গাজা সিটি দখলে অভিযান শুরু করেছে ইসরাইলি সেনবাহিনী। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরাইলি হামলায় একদিনে আরো ৮১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার ভোর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলি হামলা ও অনাহারে অন্তত ৮১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
একইসঙ্গে ইসরাইলি সেনারা জানিয়েছে, তারা গাজার সবচেয়ে বড় নগরকেন্দ্র গাজা সিটি দখলের লক্ষ্যে অভিযানের প্রথম ধাপ শুরু করেছে। সেখানে এখনো প্রায় ১০ লাখ মানুষ ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আটকে আছেন।
এদিকে শুধু বুধবারই ক্ষুধায় মারা গেছেন আরো তিন ফিলিস্তিনি। এ নিয়ে অনাহারের কারণে উপত্যকাটিতে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ২৬৯ জনে, যাদের মধ্যে ১১২ জন শিশু।
আল জাজিরা বলছে, ইসরাইলি হামলার মধ্যে দক্ষিণ গাজার এক তাঁবুতে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুতদের ওপর হামলায় নিহত হন তিনজন। দক্ষিণ গাজায় ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ফিলিস্তিনি জাতীয় বাস্কেটবল দলের সাবেক তারকা খেলোয়াড় মোহাম্মদ শালান। ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে শুধু বুধবারই অন্তত ৩০ জন ত্রাণ প্রত্যাশী নিহত হয়েছেন।
গাজায় খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া এবং লাগাতার সামরিক হামলার কারণে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ নেমে এসেছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) সতর্ক করেছে, ইসরাইলি অবরোধ চলায় গাজায় অপুষ্টি মারাত্মকভাবে বেড়ে যাচ্ছে। সংস্থাটি বলেছে, ‘এটি কেবল ক্ষুধা নয়, এটি হচ্ছে অনাহার।’
ডব্লিউএফপি জানিয়েছে, অপুষ্টি হলো এক ‘নীরব হত্যাকারী’ যা আজীবন শারীরিক ক্ষতি করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে এবং সাধারণ অসুখকেও প্রাণঘাতী করে তোলে।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, গাজা সিটির প্রায় প্রতি তিন শিশুর মধ্যে একজন এখন অপুষ্টিতে ভুগছে।
ইসরাইলি মানবাধিকার সংগঠন গিশা বলেছে, ইসরাইলি সরকার একের পর এক মিথ্যা যুক্তি দাঁড় করিয়ে গাজায় অনাহারের জন্য দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে। যদিও বাস্তবে শুরু থেকেই ইসরায়েল ত্রাণ প্রবেশে বাধা দিয়ে এটিকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।
এদিকে ইউএনআরডব্লিউএ আবারও অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে বলেছে, গাজায় তাদের কর্মীরা ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে কাজ করছেন। গাজায় কর্মরত চিকিৎসক ডা. হিন্দ বলেন, ‘আমরা বিপর্যয়কর পরিস্থিতির মধ্যে কাজ করছি।’
কেকে/এআর