উজানের ঢলে সিলেটের নিম্নাঞ্চলে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং, কোম্পানীগঞ্জ এবং কানাইঘাট উপজেলার নিম্নাঞ্চলে প্লাবন দেখা দিয়েছে। স্থানীয় লোকজন জানান, জাফলংয়ে হঠাৎ করে পাহাড়ি ঢল নেমে পিয়াইন নদীতে প্রবল স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে। এতে জাফলংয়ের জিরো পয়েন্টসহ আশপাশের এলাকায় প্লাবন দেখা দিয়েছে।
নদীর পানি প্রবল বেগে প্রবাহিত হওয়ায় নদীতীরবর্তী এলাকায় ভাঙন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এসব এলাকায় বহু কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। এরই মধ্যে জাফলংয়ে সব ধরনের পর্যটন কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।
এদিকে গত চব্বিশ ঘণ্টায় সিলেট বিভাগে অতিভারী বর্ষণ হয়েছে। এতে বিভাগের সবকটি নদ-নদীর পানি বাড়ছে, তবে এখনো নদীগুলোর পানি বিপদসীমার নিচে অবস্থান করছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের তথ্যমতে, আজ (মঙ্গলবার) সকাল ৯টা পর্যন্ত তার পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার লালাখালে ২১৬ মিলিমিটার, গোয়াইনঘাটের জাফলংয়ে ১৩৬ মিলিমিটার, সিলেট শহরে ৯২ মিলিমিটার, সুনামগঞ্জ শহরে ১৬৫ এবং সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের লাউড়ের গড়ে ১৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
একই সময়ে সুরমার পানি কানাইঘাট পয়েন্টে ৩০ সেন্টিমিটার, সিলেট পয়েন্টে ৩৭ সেন্টিমিটার, সুনামগঞ্জের ছাতক পয়েন্টে ৩৬ সেন্টিমিটার ও সুনামগঞ্জ শহর পয়েন্টে ৪৪ সেন্টিমিটার বেড়েছে।
অন্যদিকে কুশিয়ারা নদীর পানি জকিগঞ্জের অমলশীদ পয়েন্টে ২৪ সেন্টিমিটার, বিয়ানীবাজারের শেওলা পয়েন্টে ৪১ সেন্টিমিটার ও মৌলভীবাজারের শেরপুরে ৪২ সেন্টিমিটার বেড়েছে।
মনু নদীর পানি মৌলভীবাজার পয়েন্টে ২২ সেন্টিমিটার, পিয়াইন নদীর পানি জাফলং পয়েন্টে ১০২ সেন্টিমিটার, সারিগোয়াইন নদীর সারিঘাট পয়েন্টে ৮৯ সেন্টিমিটার এবং গোয়াইনঘাট পয়েন্টে ৬০ সেন্টিমিটার বেড়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে আগামী তিনদিন সুরমা-কুশিয়ারাসহ সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসাইন জানান, সিলেট ও ভারতের মেঘালয় অঞ্চলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। সিলেটের আকাশে এখনো প্রবল মেঘ জমে আছে এবং বৃষ্টিপাত আরো কিছুদিন অব্যাহত থাকবে। এর ফলে নদীতে পানি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে।
কেকে/এআর