের তোবারেক মোল্যা বলেন, এ বছর চার একর জমিতে আমন ধান রোপনের চিন্তা করেছি কিন্তু কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ২ শতক জমির ধানের বীজতলা তলিয়ে গেছে যা বা একটু বেঁচে আছে তা দিয়ে চার ভাগের এক ভাগ জমিতে রোপন করা যাবে বাকিটা নিয়ে চিন্তায় আছি।
একই ইউনিয়নের দিঘী গ্রামের রতন বিশ্বাস বলেন, ৮ বিঘা জমিতে আমন ধান লাগাবো বলে বীজতলা তৈরি করেছিলাম কিন্তু গত দুদিনের বৃষ্টিতে ৪ শতক জমির বীজতলায় পানি বেঁধে গেছে ফলে পুরো জমিতে লাগাতে পারবা কি না বুঝতে পারছি না। তাছাড়া বাইরের এলাকা থেকে যে পাতো আনব, সব জায়গায় বৃষ্টিপাত হওয়ায় তাই সম্ভব হচ্ছে না।
তালখড়ি ইউনিয়নের ছান্দড়া গ্রামের চাষি ফিরোজ বিশ্বাস বলেন, এ বছর সাড়ে তিন বিঘা জমিতে চাষ করার চিন্তা করেছি কিন্তু বীজতলা তলিয়ে যাওয়ায় বাইরের বিভিন্ন এলাকা থেকে বেশি দামে পাতো (ধানের চারা) কিনতে হচ্ছে ফলে পুরোটা লাগাতে পারবো কি না বলতে পারছিনা।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা, এবছর ১৪ হাজার ৫৮১ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে যা গত বছরের চেয়ে ৩১ হেক্টর বেশি। এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৩ শত ৪০ হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপন করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবুল হাসনাত বলেন, এক সপ্তাহে ১২৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ভারী বৃষ্টি যদি আর না হয় তবে যা হয়েছে তাতে খুব একটা ক্ষতি হবে না বলে জানান তিনি। পাশাপাশি শালিখা উপজেলা ধান চাষের জন্য উপযুক্ত হওয়ায় অধিকাংশ কৃষক ধান চাষ করে থাকেন। এছাড়াও ধান চাষে বর্তমানে বেশি লাভ হওয়ায় কৃষকগন আমন ধান আবাদে আগ্রহী হচ্ছেন।
কেকে/ এমএস