মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫,
৩ আষাঢ় ১৪৩২
বাংলা English

মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
শিরোনাম: মুশফিক-শান্তর ফিফটিতে স্বস্তিতে বাংলাদেশ      জ্বালানি তেলের দাম আপাতত বাড়ছে না: অর্থ উপদেষ্টা      সচিবালয়ে অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত      পোশাক খাতে নতুন চ্যালেঞ্জ      ভোটের আগেই হচ্ছে বৃহত্তর ইসলামি ঐক্য      তেল আবিব ও হাইফায় নতুন ধাপে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে ইরান      ৮ অঞ্চলে ঝড়ের আভাস      
গ্রামবাংলা
প্রেম ও ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে স্কুলছাত্রী খুন, ঘাতক জুনেল গ্রেফতার
এহসান বিন মুজাহির, মৌলভীবাজার
প্রকাশ: সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫, ৪:২৪ পিএম
ছবি: খোলা কাগজ

ছবি: খোলা কাগজ

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজারে স্কুলছাত্রী নাফিসা জান্নাত আনজুম (১৫) হত্যার ২৪ ঘণ্টার ভেতরেই চাঞ্চল্যকর ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও অভিযুক্ত ঘাতক মো. জুনেল মিয়াকে (৩৯) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আলামত হিসেবে ভিকটিমের পরিহিত বোরকা, স্কুল ব্যাগ, বই ও একটি জুতা উদ্ধার করা হয়েছে।

সোমবার (১৬ জুন) দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মৌলভীবাজার জেলার পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

স্কুলছাত্রী নাফিসা জান্নাত আনজুমের সঙ্গে সখ্যতা ও ধর্ষণ করার উদ্দেশ্য ব্যর্থ হওয়ায় শ্বাসরোধ করে হত্যা করে অভিযুক্ত ঘাতক মো. জুনেল মিয়া। রোববার ঘাতককে গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করেছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নোবেল চাকমা, কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম আপছার, কুলাউড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সুদীপ্ত শেখর ভট্টচার্য।

প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার বলেন, স্কুলছাত্রী নিখোঁজের দুদিন পর ঘন ঝোপ থেকে তার অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধারের পর হত্যা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সমন্বয়ে কয়েকটি টিম গঠন করি। পুলিশের টিমের তৎপরতা, স্থানীয় লোকজনের বক্তব্য, আলামত উদ্ধারের জায়গা এবং নারীঘটিত কিছু বিষয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা দেখে সন্দেহ হওয়ায় আমরা জুনেল মিয়াকে আটক করি।

পরবর্তীতে তার মোবাইল চেক করে পর্ন সাইটে ব্রাউজিং এর তথ্য দেখে আমাদের সন্দেহ আরো বাড়ে। পরবর্তীতে আমরা তাকে রোববার দুপুর থেকে রাত প্রায় ১২টা পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করি। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে রাত ১২টার দিকে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে।

ঘাতক জুনেল জানায়, ভিকটিম তার বাড়ির সামনের একটি রস্তা দিয়ে প্রায়ই স্কুল ও প্রাইভেটে আসা যাওয়া করত। সেই সুবাদে জুনেল মিয়া ভিকটিমের সখ্যতা গড়ে তোলার চেষ্টা করে। ঘটনার দিন গত ১২ জুন ভিকটিম পাশের গ্রামে প্রাইভেট পড়া শেষে আসামির বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে ফেরার পথে সকাল অনুমান সাড়ে ১০টার সময় আসামি ভিকটিমের সঙ্গে কথা বলতে বলতে তার পিছু নেয়।

