কেশবপুরে নিহত যুবদল নেতার পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ। নিহত মনিরুলের পরিবারকে দেখতে যান ত্রিমোহিনী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আকরাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ আলমগীর কবীর ডালুসহ নেতৃবৃন্দ। এ সময় নিহত যুবদল নেতার পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে নিহত যুবদল নেতা মনিরুলের পরিবারকে দেখতে যান ত্রিমোহিনী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আকরাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ আলমগীর কবীর ডালু।
অনেক দূর থেকে দেখা যাচ্ছিল নিহত মনিরুল ইসলামের বাড়িতে মানুষের ভিড়। বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন বয়সি নারী-পুরুষ। কেউ কবরের পাশে, কেউ মাটির রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন। স্বজনদের কেউ আহাজারি করছেন, কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে যশোরের কেশবপুর উপজেলার বরনডালি গ্রামে নিহত যুবদল নেতা মনিরুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে এই দৃশ্য দেখা যায়।
হত্যাকাণ্ডর ৫ দিন অতিবাহিত হয়েছে। তার স্বজনদের আহাজারি থামেনি। জনপ্রতিনিধি বা গণমাধ্যম কর্মী বা শহর থেকে কেউ বাড়িতে ঢুকলেই তারা আসামিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছেন। মনিরুল ইসলাম কেশবপুর থানা যুবদলের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তিনি উপজেলার ত্রিমোহিনী ইউনিয়নের বরনডালি গ্রামের আলী বক্সের ছোট ছেলে।
তার মেঝভাই মিজানুর রহমান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছিলেন, আমাদের সবার ছোট ভাইকে নির্মমভাবে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলল। আমি খুনি সবুজের ফাঁসি চাই। আমার ভাইকে দেখতে সারা উপজেলার মানুষ বাড়ি ভিড় করছে। তাদের প্রতিবাদই প্রমাণ করে, আমার ভাই ভালো মানুষ ছিল।
তিনি অভিযোগ করেন, যুবলীগ নেতা সবুজ এক বছর আগে জাকিরের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ধার নেয়। গত ১৭ জুন বিকালে আমার বড় ভাই হাসান ডাক্তারের রড সিমেন্টের দোকানের সামনে সবুজের কাছে সেই টাকা চায় জাকির। সেখানে মনিরুলও উপস্থিত ছিল। এ সময় সবুজ ক্ষিপ্ত হয়ে লোহার বাকা রড দিয়ে জাকিরের মাথায় বাড়ি মারতে গেলে আমার ভাই মনিরুল ঠেকাতে যায়। সেই রড দিয়ে সবুজ তার মাথায় আঘাত করে। সঙ্গে সঙ্গে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে জ্ঞান হারায়। তাকে কেশবপুর হাসপাতালে নেওয়া হলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। ১৮ জুন সকালে মনিরুলের মৃত্যু হয়।
মনিরুলের স্ত্রী জুঁই বেগম বলেন, ৬ বছরের মেয়ে রোজা, ৪ বছরের ছেলে মিরাজ ও দেড় বছরের মেয়ে আয়শাকে রেখে আমার স্বামী মারা গেছে। আমি এখন এদের ভরণ-পোষণ জোগাব কীভাবে? তার একমাত্র ছেলে মিরাজ পিতা হত্যার দ্রুত বিচারসহ ঘাতকদের ফাঁসির দাবি জানায়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সবুজ পুলিশের এসপি সার্কেলের নাম ভাঙিয়ে ভিন্ন মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বর্তমান সময়েও সে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে চায় বলেই সে মনিরুলকে হত্যা করে।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০/১২ জনের নামে কেশবপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওই রাতেই ঘাতক সবুজ, তার পিতা মোশারফ হোসেন ও লিটনকে আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে। অন্য আসামিদের আটকে অভিযান অব্যাহত আছে বলে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শামীম জানান।
কেকে/এএস