শুক্রবার, ২২ আগস্ট ২০২৫,
৭ ভাদ্র ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

শুক্রবার, ২২ আগস্ট ২০২৫
শিরোনাম: ফের পিএস বিতর্কে আসিফ      ভাগ পেতেন ডিসি-এসপিরাও      রাজস্ব খাতের নেতৃত্ব দেবেন অভিজ্ঞরাই      ইতা‌লির প্রধানমন্ত্রী মেলোনির ঢাকা সফর বাতিল      সাগর-রুনির পরিবারকে বুঝিয়ে দেয়া হলো রাজউকের প্লট      মহানবী (সা.) এর সিরাতই তরুণদের চরিত্র গঠনের রোল মডেল: ধর্ম উপদেষ্টা       নারীর জন্য নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি টেকসই উন্নয়ন অর্জনের জন্য জরুরি      
দেশজুড়ে
‘চরেই জন্ম, চরেই মরতে চাই’
চরবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দাবি
ইলিয়াস বসুনিয়া পবন, হাতীবান্ধা (লালমনিরহাট)
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১২ জুন, ২০২৫, ৫:৫৮ পিএম

৯০ বছরের সোনাভান বেওয়া ব্রহ্মপুত্র নদের চরেই জন্মেছেন, বড় হয়েছেন এবং এখানেই বিয়ে হয়েছে তার। চরের মাটিই তার জীবনের সব। তবু জীবনের সব প্রিয় কিছুই ধীরে ধীরে হারিয়ে গেছে—স্বামী মোজা মিয়ার কবর আজ ব্রহ্মপুত্রের পেটে, বাবা-মা ও আত্মীয়দের কবরেরও কোনো চিহ্ন নেই।

ছবি : খোলা কাগজ

ছবি : খোলা কাগজ



‘কবরগুলো নাই, ওইখানে গেলে বুকটা ফাইটা যায়’, ভেজা চোখে এ কথা বলেন তিনি। চরজীবনের কষ্ট সত্ত্বেও চরই তার সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়।

তিনি জানান, জীবনে ১৭–১৮ বার তাকে বসতভিটা বদলাতে হয়েছে। এক চর থেকে আরেক চরে—প্রতিবার শুরু করতে হয়েছে নতুন করে। তবু চর ছাড়তে মন চায় না, ‘চরেই জন্ম, চরেই মরতে চাই’।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের পোড়ার চরের সোনাভান বেওয়ার মতো অনেকেই চর আঁকড়ে ধরে বেঁচে আছেন নানা কষ্টে।

ছবি : খোলা কাগজ

ছবি : খোলা কাগজ


চরজীবনের নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও এখানকার মানুষ কিছু মৌলিক সুখ খুঁজে পান। সোনাভানের বড় ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৭০) বলেন, বন্যা-ভাঙনে ঘর হারাই, জমি হারাই। কিন্তু বন্যার পর চরজমিতে পলিতে যা ফসল হয়, তা দেখলে প্রাণ জুড়িয়ে যায়।

তিনি আরো বলেন, চরের মানুষদের এক মৌলিক জীবন—নদী, মাঠ আর পরিশ্রমে গড়া। খাদ্যাভ্যাসও সহজ—ভাত, রুটি, শাকসবজি আর নদীর মাছেই চলে যায় দিন। শহরের পণ্যের প্রতি তেমন চাহিদা নেই বললেই চলে।

লালমনিরহাটের তিস্তাপাড়ের চর হরিণচড়ার দিনমজুর মফিদুল ইসলাম (৫০) গত বছর পরিবারের সবাইকে নিয়ে শহরে গিয়েছিলেন—ভেবেছিলেন সেখানেই থাকবেন। কিন্তু দুই মাস রিকশা চালিয়ে দিন চলে না দেখে ফিরে এসেছেন চরে।

তিনি আরো বলেন, চরের কষ্ট কষ্ট না। ওটাই আমাদের অভ্যাস। আমাদের কোনো সম্পদ নেই ঠিকই; কিন্তু অসুখ-বিসুখও কম। তাই আমরা সুখেই আছি।

চর এলাকায় বর্তমানে অনেক পরিবার গবাদিপশু পালন করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

চর নিয়ে কাজ করেন এনজিও কর্মী আহসানুল কবীর বুলু। তিনি বলেন, আমরা অনেকবার চরের মানুষকে মূল ভূখণ্ডে নিয়ে আসার প্রস্তাব দিয়েছি। কিন্তু কেউই রাজি হননি। কারণ তারা জানে, শহরে তাদের কাজের সুযোগ নেই, নেই পরিচিত পরিবেশ।

তিনি আরো বলেন, চরের মানুষকে চরে রেখেই শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে সচেতন করতে হবে। আর তাদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি সহায়তা যেন যথাযথভাবে পৌঁছে যায়, সেটি নিশ্চিত করা দরকার।

কুড়িগ্রাম চর উন্নয়ন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বেবু জানান, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও গঙ্গাধর নদীর বুকে ৫০০টি চরে ছয় লক্ষাধিক মানুষ বসবাস করছেন। প্রতিটি চরে ১৫০ থেকে ৪০০ পরিবার রয়েছে, যাদের মূল জীবিকা কৃষিকাজ ও পশুপালন।

বন্যা, খরা, নদীভাঙনের ভেতর দিয়েই তারা জীবন কাটান। তবু এই সংগ্রামী মানুষগুলো তাদের অস্তিত্ব ও শান্তির আশ্রয় খুঁজে পান চরেই। চরের মানুষের ভাগ্যের উন্নতি হয়নি। এসব মানুষের ভাগ্যের উন্নতির জন্য একটি পৃথক মন্ত্রণালয় দরকার। এজন্য আমরা চরবিষয়ক মন্ত্রণালয় দাবি করে আসছি অনেকদিন ধরে।

কেকে/এএম
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

ফের পিএস বিতর্কে আসিফ
ভাগ পেতেন ডিসি-এসপিরাও
রাজস্ব খাতের নেতৃত্ব দেবেন অভিজ্ঞরাই
কুমিল্লায় চাঁদাবাজি করতে গিয়ে গণপিটুনিতে যুবক নিহত
খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে শ্বশুরের বিরুদ্ধে পুত্রবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ

সর্বাধিক পঠিত

মদনে স্ত্রীর নির্যাতন মামলায় সাবেক কমিশনার গ্রেফতার
শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কৃষি সংস্কার ও খাদ্য নিরাপত্তার অভিযাত্রা
জয়পুরহাটে বজ্রপাতে আলু ব্যবসায়ীর মৃত্যু
নীলফামারীতে বালিকাদের ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত
‘আমি সিক্স পার্সেন্টে কাজ করেছি’, উপদেষ্টা আসিফের প্রেস সেক্রেটারির অডিও ফাঁস

দেশজুড়ে- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close