উজানের ঢল আর টানা বৃষ্টির কারণে চলনবিল অধ্যাসিতু সিরাজগঞ্জের তাড়াশে শতশত কৃষকের পাকা ধান পানির নিচে। পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় পাকা বোরো ধান মাঠ থেকে ঘরে তুলতে পারছে না কৃষকরা। কোথাও নুয়ে পড়ছে, আবার কোথাও উপায় না পেয়ে আধা পাকা ধান কেটে নিচ্ছেন। এদিকে বৃষ্টির কারণে শ্রমিক সঙ্কটেও পড়তে হয়েছে তাদের। শ্রমিকের অভাবে পাকা ধান ঘরে তুলতে পারছে না। ফসলি জমিতেই নষ্ট হচ্ছে ধান। বৃষ্টির পানি ও উজানে পাহাড় ঢলে ধানে পচন ধরার আশঙ্কা করছে কৃষকরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলায় গত কয়েক দিন থেকে ভারী বৃষ্টিতে ফসলি জমিতে দাঁড়িয়ে থাকা পাকা ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে। কোথাও কোথাও পানিতে তলিয়ে গেছে ধান। বিলে পানি বাড়ায় ব্রি-২৯ জাতের ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত রয়েছেন কৃষক। কেউ হাঁটুপানি, কেউ কোমরপানিতে নেমে ধান কাটছেন। এসব ধান পরিবহনে ব্যবহৃত হচ্ছে নৌকাসহ ভাসমান কলাগাছের ভেলা।
অনেক জমিতে কৃষকরা ধান কেটে বেঁধে জমিতে রাখার পর এখন বৃষ্টির পানিতে ভাসছে। আধা পাকা ধান বৃষ্টি পরিস্থিতির কারণে বাধ্য হয়ে কেটে ফেলছেন। এতে ফলন বিপর্যয় দেখা দিয়েছে বলে জানান কৃষকরা। পানির নিচে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে ধান। ফলে শত শত কৃষক এখন দিশাহারা হয়ে পড়ছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যে ৯৩ ভাগ বোরো ধান কাটা ভালোভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে বিলের নিম্নাঞ্চলের নাবি জাতের ধান নিয়ে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সব ধান কাটা সম্পন্ন হবে।
তাড়াশ উপজেলার হামকুড়িয়া গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের এলাকার কৃষকেরা সরিষা আবাদ করার পর ব্রি-২৯ জাতের ধান লাগায় । এই কারনে ধান পাকতে সময় লাগে কিন্তু এবছর টানা বৃষ্টি আর আগাম পানি আসায় ফসলি জমি ডুবে যাচ্ছে দ্রুত। আমি ১০ বিঘা জমিতে বোরো ধান লাগিয়েছি। এখন পর্যন্ত পাঁচ বিঘা কেটেছি। বাকিগুলো এখনো কাটতে পারিনি। এখন শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। বিঘা প্রতি সাত থেকে আট হাজার টাকা দাম দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না তাই ফলন ভালো হলেও এবার খুব লসের মুখে পড়তে হবে।
তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ইতিমধ্যে ৯৩ ভাগ বোরো ধান কাটা ভালোভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে বিলের নিম্নাঞ্চলের নাবি জাতের ধান নিয়ে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সব ধান কাটা সম্পন্ন হবে।
কেকে/ এমএস