ভিকটিম এড়িয়ে যেতে চাইলে জুনেল মিয়া ভিকটিমকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে। তখন ভিকটিম চিৎকার করলে জুনেল মিয়া তার হাত দিয়ে গলায় চাপ দিয়ে ধরলে ভিকটিম ঘটনাস্থল করিম শাহ মাজারের মধ্যের রাস্তয় অচেতন হয়ে পড়ে। এরপর ভিকটিমকে মোকাম সংলগ্ন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া ছড়ার পাড়ে ঝোপে ফেলে রাখে। মোকামের মাঠে পড়ে থাকা ভিকটিমের স্কুল ব্যাগ ও একটি জুতা ঘটনাস্থলের নিকটবর্তী ঘন ঝোপে ফেলে দেয় এবং ভিকটিমের পরিহিত বোরকাটি নিকটবর্তী করিম শাহ মাজারের উত্তর পাশে জনৈক রওশন আলী গংয়ের পারিবারিক কবরস্থানের সীমানা বাউন্ডারি পার করে ছুড়ে ফেলে দেয়। পুলিশ আসামির  দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রোববার দিবাগত রাতে স্থানীয় লোকজন এবং মিডিয়ার উপস্থিতিতে ভিকটিমের সেই বোরখা উদ্ধার করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ১২ জুন সকাল ৭টায় পাশের সিংগুর গ্রামে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হয় ভিকটিম নাফিসা। এ ঘটনায় কুলাউড়ায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে তার পরিবার। এর দুই দিন পর গত ১৪ জুন বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটে বাড়ির পাশের ছড়ার পাশে দুর্গন্ধ পেয়ে ভিকটিমের ভাই ও মামা নাফিসার অর্ধগলিত মরদেহটি খুঁজে পান এবং পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে লাশের সুরতহাল প্রস্তুত করে এবং ময়নাতদন্তেদর জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় থানায় ভিকটিমের পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি হত্যা মামলা রুজু করা হয়।

ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নোবেল চাকমা, কুলাউড়া সার্কেলের (অতিরিক্ত দায়িত্বে) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজমল হোসেন, কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম আপছার, পুলিশ পুরিদর্শক সুদীপ্ত ভট্টাচার্যসহ একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। দ্রুততম সময়ে ঘটনার রহস্য উদঘাটনের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল (অতি. দায়িত্বে কুলাউড়া সার্কেল) নেতৃত্বে কুলাউড়া থানার অফিসারদের নিয়ে কয়েকটি বিশেষ টিম গঠন করে আশেপাশের বাপক তল্লাশি করা হয়।

এ সময় ঘটনাস্থলের পাশে একটি ঝোপ থেকে ভিকটিমের স্কুল ব্যাগ, বই এবং একটি জুতা উদ্ধার করা হয়। পুলিশ সুপার বলেন, আমরা শুধু স্থানীয় লোকদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিশেষ ৬টি টিম গঠন করি। হত্যার শিকার নাফিসা জান্নাত আনজুম (১৫)  উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের  শেরপুর গ্রামের বাসিন্দা। সে শ্রীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল

কেকে/এএস

মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

নোংরা পরিবেশে খাদ্যপণ্য উৎপাদনের দায়ে ৩ বেকারিকে জরিমানা
মুশফিক-শান্তর ফিফটিতে স্বস্তিতে বাংলাদেশ
ঈশ্বরগঞ্জে গরু-ছাগল ও বসতঘর লুটপাট
টঙ্গী মাজার বস্তিতে যৌথ অভিযান, গ্রেফতার ২৪
জ্বালানি তেলের দাম আপাতত বাড়ছে না: অর্থ উপদেষ্টা

সর্বাধিক পঠিত

আক্কেলপুরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় অফিস সহকারীর মৃত্যু
লালপুরে আ.লীগ নেতা মঞ্জু হত্যার প্রধান আসামি গ্রেফতার
আগামী নির্বাচন হবে প্রতিযোগিতামূলক: পলাশ
‘অভিযোগ প্রমাণের আগে পাবলিক ট্রায়াল দুদকের কাজ হতে পারে না’
বাবার স্বপ্ন পূরণ করেছি, এখন মানুষকে সেবা দিতে চাই : ডা. আব্দুর রাজ্জাক

গ্রামবাংলা- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2024 Kholakagoj
🔝
close